তবু এগিয়ে চলা

তোমাকে দেখতাম প্রতি ভোরে দোতলার বারান্দায়
এক চিলতে হাসি নিয়ে দাঁড়িয়েছ ক্যাকটাসের পাশে,
আর আমার ব্যস্ত শহরে জীবনের খোঁজে প্রতিদিন আসা যাওয়া।

গায়ে লেপটে থাকা পুরনো কাঁথাটির মতো তোমার
পরশ আমাকে ভাবায়, মনে করিয়ে দেয় ব্যস্ত ঘাটের
উচ্ছল ঢেউ হয়ে লেগে থাকা তোমার ঠোঁটের হাসি;
তোমার মুখে এখন বাস করে যুগের ক্ষয়ে যাওয়া চিন্তা
ক্যকটাসের পাশে দাড়িঁয়ে নির্ঘুম চোখে যা ভাবতে
আর আকাশ দেখতে,
জানে কী তা নীলাভ আকাশ!
আমি নিজেই ভেবে নিয়েছিলাম তোমার অব্যক্ত মনকে,
হয়তো ভাবতে গ্রীষ্মের কাক ডাকা কোনো এক অলস দুপুরে—
আমরা হাঁটছি কবিতা-রাজ্যের পথ দিয়ে,
আর দু’পাশে স্বাধীনভাবে ঝরে পড়ছে এলোমেলো অসংখ্য সুর
এবং আমাদের প্রেম দিয়ে সৃষ্টি করছি নতুন কবিতা,
সজীব সুন্দর আর এলোমেলো নতুন কবিতা
যাতে আনাগোনা করবে নানা রঙের কুঁড়ি,
যা হিংসা, যুদ্ধ,অস্ত্র আর রক্তকে পরাজিত করে
ফোটাবে নতুন দিনের ফুল।

তবে অমন কোমলতা আমার ভাবনায় নেই,
আজকের এই নিষ্ঠুরতাকে শুধু কবিতার স্নিগ্ধতা দিয়ে
বদলানো যাবে না,মুছে ফেলা যাবে না রক্তকে;
তাই আমার চেতনায় জেগে উঠছে অনন্য ফুলেরা;
যা আনবে আমাদের আকাশে লাল তারকারাজি।

তোমার সাথে এখানেই চিন্তার ফারাক—
তাই আমাদের মাঝে ব্যবধান,
এখন আমি হাঁটছি প্রেমহীন রাস্তা দিয়ে
ইচ্ছেকে খাঁচায় বন্দি করে,
এখন আমি নতুন দিনের খোঁজে তাদের দলে
যারা নতুনের গান গেয়ে নতুন স্বপ্ন আনবে বলে
চলছে নিজেদের আঁকা দিগন্তে,
যাদের পদাঘাতে চূর্ণ হয়ে পিছনে পড়ে থাকবে
পুরনো নীতির আর্বজনা।

১ এপ্রিল ২০১৩,
ময়মনসিংহ

চিত্রের ইতিহাস: কবিতায় ব্যবহৃত অংকিত চিত্রটি ভিনসেন্ট ভ্যান গগ (৩০ মার্চ ১৮৫৩ – ২৯ জুলাই ১৮৯০) আঁকা চিত্র বাড়ি এবং কৃষকের সাথে ভূদৃশ্য (Landscape with House and Ploughman)। শিল্পী চিত্রটি আঁকেন মার্চ ১৮৮৯ সালে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: কবিতাটি আমার [দোলন প্রভা] রচিত মনন পাবলিকেশন ঢাকা থেকে ২০১৭ সালে প্রকাশিত স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে  কবিতাগ্রন্থের ১৬ পৃষ্ঠা থেকে নেয়া হয়েছে এবং রোদ্দুরেতে প্রকাশ করা হলো।

আরো পড়ুন:  ক্ষত

Leave a Comment

error: Content is protected !!