সে ছিল আমার সন্ধ্যাচারিনী

গাঢ় সন্ধ্যার পূর্বে তুমি পরিব্যাপ্ত দাবানলের মতো

মোহনীয় সামগ্রিক রূপ ছড়িয়ে

বৈকালিক ভ্রমণে বের হও;

তোমার ওই মৃদু স্রোতের

বুকে ভেসে যাওয়া শান্ত ধীর গতি আমি খুব চিনি;

তুমি পার্শ্ববর্তি কোনো কিশোরের সাথে

পাখির গান আর পাহাড়ি ঝরণার

কলধ্বনির মতো উচ্ছ্বসিত হাসিতে কুটিকুটি হও,

আর সঙ্গী সহচরিটির খুব কাছে বকুলের গন্ধে ভরা যে যাদুবাক্স আছে,  

আমি তাই খুঁজি কাঙালের মতো,

হয়ত দেখার অদম্য ইচ্ছায়,

বিকেলে করি ঘুমের অভিনয়

কিংবা বালিশে হেলান দিয়ে

নিরুদ্বেগ পা ছড়িয়ে বসে কবিতার ছবি আঁকি!

 

মনে মনে ভাবি যদি বা হতাম এই সন্ধ্যার আঁধার,

গাঢ় হতে গাঢ়তর হতাম তোমার দশদিকে;

আলতো স্পর্শে ভুলে যেতাম আমার অস্তিত্ব সংকট;

তুমি প্রতিক্ষণে সকলের কেন্দ্র হতে পরিধিতে

সব কালে ঘোরাফেরা করো;

আমার মতো আরো

কত কেউ তোমার চারধারের গন্ধে বারবার ফিরে আসে;_

তাই কী অমন প্রস্তরমূর্তির মতো হাসিটুকু

বিলিয়ে দাও ঘন সাদা আলোর সাথে

নতুন মসৃণ মেহগনি পাতার উপর

নতুন চাদরের মতো ঝিলমিল চঞ্চলতায়।

তুমি যখন ছুটে যাও পাশের কোনো পাড়ায়

তখন নৃত্যের তালে তালে তোমার ওড়না ওড়ে,

চঞ্চল সাদা জুতোতেও ধরা পড়ে নাচের কোমল ছন্দ।

আমি দিবাস্বপ্নে দেখতে পাই বাসন্তি রঙ শাড়ি,

মেহেদি রাঙানো হাত, গ্রীষ্মের প্রথম বৃষ্টি,

সোঁদা গন্ধের শেষে নতুন পাতা গজানো ঘাস,

বৈশাখের উত্তাল ঝড়, শীতের আঁধার রাত,

বাৎসরিক রুটিনের ছুটি আর কিছু

অকষ্টকল্পিত ভাবনার চিত্রকল্প;-

শুধু তুমি থাকবে কিনা কেউ জানে না।

 

তবু বুকের মধ্যে যে ভালোলাগাটুকু আছে

তারই সযত্ন সংরক্ষণ আজকের কবিতার কাছে।

 

চিত্রের ইতিহাস: কবিতায় ব্যবহৃত অংকিত চিত্রটি আর জে কুকের আঁকা চিত্র ‘দম্পতি(Couple)। শিল্পী চিত্রটি আঁকেন ২০০৭ সালে। এখানে চিত্রটিকে নিচে ও উপরে কিছুটা ছেঁটে ব্যবহার করা হয়েছে। চিত্রের উৎস উইকিমিডিয়া কমন্স, CC-BY-SA-4.0.

আরো পড়ুন:  জমানো বৃষ্টি

Leave a Comment

error: Content is protected !!