ইসরায়েল বা ইজরায়েল বা ইজরাইল (ইংরেজি: Israel) মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত একটি শিল্প-কৃষিসমৃদ্ধ সাম্রাজ্যবাদী সন্ত্রাসবাদী পুঁজিবাদী দেশ। এর মোট ৪০ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৫ লক্ষ আরব। তেল আবিব দেশের প্রধান অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। জেরুসালেমকে সে বেআইনীভাবে তার রাজধানী ঘোষণা করেছে।
১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের প্রস্তাব মোতাবেক গঠিত এই ইহুদী রাষ্ট্রের নির্ধারিত আয়তন ১৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। ইউফ্রেতিস থেকে নীল নদী পর্যন্ত রাষ্ট্রসীমা প্রসারের চেষ্টায় ইসরায়েলের শাসকচক্র আক্রমণাত্মক যুদ্ধের মাধ্যমে প্রথমে আরব প্যালেস্টাইনদের ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার ভূমি দখল করে এবং শেষে মিশর, সিরিয়া ও জর্ডানের ৬০ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি জায়গা কুক্ষিগত করেছে।
সাম্রাজ্যবাদী চক্রের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীল ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের ২২ নভেম্বর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত দখলকৃত আরবভূমি থেকে সকল ইসরায়েলী সৈন্য প্রত্যাহারের প্রস্তাবটি অগ্রাহ্য করছে! আগ্রাসন নীতি অনুসরণক্রমে ইসরায়েলের শাসকচক্র আরবদের জমিগুলি উন্নয়নে সচেষ্ট রয়েছে এবং আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টায় অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছে।
১৯৭৯ সালে ইসরায়েল আরবজাতির স্বার্থের বিশ্বাসঘাতক মিশরের নেতাদের সঙ্গে সম্পাদিত এক চুক্তির মাধ্যমে আরবভূমির দখল ‘আইনগত করে নিয়েছে।
আরবভূমি দখলের আক্রমণাত্মক লক্ষ্যমখেই ইসরায়েলের অর্থনীতি চালিত। মানুফ্যাকচারিং তার প্রধান শিল্পশাখা এবং এতে হালকা ও খাদ্য শিল্প এবং হীরা-কাটা অগ্রগণ্য। যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণের ঘনিষ্ঠ অনুষঙ্গ হিসাবে তার রাসায়নিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, মোটরগাড়ি, ইলেকট্রো-টেকনিকাল ও রেডিওইলেকট্রনিক শিল্পগুলি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে।
তেল আবিব (জনসংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ), হাইফা বন্দর (জনসংখ্যা ২ লক্ষাধিক) এবং অন্যান্য কয়েকটি শহরেই তার অধিকাংশ শিল্প কেন্দ্রিত।
কাঁচামাল এবং জ্বালানির অভাব তার অর্থনীতির দুর্বল গ্রন্থি। এগুলির বিপলে আমদানির উপর সে নির্ভরশীল।
ইসরায়েলের কৃষি লেবুজাতীয় ফলচাষে বিশেষীকৃত। দেশে গম, ধান এবং ভুট্টাও চাষ করা হয়। সেখানে গর, মেষ এবং মুরগি খামার আছে। তাসত্ত্বেও সে প্রয়োজনীয় খাদ্যের অর্ধেকেরও কম উৎপাদন করতে পারে।
দেশের অব্যাহত সামরিকীকরণের ফলে তার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এবং জনগণের বৈষয়িক উন্নতিতেও মন্দা দেখা দিয়েছে। যুদ্ধাস্ত্র ক্রয়ে বিপুল ব্যয় এবং সৈন্যবাহিনী রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বৈদেশিক বাণিজ্যের অব্যাহত ঘাটতি বৃদ্ধিতে বিদেশী পজির উপর দেশের নির্ভরতা বাড়ছে।
সাম্রাজ্যবাদী এবং এদের সঙ্গী ইহুদীবাদী চক্র ইসরায়েলকে সাহায্য দিয়ে এটিকে প্রগতিশীল আরব ও আফ্রিকার দেশগুলির বিরুদ্ধে সংগ্রামে ব্যবহারের প্রয়াস পাচ্ছে। সারা দুনিয়ার প্রগতিশীল মানুষ ইসরায়েলী হামলার এবং আরব জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারের দাবি জানাচ্ছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশ ইসরায়েলী আক্রমণের বিরুদ্ধে আরব জাতিগুলির ন্যায্য সংগ্রামকে সর্বদাই সমর্থন দিয়ে আসছে।
তথ্যসূত্রঃ
১. কনস্তানতিন স্পিদচেঙ্কো, অনুবাদ: দ্বিজেন শর্মা: বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভূগোল, প্রগতি প্রকাশন, মস্কো, বাংলা অনুবাদ ১৯৮২, পৃ: ২১৮-২১৯।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।