এরিস্টটলীয় যুক্তিবিদ্যায়, বিধেয়ক (ইংরেজি: Predicable) হচ্ছে এমন একটি শব্দ যেখানে বিধেয়কটি উদ্দেশ্যর সাথে সম্ভাব্য সম্পর্কের শ্রেণিকরণে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অবস্থান নিতে পারে। এরিস্টটলের দশটি শ্রেণিকরণের জন্য স্কলাস্টিক ‘প্রেডিকামেন্টা’ (praedicamenta) শব্দটির সাথে এক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হওয়ার দরকার নেই।
এ্যরিস্টটল তাঁর যুক্তিশাস্ত্রে একটি যৌক্তিক বাক্যে উদ্দেশ্যপদের সঙ্গে বিধেয় পদের সম্পর্কের শ্রেণী নিরূপণের চেষ্টা করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত এবং প্রচলিত যুক্তিশাস্ত্রে একটি বিধেয় উদ্দেশ্যের সঙ্গে চার রকম সম্পর্কে সম্পর্কিত হতে পারে। বিধেয়র এই সম্ভাব্য সম্পর্ককে এ্যরিস্টটল প্রেডিকেবল বা বিধেয়ক বলেছেন। চার রকম বিধেয়কের নাম হচ্ছে জিনাস বা জাতি, স্পেসিস বা উপজাতি, ডিফারেনশিয়া বা লক্ষণ এবং প্রপ্রিয়াম বা উপলক্ষণ। ‘মানুষ হচ্ছে জীব’ এরূপ বাক্য বললে বিধেয়পদ ‘জীব’, উদ্দেশ্যপদ ‘মানুষ’ এর জাতি বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ ‘জীব’ জাতির অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে মানুষ। ‘মানুষ যুক্তিবাদী জীব’ বাক্যটিতে ‘যুক্তিবাদী জীব’ বিধেয় পদটি মানুষকে অপরাপর জীব থেকে পৃথকভাবে সূচিত করছে। এ কারণে ‘যুক্তিবাদী জীব’ উদ্দেশ্যপদের ডিফারেনশিয়া বা লক্ষণ।
তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬; পৃষ্ঠা ৩১৯।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।