দুঠোঁটে ক্লান্তির বিষন্ন কাজলরেখা

উচুঁ উচুঁ গোল দালানের মতো ভুঁড়ি 

ফেটে বেরিয়ে আসছে বিংশ শতাব্দির

কিছু ক্ষমতাবান কেন না কিছুদিন আগে থেকেই 

ক্রমাগত খাচ্ছে তারা তেলাপেকার ডিম 

এবং তৈরি করছে কারাগার, ফিরিয়ে আনছে 

তন্ত্রমন্ত্র ঝাঁড়ফুক, গাঁটছাড়া বাঁধছে দাদার 

আমলের সর্ষের ভুতের সাথে; 

প্রতিযোগিতা চালাচ্ছে বিদেশি ঠাকুরকে খুশি করবার, 

ভাঙা সুটকেস হাতে ও ছেঁড়া গেঞ্জি গায়ে দুটি সহোদর 

এতিম ও নিঃস্ব ভাই ভিক্ষা করতে করতে 

হাজারখানা বাড়ি বানালো স্বর্গের উপর।

 

তের কোটি জরাজীর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে জল নেই,

সমুদ্রেও হাওয়া নেই, আছে শুধু প্রতিবেশির ঘাড় মটকে খাওয়া; 

কান ধরে ওঠ বস ও নাকে খত দিয়ে নিজ ভাইকে 

সীমান্তের ওপারে পার করে দেওয়া; 

নির্বাচিত কাব্যপ্রেমি অগণতান্ত্রিক কিছু শিম্পাঞ্জি ও বানরের বংশধরেরা 

এখন প্রাচীন নিয়মে বাঁচার জন্য পুরোনো পুস্তকনির্ভর আধখানা বই লেখে; 

আর একপাতি ভাঁড় তেড়ে এসে থিয়েটারে

বান্দরের সাথে শুরু করে অভিনয়; 

কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে তোলে অথৈ শ্লোগান, 

মানি না মানবো না 

অন্ধকারে কেউ কাউকে দেখবো না।

তার বিমূর্ত চেঁচামেচিতে কেঁপে ওঠে স্বৈরভবন এবং 

মৃগিরোগি দাঁড়িয়ে পেচ্ছাব করে জাতিসংঘের ফুলদানিতে।

ভেসে যায় পৃথিবী, থেমে যায় আগুন; 

একটি গানের  দৃশ্যে নাচে এক বেয়াড়া ছোকরা। 

রাইফেল ও টুপি হয়ে যায় অনরঙ্গ বন্ধু;

সুন্দরিশ্রেষ্ঠা ক্রীতদাসি হওয়ার বিজ্ঞাপন আঁকে নিজের শরীরে। 

বিভ্রান্ত আকাশে তখনো সতর্ক তারারা উঁকি মেরে দেখে 

ভুল শয্যায় দুটি নদীকে কামড়ের নিচে রাখতে লালায়িত

একটি বৃজ ভুঙভাঙ তত্ত্ব আওড়ায়:

সুন্দর মনে থাকে কিছুক্ষণ কিন্তু শরীরে অমর।   

পাথুরে সাগর পাড়ি দেয় বেকুব বোঝাই কিছু ঝকমকে নৌকা,

তাদের চারদিকে কিলবিল করে পঁচাকৃমি জোঁক; 

উভয় তীরে ঝলমল তরুণ তরুণীরা চকচক করলেও আলো দেয় না,

রাজপথ দিয়ে হেঁটে যায় অবোধ জিউস;

তার নাভির  নিচে বজ্রদন্ড, মাথায় সর্বগ্রাসি ক্ষুধা, 

আঙুলে টিপছে বোতাম, জ্বলছে ইতিহাসের খাতা; 

আর তোমার দুঠোঁটের দশদিকে ক্লান্তির আলো দেয় বিষন্ন কাজলরেখা।

 

আলোকচিত্রের ইতিহাস: কবিতায় ব্যবহৃত আলোকচিত্রটি ফিলিপাইনের একটি শপিং মল এসএম সিটি বালিওয়াগে ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতার অংশ। ছবিটি তুলেছেন Ramon Velasquez.

Leave a Comment

error: Content is protected !!