সম্পাদক সমীপেষু,
মহাশয়, ইতস্তত ভূসম্পত্তি আছে নিম্নস্বাক্ষরকারীর।
এ-দুর্দৈবে জমিদারি রক্ষা দায়। বংশপরম্পরাগত কিংকর্তব্যবিমূঢ় ভুবনে
ঈশ্বর চালান, চলি।
পেয়াদারা বশংবদ: প্রবঞ্চক আদায়ের প্রত্যেক ফিকির
তাদের কণ্ঠস্থ আজো। অথচ বকেয়া খাজনা প্রজারা দেয় নি গত দুই-তিন সনে।
আদালতে ফল অল্প।
যৎসামান্য আয় আজো বন্ধকীতে। ভিক্ষাপাত্র নির্ঘাৎ নতুবা।
বিদ্যার্থী দুলাল শেখে নৈশবিদ্যা কলকাতায়। বোতলে আগ্রহ তার অবশ্য অগ্রিম
—পৈতৃক বলাও চলে।
বিপদ একাকী নয়কো !–সচ্চরিত্র, কিন্তু ক’টি বুদ্ধিহীন যুবা
নিরক্ষর চাষাদের বক্তৃতায় মুগ্ধ করে। দুশ্চিন্তায় আমাদের হাত-পা সব হিম।
(সাম্যবাদী দল এরা?)
এতৎসত্ত্বেও হয়তাে গুরুভাগ্যে ঘুরে যাবে অদৃষ্টের চাকা।
ইংরেজ প্রভুর নেত্রে সর্ষেফুল? আমাদের হাতে আসবে রাজ্যভার? চমৎকার কিবা!
ধনীদের তো পোয়া বারো।
বিশেষত,—ভারতবর্ষে একচেটিয়া নেতা গান্ধী। গৌরীসেনী টাকা
ভবিষ্যৎ ভাবে ধ্রুব। মহাশয়,—জমিদারি যায় যাক। বণিকের মৌলিক প্রতিভা
দেশী শিল্পে মুক্তি পাবে।
এ-বিষয়ে পত্রপাঠ যুক্তি চাই।
ইতি। বঙ্গচন্দ্র পাল। ঢাকা।।
সুভাষ মুখোপাধ্যায় (১২ ফেব্রুয়ারি ১৯১৯ – ৮ জুলাই ২০০৩) ছিলেন বিশ শতকের উল্লেখযোগ্য বাঙালি বামপন্থী কবি ও গদ্যকার। তিনি কবি হিসেবে খ্যাতিমান হলেও ছড়া, প্রতিবেদন, ভ্রমণসাহিত্য, অর্থনীতিমূলক রচনা, অনুবাদ, কবিতা সম্পর্কিত আলোচনা, উপন্যাস, জীবনী, শিশু ও কিশোর সাহিত্য ইত্যাদি রচনাতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। সম্পাদনা করেছেন একাধিক গ্রন্থ এবং বহু দেশি-বিদেশি কবিতা বাংলায় অনুবাদও করেছেন। “প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য় এসে গেছে ধ্বংসের বার্তা” বা “ফুল ফুটুক না ফুটুক/আজ বসন্ত” প্রভৃতি তাঁর অমর পঙক্তি বাংলায় আজ প্রবাদতুল্য।