অভিজাততন্ত্র (ইংরেজি: Aristocracy) হচ্ছে গ্রিক আরিস্তোক্রাতিয়ার বাংলা প্রতিশব্দ। অভিজাততন্ত্রের অর্থ হলো সর্বোত্তমের দ্বারা শাসন। আরিস্তোতলের দৃষ্টিতে পুণ্যবানদের নিয়ে অভিজাততন্ত্র রচিত হয় এবং গােষ্ঠীতন্ত্রের (ইংরেজি: oligarchy) মূলাধারা হলো বিত্ত। দুটি শাসনতন্ত্রই কায়েমি মুষ্টিমেয় সংখ্যক ব্যক্তিদের দ্বারা চালিত হয়। তবে অভিজাততন্ত্রের অভীষ্ট হলো সকলের স্বার্থ সংরক্ষণ, অভিজাততন্ত্র উত্তরাধিকারসূত্রে একটি সংখ্যালঘু শ্রেণী কর্তৃক চালিত হয়।
অভিজাততন্ত্রের দুটি ধারা দেখা যেত, একটি নগর রাষ্ট্রের শাসন যেখানে রাজার পরিবর্তে একটি শাসকশ্রেণী ক্ষমতাসীন থাকত। দ্বিতীয় ধারার অন্তর্গত তিনটি উপধারাই বেশি পরিচিত : ১. আইনানুগ রাজনৈতিক ধারা, যাতে উত্তরাধিকারের স্বত্বাধীনে ভূস্বামীদের আধিপত্য, রাজার কাছ থেকে প্রাপ্ত সম্মান ও শক্তির নিদর্শন হিসেবে খেতাব ধারণ, রাজসভায় স্থায়ী আসনের মর্যাদা অর্জন। ২. আর্থনীতিক ধারা, আইন ও রাজনীতির পূর্বোক্ত ধারার অন্তরালে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও ক্ষমতা কাজ করে, যেটি মার্কসীয় দৃষ্টিতে ভিত্তি ও উপরিকাঠামােয় বিভক্ত। ভূস্বামী জমির স্বত্বাধিকারী, তাতে ক্ষেতমজুরকে দিয়ে কাজ করানাে হয়। অভিজাততন্ত্র প্রকারান্তরে সামন্ততন্ত্রেরই অবশিষ্ট একটি অঙ্গ। ৩. সামাজিক ধারা, যেটি জনমানসে বেশি স্পষ্ট হয়ে দেখা দেয়। সাধারণ লােকে উত্তরাধিকার সূত্রে অভিজাতদের মধ্যে সুযােগ-সুবিধা, অবসর বিনােদন, বিলাসিতা, ধনাঢ্যের হাবভাব প্রত্যক্ষ করে। লােকচক্ষে অভিজাতদের বংশমর্যাদা উত্তরাধিকারের সঙ্গে মিশ্রিত হয়।
দ্রষ্টব্য: গুণতন্ত্র
চিত্রের ইতিহাস: তিনটি প্যানেল কার্টুনে ফরাসি কৃষকদের অবস্থা তুলে ধরছে, তিনটি আদেশের সমন্বয় (পাদরি, অভিজাত, এবং জনগণ), এবং কৃষকদের দুঃখজনক দুর্যোগের অবস্থার প্রতিনিধিত্ব করছে।
তথ্যসূত্র:
১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ২০।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।