বস্তুজগতে নিত্যপ্রবাহিত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক হচ্ছে প্রতি-বিশ্লেষণ বা প্রতিশক্তি বা প্রতিনয় বা বিরোধের (ইংরেজি: Anti-thesis) সম্পর্ক। বিরোধ হচ্ছে বস্তজগতের গতির মূল নিয়ামক। বিরোধ বা দ্বন্দ্বের মাধ্যমে বস্তজগতের বিকাশকে সাধারণত ইংরেজিতে থিসিস (ইংরেজি: Thesis), এ্যাণ্টিথিসিস এবং সিনথেসিস (ইংরেজি: Synthesis)-রূপে প্রকাশ করা হয়।
দ্বন্দ্বমান দুটি বস্তু বা অবস্থার একটিকে থিসিস বা বাংলায় বিশ্লেষণ এবং অপরটি এ্যাণ্টিথিসিস বা বাংলায় প্রতি-বিশ্লেষণ বা প্রতিশক্তি বলা হয়। বিশ্লেষণ এবং প্রতিবিশ্লেষণের দ্বন্দ্ব নিষ্ফলভাবে কার্যরত থাকে না। এই দ্বন্দ্ব কালক্রমে বস্তুর মধ্যে নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়। এই নতুন অবস্থাকে সিনথেসিস বা সংশ্লেষণ বলা হয়।
সংশ্লেষণও আবার স্থায়ীভাবে সংশ্লেষণ থাকে না। সংশ্লেষণই কালক্রমে আবার বিশ্লেষণ এবং প্রতিবিশ্লেষণের উদ্ভব ঘটায়। সূত্রটি আমরা বিশ্লেষণ-প্রতিবিশ্লেষণ-সংশ্লেষণ, অথবা অস্তি-নাস্তি-সমন্বস্তি বা নয়-প্রতিনয়-সমন্বয় বলেও প্রকাশ করতে পারি। মানব সমাজের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিকাশের পর্যায়ক্রমিক ধারাকে মাকর্সবাদীগণ দ্বন্দ্বের এই সূত্র দ্বারা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন।
তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; ৫ম মুদ্রণ জানুয়ারি, ২০১২; পৃষ্ঠা ৬১।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।