তীরনই নদী (ইংরেজি: Tirnoi River) হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলা এবং ঠাকুরগাঁও জেলার ঠাকুরগাঁও সদর ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৩০ কিলোমিটার, প্রস্থ ৩০ মিটার, গভীরতা ৪ মিটার এবং অববাহিকা এলাকার পরিমাণ ৯০ বর্গ কিমি। নদীটিতে জোয়ার ভাঁটার প্রভাব থাকে না। তীরনই নদী মূলত নাগর নদীর উপনদী যা নাগরের বাম তীরে এসে মিলিত হয়েছে।[১] বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক তীরনই নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৫৪।
প্রবাহ: তীরনই নদী পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার আলোয়া খোয়া ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকার নিম্নাঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে আটোয়ারী ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নদীটি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন অবধি প্রবাহিত হয়ে নাগর নদীতে পড়েছে।
তীরনই একটি বারােমাসি নদী, মার্চ ও এপ্রিল শুষ্ক মৌসুমে মাত্র ২ মিটার গভীরতাবিশিষ্ট ১ কিউসেক পানি থাকে। অপরদিকে আগস্ট বর্ষাকাল হেতু তা বেড়ে ৪ মিটার গভীরতাবিশিষ্ট ৪ কিউসেক পানি প্রবাহ বিদ্যমান থাকে। জোয়ার-ভাটার প্রভাবহীন এ নদীতে সাধারণ বন্যায় নদীর পাড় পানি উপচায় না। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা এ নদীর তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ জনপদ এবং বালিয়াডাঙ্গী-লাইড়ী সড়কে ১টি সেতু এ নদীর উপর নির্মিত হয়েছে।
তীরনই নদীর অববাহিকা অঞ্চল বেশ উর্বর। তাই নদীর দুই তীরে প্রচুর সবজি ও ধান চাষ হয়। নদীর মোহনা নাগর হওয়ায় ভাটির দিকের সাথে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের সাথে সাংস্কৃতিক ঐক্য আছে। নদীর মোহনার কাছে জগদল জমিদার বাড়িকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা মাফিক বৃক্ষরোপন সহ উন্নয়নমুলক কাজের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের বসা ও পর্যটনের জন্য পরিবেশ উন্নত করা যেতে পারে।
আলোকচিত্রের ইতিহাস: কুশলডাঙ্গী ব্রিজ থেকে তীরনই নদীটির এই আলোকচিত্রটি তুলেছেন ভয়েস অব মোমেন্টস নামের এক অজানা আলোকচিত্রী অক্টোবর ২০১৬ তারিখে।
তথ্যসূত্র
১. হানিফ শেখ, ড. মো. আবু (ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। “উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নদ-নদী”। বাংলাদেশের নদ-নদী ও নদী তীরবর্তী জনপদ (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: অবসর প্রকাশনা সংস্থা। পৃষ্ঠা ৫৫। আইএসবিএন 978-9848797518।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।