এখানে

সেই নাগরিক ধুসর জীবন

পিছন ফেলে

সব থেকে দ্রুত ট্রেনে ক’রে আজ

এখানে আসা।

—আসানসােলে।

 

এখানে আকাশ পাহাড়েব গায়

পড়েছে ভেঙে,

পাহাড়ের গায় সারি সাবি সব

চিমনি চুড়ো।

ধানের জমির পাশাপাশি শুয়ে

দিগ্বিদিক—

খাড়া ক’রে কান কাস্তের শান

শুনছে নাকি

কামারশালে?

 

উর্মিল ভুঁই হাঁটে বনহীন

তেপান্তরে;

সরু সরু ঘাস, শিরে বুঝি তার

শিশির ঝুলে ।

 

দুই দিকে দূর বালুদের দেশ,

মধ্যে নদী 

শ্বাস টেনে টেনে পায়ে পায়ে রাখে

চিকন রেখা।

 

নির্জন মাঠ, হঠাৎ কোথাও তারের বেড়া;

সর্পিল পথে চলে রেলপথ

ধনুক-আঁকা

দেশান্তরে।

 

দিনের পাহারা সন্ধ্যায় সেরে

সূর্য দেখি

অতিকায় তার ডানা মেলে কালো

পাহাড় থেকে

ক্লান্ত চোখে।

 

তাড়িখানা খােলা, রাস্তায় খালি

লােকের মেলা।

স্ত্রী-পুরুষ মেলে মুখোমুখি শুধু

মুখর ভাড়ে।

কারো অসহ্য নেশা কাড়ে শেষ

কপর্দকও।

বহুদিনকার ভুলে-যাওয়া গ্রাম,

পুরানো ভিটে

স্মরণে নামে।

 

দূরে সিসু গাছ, ধানক্ষেত তার 

কিনার ঘেঁষে।

কিছু নয়, তারা তবু কী স্বপ্ন

রচনা করে।

নগরের সেই নীড় ছেড়ে এসে

এখানে ভাবি, সিনেমা ছায়ায় রাজধানীতেই

ছিলাম ভালাে।

 

যাদের রক্তে উড়ছে আকাশে

মিলের ধোঁয়া,

মুষ্টিমেয়ের খেয়ালেই এই

ভরা ভুবনে

তাদের ভােলা।

আরো পড়ুন:  আলাপ

Leave a Comment

error: Content is protected !!