আমলাতন্ত্র কাকে বলে

আমলাতন্ত্র (ইংরেজি: Bureaucracy) হচ্ছে প্রশাসনিক দপ্তরের কর্তৃত্ব। আমলাতন্ত্র-এর আইনের দৃষ্টিতে রাজা ও প্রজা তথা সর্বোচ্চ সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ যথা রাজা, প্রেসিডেন্ট, আইনসভা ইত্যাদি এবং জনসাধারণের মধ্যবর্তী স্থানের কর্মসম্পাদনকারী ও আধিকারিকদের হাতে শাসনক্ষমতা ন্যস্ত থাকে। সচরাচর সিভিল সারভ্যান্ট অর্থাৎ জনপালন নির্বাহি সরকারি কর্মচারী ও সামরিক বাহিনীর পদস্থ ব্যক্তিরা কি উচ্চ কর্তৃপক্ষ, কি সাধারণ লােকের কাজ আপন মর্জিমাফিক ত্বরান্বিত তথবা বিলম্বিত করতে পারেন, যাতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কাজে তাঁরাই যে প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী সে কথা প্রতিপন্ন হয়।

প্রশাসকেরা তাঁদের কাজকর্মে ক্রমে বিপুল অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করেন। তারা সরকারি কাজে দীর্ঘকাল বহাল থাকে, ক্ষমতা ভােগ করেন, যে-সুযােগ অধিকাংশ রাজনীতিক ও মন্ত্রীরা পান না। প্রশাসকদের কাজকর্মের মধা দিয়ে একের পর এক সরকারের মধ্যে একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়; যুক্তরাজ্যের মতাে দেশে যেখানে লিখিত সংবিধান নেই, সেখানে তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের হাতে উপদেষ্টা ও আধিকারিক নিয়ােগের ক্ষমতা থাকায় প্রশাসনিক অমলাতন্ত্রের তাগ্রাধিকার ভাঙা যায়।

সাম্যবাদ অভিমুখী দেশে সরকার ও প্রশাসন অভিন্ন; শাসক দলের অনুসৃত রীতি অনুসারে পার্টি ও প্রশাসনে আধিকারিক নির্বাচিত করা হয়। এই অর্থে সাম্যবাদ অভিমুখী দেশসমূহ হচ্ছে আমলাতন্ত্রবিরোধী। এতে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতা ও রাজনৈতিক মতিগতি প্রাধান্য পায়। পার্টির সিদ্ধান্ত পলিটবুরো থেকে কলকারখানার স্তর অবধি প্রতিফলিত হয়।

আরো দেখুন: দলীয় কর্মীবর্গ

তথ্যসূত্র:

১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ৩৭।

Leave a Comment

error: Content is protected !!