নোনা নদী বা লোনা নদী বা নুনা নদী (ইংরেজি: Nona River) বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। তবে নদীটি বাংলাদেশ ভারত যৌথ নদী কমিশন কর্তৃক স্বীকৃত আন্তঃসীমান্ত নদী নয়। নদীটি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ মহকুমার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৩০ কিলোমিটার, প্রস্থ ১৪৭ মিটার এবং গভীরতা ১.৫ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক নোনা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ১০৫।[১] নোনা নদী অববাহিকার আয়তন ৬০ বর্গকিলোমিটার।
প্রবাহ: নদীটি ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার অন্তর্গত ধর্মগড় ইউনিয়নের বিলাঞ্চল থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। সূচনাতেই এটি দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে হরিপুর উপজেলার আমগাও ইউনিয়ন অবধি প্রবাহিত হয়ে এক ধারায় লীন হয়েছে। অতঃপর একই উপজেলা দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ মহকুমার মল্লিকপুর, ভাটল, সারুয়া, গোপালপুর গ্রাম পার হয়ে কাচানবাড়ি গ্রামে গিয়ে নাগর নদীতে পতিত হয়েছে।
প্রবাহপথে এটি বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকাইল ও হরিপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। মৌসুমি প্রকৃতির এই নদী বর্ষাকালে পানিতে সয়লাব হয়ে যায়, সেসময় নদীর সঙ্গে বিলের পার্থক্য নির্ণয় করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। কোনো কোনো স্থানে নদীর গতিপথ চিহ্নিত করা সম্ভব হয় না। কিন্তু শুকনো মৌসুমে নদীতে পানির কোনো অস্তিত্ব থাকে না।[১] এসময় নদীর প্রায় পুরোটাই শুকিয়ে যায় এবং এর বুকজুড়ে করা হয় চাষাবাদ। পলির প্রভাবে এই নদীর তলদেশ ক্রমশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে, সেই সাথে কমে যাচ্ছে প্রবহমানতা।[২]
অন্যান্য তথ্য: নোনা নদী বন্যাপ্রবণ এবং এই নদীর অববাহিকায় রহমতপুর প্রকল্প রয়েছে। এই নদীতে কোনো ব্যারাজ বা রেগুলেটর এবং কোনো বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নেই। এই নদীটিতে জোয়ারভাটার প্রভাব নেই। এই নদীর তীরে রায়গঞ্জের ভাটলহাট অবস্থিত।
তথ্যসূত্র:
১. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ১৭১।
২. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ১৫৯-১৬০, ISBN 984-70120-0436-4.
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।