মস্কোয় যা দেখেছি তা দেখার জন্য আমি [পল রবসন, ১] প্রস্তুত ছিলাম না। প্রতিটি মুখেই যেন তৃপ্তি আর আনন্দ। জানতাম এখানে অনাহার নেই। জীবন এখানে মুক্ত, নিরাপত্তায় পূর্ণ, প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর, আর সর্বত্র দেখছি স্বাধীনতার অবাধ প্রকাশ। এ দেখার জন্য আমি তৈরি ছিলাম না। যে মুহূর্তে আমি এদেশে প্রবেশ করেছি তখন থেকেই আমি দেখছি সীমাহীন বন্ধুত্ব। এর জন্যও আমি তৈরি ছিলাম না। আনন্দ, সুখ আর বন্ধুত্ব আমি অনুভব করেছি, ‘জাতি’ প্রশ্নে কোনো অসুবিধার মুখোমুখি আমাকে হতে হয়নি।
এরকম মুক্তসমাজের যারা বিরোধিতা করে তাদের কঠোর হাতে দমন করা দরকার। আমার আশা সোভিয়েত সরকার সেই কাজই করবে। … সোভিয়েত ইউনিয়ন আমার নিজের ঘর। নতুন সমাজ ব্যবস্থায় যে সোভিয়েত জনগণ বাস করছেন তাদের প্রতি আমি আত্মীয়তা অনুভব করছি। এই ধরনের অনুভূতি আমার কোথাও হয়নি। এখানে কোনো আতংক নেই। সমস্ত জাতির জনগণই এখানে সুখী। তারা তাদের সরকারকে সমর্থন করবে।[২]
টিকা:
১. পল রবসন (১৮৯৮ – ১৯৭৬) ছিলেন প্রখ্যাত মার্কিন সংগীত শিল্পী। তিনি সাম্রাজ্যবাদবিরোধি আন্দোলন এবং বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের আন্দোলন করেন।
২. ফার্মের এনিমেল, ইউরোপীয় নির্বোধ জর্জ অরওয়েল একটি আবর্জনা লিখেছিলেন। ইউরোপের গাড়লেরা যারা ‘কর্তৃত্ব সম্পর্কে‘ একজন শ্রমিকের ন্যায় সাধারণ জ্ঞানটুকুও রাখে না, সেসব গাড়লের জন্য পল রবসনের এই সত্য প্রকাশটি একটি চপেটাঘাত। রবসনের এই লেখাটি হাসান তারেক সম্পাদিত দ্যু প্রকাশন, ঢাকা থেকে অক্টোবর ২০১৭ প্রকাশিত “শতবর্ষে রুশ বিপ্লব” গ্রন্থের ১৮২ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত।
পল রবসনকে নিয়ে কমল সরকারের একটি গান গেয়েছিলেন হেমাঙ্গ বিশ্বাস, গানটি ইউটিউবে শুনুন
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।