কমিউন কাকে বলে

কমিউন হচ্ছে (ইংরেজি: Commune) এক ধরনের সমিতি যেখানে সদস্যদের শ্রমের মাধ্যমে লব্ধ উৎপন্ন সামগ্রী এবং অন্যান্য সম্পদের মালিকানা সাধারণভাবে সকল সদস্যের সমান। প্রাচীন কাল থেকেই এই ধরনের সমিতি আদর্শ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। হাল আমলে ব্রিটেনে রবার্ট ওয়েন এবং ফ্রান্সে ফ্রাঁসােয়া ফুরিয়ে সমিতির প্রত্যয়টিকে নতুনভাবে রূপায়িত করেন।

১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসের কমিউনার্ডৱা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অবরুদ্ধ প্যারিস নগরীতে স্বাধীন এক সরকার হিসেবে স্বল্পকালীন পারি কমিউন গঠন করেছিলেন। তাঁরা ঘােষণা করেছিলেন যে শহরের অধিবাসীরা সেখানকার সর্ববিষয়ের সাধারণভাবে সমান মালিকানার অধিকারী, কারও কোনও অংশে মালিকানা কম কিংবা বেশি নয়।

কমিউনের সম্পর্কে কার্ল মার্কসেরও ছিল অনুরূপ ধারণা। রুশ বিপ্লবের পর সেখানে কয়েকটি কমিউন পরীক্ষামূলকভাবে গঠিত হয়েছিল। পরে সেগুলি যৌথ খামারে পরিণত হয়। বিপ্লবের পর চীনেও যোথ কৃষি ব্যবস্থায় বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত কমিউন গঠিত হয়েছিল, যেগুলির অধিকাংশই পরে বিলুপ্ত হয়। তবে কমিউনের আদর্শে ইজরাইলে শরণার্থীদের নিয়ে কিবুজ নামে এক ধরনের সমিতি গঠিত হয়েছে। ব্যক্তিগত মালিকানাভিত্তিক সমাজে নানারকম জটিলতা, মানসিক রোগ ও প্রতিবন্ধকতাকে পরিহার করে সাধারণভাবে সব কিছুর সমান অধিকারের কমিউন ব্যবস্থায় জীবনের সারল্য ও সুখ দেখা দেয়।

তথ্যসূত্র:

১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ৬৭।

Leave a Comment

error: Content is protected !!