কল্যাণ রাষ্ট্র কাকে বলে

যে রাষ্ট্র আইন ও প্রশাসনের মাধ্যমে অভাবগ্রস্ত অর্থাৎ রুগ্ন, দরিদ্র, বার্ধক্য পীড়িত, পঙ্গু, দুস্থ প্রভৃতি ধরনের নাগরিকদের জীবনে প্রয়ােজনীয় নানাবিধ সুখস্বাচ্ছন্দ্যের বিধিব্যবস্থা করে তাকে কল্যাণ রাষ্ট্র বলা হয়। প্রত্যয়টির উৎপত্তি ও সময় সম্পর্কে মতদ্বৈধ থাকলেও ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনের শ্রমমন্ত্রী লর্ড উইলিয়াম হেনরি বিভারিজের সামাজিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য পরিষেবা সংক্রান্ত এক রিপাের্টে কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রসঙ্গ প্রথম দেখা যায়। জার্মানিতে উনিশ শতকের আশির দশকে বিসমার্ক কিছু সমাজকল্যাণমূলক আইন প্রবর্তন করেন; সেই নিদর্শনে ইউরােপে উনিশ শতকে আরও কয়েকটি দেশে পুয়াের ল ইত্যাদি আইন প্রচলন লাভ করে।

দ্বিতীয় বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী মহাযুদ্ধের পর ইউরােপে পুঁজিবাদী ও সমাজতন্ত্রী উভয় প্রকার রাষ্ট্রেই জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, বেকারভাতা ও পেনসন বাবদ সরকারের অর্থ বরাদ্দ হতে শুরু করে। ওইসব বিধিব্যবস্থার বিরােধীদের বক্তব্য ছিল যে সরকারের সে সব ব্যয় নির্বাহ অবৈধ এবং তার জন্য অবৈধভাবে কর আরােপ করা হয় তাতে লােকের আত্মনির্ভরতার অভাব ও দারিদ্র্য বেড়েই চলে। সমাজকল্যাণে ব্যয় নির্বাহের বিকল্প হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বেসরকারি বিমা ব্যবস্থারও সমালােচনা করা হয়। পক্ষান্তরে সমাজকল্যাণ ব্যবস্থার সমর্থকেরা মনে করেন যে ওই খাতে সরকারি অর্থ বরাদ্দ সামাজিক সুবিচার হিসেবে সরকারের একটি কর্তব্য।

তথ্যসূত্র:

১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ৭৮।

Leave a Comment

error: Content is protected !!