ঐকমত্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিষয়টি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা

ঐকমত্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ (ইংরেজি: Consensus decision-making) বলতে কোনও সংস্থা অথবা ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্তে সকলের মতের মিল বা অভিন্নতাকে বোঝায়। রাষ্ট্রচিন্তায় প্রত্যয়টির প্রবর্তন করেছিলেন রােমান তাত্ত্বিক মার্কুস তুল্লিয়ুস সিসেরো (জানুয়ারি ৩, ১০৬ খ্রিস্টপূর্ব – ডিসেম্বর ৭, ৪৩ খ্রিস্টপূর্ব)। বিচারের রায়প্রদানে একমত হওয়াকে তিনি প্রজাতন্ত্রের অস্তিত্ব ও স্থায়িত্বের পক্ষে বিশেষ প্রয়ােজন বলে মনে করতেন।

ঐকমত্য সিদ্ধান্ত স্বতঃই দেখা দেয় যখন সংশ্লিষ্ট সকলের কোনও বিষয়ে স্বার্থ, চিন্তাভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি, অনুভূতি এবং কর্মপ্রণালীর মধ্যে এক্য ফুটে ওঠে। মতভেদ থাকলেও অনেক সময় পরস্পরবিরােধী স্বার্থ সমন্বিত হয় যখন সকলের হিতার্থে কোনও প্রশ্ন ওঠে, বিশেষ করে যুদ্ধবিগ্রহ দেখা দিলে। এক একটি দেশের ঐতিহ্যের মধ্যেই বিভেদের পরিবর্তে সমন্বয়ের ধারা প্রাধান্য পায়। সেখানে বিভেদের বিরুদ্ধে লােকের ঐকমত্য গড়ে ওঠে। এই ধরনের ঐকমত্যে জনস্বার্থমুখী মনােভাব প্রতিফলিত হয়। যেটাকে মন্টেস্কু প্রজাতন্ত্রের গুণ বলে মনে করতেন।

জনহিতাকাঙ্ক্ষী মনােভাবের কাছেই ঐকমত্যের আবেদন বেশি। এই ধরনের রাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য হলো সবাধিক-সংখ্যক মানুষের সন্তোযবিধান এবং সম্ভাব্য ন্যূনতম-সংখ্যক মানুষের কাছে বিরাগভাজন হওয়া। তাতে এমন এক রাজনৈতিক কর্মধারা অনুসরণ করা হয় যেটা যে কোনও মতাদর্শেই চলুক না কেন সেটা সদাই সুপরীক্ষিত ও সর্বজন অনুমােদিত পথে পারম্পর্য বজায় রেখে অগ্রসর হয়।

তথ্যসূত্র:

১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ৫৮।

Leave a Comment

error: Content is protected !!