আমার ভালোবাসায় যে নিজেকে উৎসর্গ করেছিল
সেই মেয়েটি এখন আত্মহত্যা করছে।
নীল ও বিন্দু বিন্দু আমার কপালে ঘাম
তার কাছে আমি গভীর সার্থকতা ছিলাম
আমার তরফে কিছু প্রবঞ্চনাও বুঝি ছিল
অথবা সে কোনোদিনও সমুদ্র দেখেনি।
সে এখন আত্মহত্যা করছে
তার আঙুল, লুকোনো নরম রক্ত, সাদা গলা এখনও বেঁচে আছে
শুধু তার চোখের পলক পড়ছে না।
স্থির সম্মতির মতো অপলক আয়নায়
সে এখনও বেঁচে আছে
কোনোদিনও সমুদ্র দেখেনি।
আমাদের একইসঙ্গে সমুদ্রে যাওয়ার কথা ছিল
সে এখনও বেঁচে আছে
এখনও হয়তো যাওয়া যায়
নীল ও তুষারকণা আমার কপালে ঘাম।
এখনও তাকে সারারাত্রি চুমু খাওয়া যায়
এমনকী মৃত্যুর পরেও তাকে সারারাত চুমু খাওয়া যায়
ঘুমন্ত তাকে এত সুন্দর দেখাত
আরও গভীর ঘুমে সৌন্দর্য আরও জন্ম নেয়
কিন্তু সে এখনও বেঁচে আছে
শুধু তার চোখের পলক পড়ছে না।
তার আঙুল কঁপিছে দ্বিধায় ও বিভিন্ন কোণে বসানো পাথরে
নরম রক্ত নিভে যাচ্ছে ভয়ে
সাদা গলার মধ্যে স্বচ্ছ বাতাস ও রাত্রি
আমি এই ঢেউ ও ঝড়ের বিপদসঙ্কেতের কাছে কিছু না
এত ফেনা আর গভীর অন্ধকার প্রবালদ্বীপের মধ্যে সামুদ্রিক অশ্বের হ্রেষায়
আমার নিজের ঠোঁট নিজেরই অচেনা।
অতল সার্থকতা ছিলাম
মৃত্যু, মরে যাওয়া, মরণের মতো
নীল ও বিন্দু বিন্দু আমার কপালে মুহূর্ত।
আমার ভালোবাসায় যে নিজেকে উৎসর্গ করেছিল
সেই মেয়েটি এখন আত্মহত্যা করছে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: নবারুণ ভট্টাচার্যের কাব্যগ্রন্থ ‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’-এর ৩২-৩৩ পৃষ্ঠা থেকে নেয়া হয়েছে।
নবারুণ ভট্টাচার্য (২৩ জুন ১৯৪৮ – ৩১ জুলাই ২০১৪) ছিলেন বিশ শতকের বিপ্লবী কবি, সাহিত্যিক, লেখক, গল্পকার এবং বাঙালি চিন্তাবিদ। বিপ্লবী চিন্তা লালনকারী এই কবি তার কবিতায় লিখেছেন পুঁজিবাদী রাষ্ট্রকাঠামোর তীব্র সমালোচনা। নবারুণ ভট্টাচার্যের রচনার মধ্যে লুব্ধক, হালালঝান্ডা ও অন্যান্য, মহাজনের আয়না, ফ্যাতাড়ু, রাতের সার্কার্স এবং আনাড়ির নারীজ্ঞান উল্লেখযোগ্য।
কবিতাটি পরার পোরে আমি সত্যি খুব কষ্ট পাইছি , কারন আমি সাদিয়া কে খুব ভালো বাসতাম। কিন্তু ওর পরিবার আমাদের সম্পর্ক টা মানত না ।ওর বাবা কিছুদিন পরে জোর করে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়। ঠিক ১২ দিন পরে সুমাইয়া ফাস দিয়ে মরে যায়। আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না ! খুব কষ্ট লাগে ওর কথা মনে হলে ।