বিলুপ্তপ্রায় হিমের মতো দূরের জাদু বাস্তবতা
থেকে তুমি আসো,
হে চপলা, গতিময়তার কন্ঠে সোনালি শাড়ির
সুর মিশিয়ে,
জানু পেতে বসো আবাসস্থলের চারধারে
কেন্দ্রিভূত ধূমায়িত স্বার্থপরতায়।
উষ্ণতার পিঠে প্রাত্যহিক মাতালের তত্ত্ব তথ্যজালিকার
মতো ছড়িয়ে পড়েছে
পাহাড়ের দূর উপত্যকায় যেখানে সিংহীনির মুখ
ছায়া ফেলে
শিহরিত শীতের বালিশে। আর বাইনোকুলারের লেন্সে
গোলাপি সুতোর
মতো বৃষ্টি এঁকে দেয় জল ও বনানীর মাঝখানে
ফুটে থাকা
ইন্দ্রজালিক চিত্রকল্প। গ্যাসচেম্বারে ঢুকে ভাবনার কোলাহল
দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের মতো
প্রদক্ষিণ করতে থাকে কোনো নতুন তারায় তারায়
আগুনজ্বলা রাতে।
জনমানবহীন আকাশের বুকে সব ভালোবাসা গন্ধ বর্ণহীন
শিলা হয়ে উড়ে যায়
পাখিদের মতো। চিমনির ধোঁয়া খেয়ে কালো হবে
কালো কালো সহকর্মিগণ।
পোকা মাকড়ের কংকালের রসকষহীন নগরে নামে
অগ্নিবারুদের মতো
উদ্দাম নাচুনে রাত। কাঁধ ঝাঁকি দিয়ে চলে যায়
আফিমের ঘ্রাণ।
ঘরের মেঝেতে আবার খোঁড়া হয় প্রেমের পুরোনো কবর।
চিত্রের ইতিহাস: কবিতায় ব্যবহৃত অংকিত চিত্রটি পল গঁগাঁর (১৮৪৮-১৯০৩) আঁকা চিত্র ‘মার্তিনিকের সমুদ্রতীরে’ (By the Seashore, Martinique)। শিল্পী চিত্রটি আঁকেন ১৮৮৭ সালে। এখানে চিত্রটিকে উপরে ও নিচে কিছুটা ছেঁটে ব্যবহার করা হয়েছে।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।