ডাহুক নদী (ইংরেজি: Dahuk River) বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের পঞ্চগড়, পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুর এবং বিহারের কিষণগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটির বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য ১৪ কিলোমিটার, গড় প্রশস্ততা ৮০ মিতার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক ডাহুক নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৪৯। ডাহুক নদী মূলত মহানন্দা নদীর উপনদী যা মহানন্দা নদীর বাম তীরে এসে মিলিত হয়েছে।
প্রবাহ: ডাহুক নদীটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের সন্যাসিকাটা গ্রামের বিলাঞ্চল থেকে উৎপত্তি লাভ করে সীমান্ত পেরিয়ে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অতঃপর নদীটি তেঁতুলিয়া উপজেলার পূর্বদিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পুনরায় ভারতের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর মহকুমার ছোপরা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের ভেতর দিয়ে এগিয়ে গেছে। অতঃপর ইসলামপুর মহকুমা পেরিয়ে বিহার রাজ্যের কিষণগঞ্জ জেলায় প্রবেশ করেছে এবং পোঠিয়া কমিউনিটি ব্লকের মহসুল গ্রাম পেরিয়ে মহানন্দা নদীতে পতিত হয়েছে।
ডাহুক নদীতে সারাবছরই পানির প্রবাহ পরিদৃষ্ট হয়। বর্ষাকালে প্রবাহের মাত্রা বৃদ্ধি পেলেও নদীর জলধারা থেকে বন্যার সৃষ্টি হয় না এবং নদীর তীরও ভাঙনের কবলে পড়ে না। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানির প্রবাহ আশংকাজনক হারে হ্রাস পায়। পলির প্রভাবে এই নদীর তলদেশ ক্রমশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং প্রবাহের মাত্রাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। বারোমাসি প্রকৃতির এই নদী বন্যাপ্রবণ নয় এবং এই নদীর অববাহিকায় বাংলাদেশে কোনো প্রকল্প নেই।
বাংলাদেশে এই নদীতে কোনো ব্যারাজ বা রেগুলেটর এবং কোনো বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নেই। এই নদীটিতে জোয়ারভাটার প্রভাব নেই।[১] নদীর উপর জাতীয় মহাসড়ক ৫-এর জন্য ১টী ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে একাধিক ব্রিজ আছে। এই নদীর তীরে পশ্চিমবঙ্গের ছোপরা এবং বিহারের পোঠিয়া ও মাহসুলহাট অবস্থিত।
তথ্যসূত্র:
১. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ১১৯, ISBN 984-70120-0436-4.
২. হানিফ শেখ, ড. মো. আবু (ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। “উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নদ-নদী”। বাংলাদেশের নদ-নদী ও নদী তীরবর্তী জনপদ (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: অবসর প্রকাশনা সংস্থা। পৃষ্ঠা ৫৯। আইএসবিএন 978-9848797518।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।