পুঁজি কাকে বলে?

উৎপাদনের ক্ষেত্রে পুঁজি (ইংরেজি: Capital) হচ্ছে প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহের মধ্যে একটি উপাদান। সম্পদ বৃদ্ধির জন্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে জমি, যন্ত্র, শ্রম এবং পুঁজির এই চারটি উপাদান প্রধান। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ‘পুঁজি’ শব্দ দ্বারা নতুন পণ্য ক্রয়ের আর্থিক সামর্থ্য বুঝায়। এরূপ অর্থ পুঁজি বলতে কেবল টাকা নয়, মালিকের মালিকানাধীন দালানকোঠা, জমি, যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রি বুঝাতে পারে।

‘জাতীয় পুঁজি’ দ্বারা দেশের শিল্পে উৎপাদিত সমগ্র পণ্য এবং অধিকতর পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় মজুর সম্পদকে বুঝায়। মার্কসবাদী অর্থনীতির ব্যাখ্যায় ‘পুঁজির আসল কাজ হলো বাড়তি পণ্য অর্থাৎ বাড়তি মূল্য সৃষ্টি করা এবং এই কাজ দিয়েই তার পরিচয়’। কাজেই ‘যে কোনো উৎপাদন যন্ত্র বা উপায় বাড়তি মূল্য তৈরির কাজে নিয়োজিত হলে তাকে আমরা বলতে পারি পুঁজি।

পুঁজিকে আবার দুরকম ভাগে ভাগ করা যায় –পরিবর্তনশীল ও অপরিবর্তনশীল পুঁজি। কলমালিক তার পুঁজির মধ্যে দিয়ে দুরকম জিনিস কেনে; এক হচ্ছে শ্রমশক্তি, আর এক হচ্ছে সুতো, কাঁচামাল, কলকব্জা ইত্যাদি। সুতো, কাঁচামাল কলকব্জা ইত্যাদির মূল্য যত ছিল ঠিক ততটাই উৎপাদিত পণ্যের ভেতর চলে যায়, এদের মূল্যের কিছু পরিবর্তন হয় না। এই জন্য এদের বলে অপরিবর্তনশীল পুঁজি বা কনসট্যাণ্ট বা ফিক্সড ক্যাপিটাল। পুঁজির অন্যভাগ যা শ্রমশক্তির জন্য খরচ হয় তা কিন্তু পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। এই জন্য একে বলে পরিবর্তনশীল পুঁজি বা ভেরিয়েবল ক্যাপিটাল’।[২]

তথ্যসূত্র:

১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; ৫ম মুদ্রণ জানুয়ারি, ২০১২; পৃষ্ঠা ৯৭-৯৮।

২. নীহাররঞ্জন সরকার; ছোটদের অর্থনীতি

Leave a Comment

error: Content is protected !!