প্রাক-সক্রেটিস দর্শনশাস্ত্রের আয়োনীয় ত্তন্ত্রজ্ঞান ৬ষ্ঠ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আইয়োনিয়ার মাইলেটাসে কেন্দ্রীভূত হয়েছিল। প্রাচীন গ্রীসের পশ্চিম উপকূলবর্তী দ্বীপগুলি আয়োনীয় দ্বীপপুঞ্জ হিসাবে পরিচিত ছিল। এর মধ্যে সিফালোনিয়া, করফু, ইথাকা প্রভৃতি দ্বীপের নাম প্রসিদ্ধ। এই দ্বীপাঞ্চলেই প্রথম গ্রীক দর্শন ও বিজ্ঞানের উৎপত্তি ঘটে।
খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ ও ৫ম শতকে এই অঞ্চলে যে সকল দার্শনিক দর্শন ও বিজ্ঞানের চর্চা করেন তাঁদের সর্বাগ্রে ছিলেন থেলিস। থেলিসের পরবর্তীকালে প্রসিদ্ধি লাভ করেন এনাক্সিমেন্ডার ও এনাক্সিমেনিস। বস্তুত গ্রীক দর্শনের ইতিহাসে আয়োনীয় কিংবা মাইলেশীয় দর্শন বলতে থেলিস, এনাক্সিমেন্ডার ও এনাক্সিমেনিস এর দর্শনকে বুঝায়।
আয়োনীয় দর্শনের বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, এঁরা জগতের বৈচিত্র্য এবং সৃষ্টি রহস্যকে বস্তু দ্বারা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। জগতের সর্বত্রই বস্তু বিরাজমান। এর মধ্যে আবার পানির গুরুত্ব তাঁদের কাছে সর্বাধিক বলে বোধ হয়েছে। কেননা তাঁদের চারিদিকে তাঁরা অগাধ জলরাশিকে বিস্তৃত দেখেছেন। তাই থেলিস মনে করতেন যে সর্বপ্রকার বস্তুর মূলেই আছে পানি। পরবর্তীকালে হিরাক্লিটাস, এনাক্সাগোরাস, ডায়োজেনিস প্রমুখ দার্শনিক বস্তুর মূল হিসাবে আগুন, বাতাস, অণু কিংবা পরিবর্তমানতা ইত্যাদি সূক্ষ্মতর কারণের উল্লেখ করেন।
তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬; পৃষ্ঠা ২৩৮-২৩৯।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।