অস্ট্রিয়া উন্নত শিল্পসমৃদ্ধ ইউরোপের ক্ষুদ্র পার্বত্য দেশ

অস্ট্রিয়া প্রতিবেশী সুইজারল্যান্ডের মতোই একটি ক্ষুদ্র পার্বত্য দেশ। এটি পুর্ব আলপসের অন্তর্গত এবং ডানিয়ুব নদীর উচ্চ অববাহিকায় অবস্থিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির পতনের ফলে জার্মানির অঙ্গ-রাজ্য থেকে অস্ট্রিয়া মুক্তিলাভ করে এবং তার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটে। ১৯৫৫ সাল থেকেই অস্ট্রিয়া স্থায়ী নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করছে এবং এটি তার জাতীয় অর্থনীতি ও সংস্কৃতির বিকাশ নিশ্চিত করেছে।

অস্ট্রিয়ার উন্নত শিল্প থেকেই জাতীয় আয়ের অর্ধেক অর্জিত হয়। তার শিল্পোৎপাদের মোট পরিমাণ বেলজিয়ম, নেদারল্যাণ্ডস বা সুইডেনের সমান। দেশের শিল্পোৎপাদনের প্রধান শাখা ইঞ্জিনিয়রিং শিল্প বৈদ্যুতিক সামগ্রী, মোটরগাড়ি ও ট্রাক্টর এবং বিদ্যুৎ-ইঞ্জিনিয়রিং, খনিশিল্প ও ধাতুশিল্পের সাজসরঞ্জাম তৈরিতে বিশেষীকৃত।

অস্ট্রিয়ার লৌহ ও ইস্পাত শিল্প এবং লৌহেতর ধাতুশিল্প খুবই উন্নত। প্রধানত স্থানীয় কাঁচামাল থেকেই সে বার্ষিক ৩০ লক্ষাধিক টন লৌহপিণ্ড ও প্রায় ৫০ লক্ষ টন ইস্পাত উৎপাদন করে। অস্ট্রিয়া দেশটি বছরে প্রায় লক্ষাধিক টন আলুমিনিয়াম উৎপন্ন হয়। অন্যান্য উৎপাদনী শাখাগুলির মধ্যে রাসায়নিক শিল্প এবং কাঠ, মণ্ড ও কাগজ শিল্প বিশেষ উল্লেখ্য।

অস্ট্রিয়া ৩০ লক্ষ টন পর্যন্ত তৈল-উৎপাদনক্ষম অস্ট্রিয়ার তৈলশিল্প দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে পারে। দেশে প্রতি বছর উৎপন্ন প্রায় ৪০০০ কোটি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুতের প্রধান অংশটি জলবিদ্যুৎ স্টেশন-জাত।

রাজধানী ভিয়েনা-র (জনসংখ্যা প্রায় ১৬ লক্ষ) শিল্পগুলিই দেশের শিল্পপণ্যের ৪০ শতাংশের বেশি উৎপাদন করে।

গোমাংস উৎপাদন এবং দুগ্ধশিল্পই কৃষির প্রধান শাখা। কৃষি দেশকে খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। ফল, আঙুর এবং সবজি চাষও সেখানে ব্যাপকভাবে প্রচলিত।

তথ্যসূত্রঃ

১. কনস্তানতিন স্পিদচেঙ্কো, অনুবাদ: দ্বিজেন শর্মা: বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভূগোল, প্রগতি প্রকাশন, মস্কো, বাংলা অনুবাদ ১৯৮২, পৃ: ২০২-২০৩।

Leave a Comment

error: Content is protected !!