আমি সময়কে গড়াতে গড়াতে নিয়ে চলি
তেলের গোলাকার খালি ড্রামের মতো,
সকালের অভুক্ত পথে ভবিষ্যত খুঁজতে গিয়ে
টের পাই সনদপত্র আছে বেশকটি তিক্ত অভিজ্ঞতার,
স্নাতকোত্তর শেষ হয়েছে বছর খানেক আগে;
তোমার সাথে দেখা হয় মাঝে মধ্যে
হল গেটে, ক্যাম্পাসে, টিউশনি ফিরতি পথে_
প্রথম আলাপের দিন
স্মৃতিপাথরে
খোদাইকরে
রেখেছি অমলিন,
মনে আছে তোমার চোখের পাতায় ছিলো অবিরাম উচ্ছলতার ঢেউ,
আর আজ মুখখানা হয়ে গেছে যেন বাঙলার পাঁচ।
হবে না বা কেন?
প্রতিদনই যারা ঘুরতো দুজন একসাথে
নবজাতকের আগমনে তারা হয়ে যায় তিনজন;
আমার নেই কোনো বৈষয়িক সুপরিবর্তন;
তোমার নাগরিক বান্ধবিরা
মফস্বলি ভুতদের একদম পছন্দ করে না,
আড়ালে আবডালে আমাকে তারা ডাকে ‘মভু’ বলে;
আমি জানি আমি শালা ভুতের অধিক ভুত
আধখানা নির্ভেজাল গেঁয়ো ফকির
আধখানা বাস্তুহীন শিকড়হীন
গোত্র জন্মহীন পথের পাশে পড়ে থাকা ছেঁড়া স্যান্ডেল,
মানিব্যাগে আজীবন বহন করেছি ছারপোকা,
গোপনে বলে রাখি
যদিও হৃদয়ে ছিলো একরাশ গোলপাতার কল্পস্বর্ণঘর-
সে ঘরে না এসেই
তোমার তর্জনি শুধু দেখিয়েছে প্রতিদিন
বেঁচে থাকতে বড়সড় কত কী প্রয়োজন!
চিত্রের ইতিহাস: কবিতায় ব্যবহৃত অংকিত চিত্রটি শিল্পী ফেদেরিকো এন্দ্রেওত্তি (১৮৪৭-১৯৩০) অংকিত। চিত্রটির নাম পার্কে প্রেমালাপ (Ein verliebtes Gespräch im Park.) এবং চিত্রটি ১৯৩০ সালে আঁকা। এখানে চিত্রটিকে নিচের ও উপরের দিকে সামান্য ছেঁটে ব্যবহার করা হয়েছে।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।