উদারনৈতিক গণতন্ত্র হচ্ছে গণতান্ত্রিক শোষণমূলক সমাজ ব্যবস্থারই রূপ বিশেষ

উদারনৈতিক গণতন্ত্র বা উদারবাদী গণতন্ত্র বা পাশ্চাত্য গণতন্ত্র (ইংরেজি: Liberal Democracy) হচ্ছে গণতান্ত্রিক শোষণমূলক সমাজ ব্যবস্থারই একটি রূপ বিশেষ। উদারনৈতিক গণতন্ত্র মার্কসবাদী, লেনিনবাদী, মাওবাদী, সাম্যবাদী, সমাজতন্ত্রী ও নৈরাজ্যবাদীদের যুক্তিতে হচ্ছে বুর্জোয়াশ্রেণির একনায়কত্ব।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্বাধীনতার ঘােষণাপত্রে’ (১৭৭৬) বিবৃত হয়েছিল যে মানুষ স্বাধীনভাবে জন্মায়, সেই স্বাধীনতার ভাবভূমিতে মানুষ সমাজিক, রাষ্ট্রিক ও অর্থনীতিক জীবনের সর্বস্তরে সমতার অধিকারী। জীবনের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সুখের সন্ধানে মানুষ আজন্মকাল নানাবিধ অধিকার ভােগ করে এসেছে। এই ঘােষণাপত্র ছাড়াও ইংল্যান্ডের গৌরবময় বিপ্লব (১৬৮৮) এবং ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯) উদারনৈতিক গণতন্ত্রী ভাবধারার সূচনা করেছিল ।

উদারনৈতিক গণতন্ত্রের অন্তঃসার হলো ব্যক্তিস্বাধীনতা, নানাবিধ অধিকার এবং শাসিতের সম্মতি-সাপেক্ষ বৈধতা-সম্পন্ন সরকার। নাগরিকজীবনের যাবতীয় পৌর ও রাষ্ট্রিক অধিকারের স্বীকৃতি, আইনের শাসন এবং রাষ্ট্রের প্রশাসনের গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার সঙ্গে উদারনীতির সুসংবদ্ধ সম্পর্ক হলো এই প্রত্যয়ের মূলকথা। কালপ্রবাহে গণতন্ত্রেরও বিবর্তন হয়েছে। আর্থনীতিক ক্ষেত্রে মিশ্র অর্থনীতি ও গণতান্ত্রিক পরিকল্পনা অবাধ বাণিজ্যের স্থান অধিকার করেছে। আর্থনীতিক সমতার নীতি প্রাধান্য পাওয়ায় শোষণ লুটপাট ও উপনিবেশে গণহত্যা নির্ভর উদারনৈতিক গণতন্ত্রের অবাধ গতি অনেকাংশে রুদ্ধ হয়েছে।

দ্রষ্টব্য: গণতন্ত্র, প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র।

চিত্রের বিশ্লেষণ: ২০১৬ সালে সারা দুনিয়ার ভোটে নির্বাচিত সরকার দ্বারা চালিত দেশসমূহকে নীল রঙে দেখানো হয়েছে। ২০১৭ সালের চালানো জরিপে প্রাপ্ত ফলাফল।

তথ্যসূত্র:

১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ৫২।

আরো পড়ুন:  গণতন্ত্র সরকারে নাগরিকদের অংশগ্রহণ সমেত রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার রূপ

Leave a Comment

error: Content is protected !!