কেডার

সভাপতি মাও সে-তুঙের উদ্ধৃতি
২৯. কেডার

*** আমাদের পার্টির ও রাষ্ট্রের রঙ যাতে বদল না হয়, তা সুনিশ্চিত করার জন্য আমাদের যে শুধু সঠিক লাইন ও নীতির প্রয়োজন, তাই নয়, বরং সর্বহার শ্রেণীর বিপ্লবী কার্যের কোটি কোটি উত্তরাধিকারীকে অবশ্যই লালন পালন ও প্রস্তুত করতে হবে।

সর্বহারা শ্রেণীর বিপ্লবী কার্যের উত্তরাধিকারীদের লালন পালন করার সমস্যা, মূলত বলতে গেলে, এটা হচ্ছে, সর্বহারা শ্রেণীর প্রবীণ বিপ্লবীদের শুরু করা মার্কসবাদী-লেনিনবাদী বিপ্লবী কার্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন এমন লোক থাকবেন কি না, ভবিষ্যতে আমাদের পার্টি ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব সর্বহারা শ্রেণীর বিপ্লবীদের হাতে অব্যাহত থাকবে কি না, আমাদের বংশধররা মার্কসবাদ-লেনিনবাদের নির্ভুল পথ বেয়ে অব্যাহতভাবে অগ্রসর হতে পারবেন কি না, অর্থাৎ আমরা চীনে ক্রুশ্চেভ সংশোধনবাদের পুনঃআবির্ভাবকে সাফল্যের সঙ্গে ঠেকাতে পারবো কি না, তার সমস্যা। এক কথায়, এটা আমাদের পার্টি ও রাষ্ট্রের ভাগ্য সম্পর্কিত জীবন মরণের একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এটা হচ্ছে সর্বহারা শ্রেণীর বিপ্লবী কার্যের প্রতি একশ’ বছর, হাজার বছর, এমনকি দশ হাজার বছরের জন্য একটা মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সোভিয়েত ইউনিয়নের সংঘটিত পরিবর্তনের উপরে ভিত্তি করে সাম্রাজ্যবাদী ভবিষ্যদ্বক্তারা চীনা পার্টির তৃতীয় বা চতুর্থ বংশধরদের উপর ‘শান্তিপূর্ণ বিবর্তনের আশা পোষণ করছে। আমাদের অবশ্যই সাম্রাজ্যবাদীদের এই ভবিষ্যদ্বাণীকে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ করে দিতে হবে। আমাদের অবশ্যই সর্বোচ্চ সংস্থা থেকে সর্বনিম্ন সংস্থা পর্যন্ত, সর্বত্রই বিপ্লবী কার্যের উত্তরাধিকারীদের লালন পালন ও প্রস্তুত করার দিকে অনবরত মনোযোগ দিতে হবে।

সর্বহারা শ্রেণীর বিপ্লবী কার্যের যোগ্য উত্তরাধিকারী হবার জন্য কি কি শর্তের প্রয়োজন?

তাদের অবশ্যই প্রকৃত মার্কসবাদী-লেনিনবাদী হতে হবে, কিন্তু ক্রুশ্চেভের মতো মার্কর্সবাদ-লেনিনবাদের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে সংশোধনবাদী হলে চলবে না।

তাদের এমন বিপ্লবী হতে হবে, যারা মনেপ্রাণে চীনের ও বিশ্বের বিপুল সংখ্যাধিক জনগণের সেবা করেন, কিন্তু তাঁদের ক্রুশ্চেভের মতো নিজের দেশের ভেতরে মুষ্টিমেয় বুর্জোয়া শ্রেণীর বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত স্তরের স্বার্থের সেবা করা এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদ ও প্রতিক্রিয়াশীলদের স্বার্থের সেবা করা উচিত নয়। তাঁদের অবশ্যই বিপুল সংখ্যাধিক লোকের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একত্রে কাজ করতে সক্ষম এমন সর্বহারা শ্রেণীর রাজনীতিজ্ঞ হতে হবে। কেবলমাত্র যাঁরা তাঁদের সঙ্গে একমত পোষণ করেন, সেইসব লোকের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হলেই চলবে না, বরং যাঁরা তাঁদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন, সেইসব লোকের সঙ্গে, এমনকি যারা পূর্বে তাঁদের বিরোধিতা করেছিলেন এবং বাস্তব কাজে ভুল প্রমাণিত হয়েছেন, এমন সব লোকের সঙ্গেও ঐক্যবদ্ধ হতে নিপুণ হতে হবে। কিন্তু ক্রুশ্চেভের মতো মতলববাজ ও ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি অবশ্যই বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে, এই ধরনের খারাপ লোককে পার্টির ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বকে কুক্ষিগত করতে বাধা দিতে হবে।

তাঁদের অবশ্যই পার্টির গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতার অনুসরণে আদর্শ হতে হবে, ‘জনসাধারণের থেকে আসা এবং জনসাধারণের মধ্যে যাওয়ার’ নেতৃত্বের পদ্ধতিকে অবশ্যই আয়ত্ত করতে হবে এবং জনসাধারণের মতামত শুনতে নিপুণ হবার গণতান্ত্রিক রীতিকে আয়ত্ত করতে হবে। কিন্তু ক্রুশ্চেভের মতো পার্টির গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতাকে লঙ্ঘন করা, স্বেচ্ছাচারী হওয়া, কমরেডদের উপর আকস্মিক হামলা চালানো, যুক্তি না মানা অথবা ব্যক্তিবিশেষের স্বৈরতন্ত্র চালু করা চলবে না।

আরো পড়ুন:  শিক্ষা ও ট্রেনিং

তাঁদের অবশ্যই বিনয়ী ও সতর্ক হতে হবে, অহঙ্কার ও অসহিষ্ণুতার প্রতি সজাগ থাকতে হবে, আত্মসমালোচনার প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে এবং নিজেদের কাজের ভুল-ত্রুটি শুধরানোর জন্য সাহসী হতে হবে। কিন্তু কোনো মতেই ক্রুশ্চেভের মতো ভুলত্রুটিকে ঢেকে রাখা, সমস্ত কৃতিত্ব নিজেদের জন্য দাবি করা, সমস্ত ভুলত্রুটি অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।

সর্বহারা শ্রেণীর বিপ্লবী কার্যের উত্তরাধিকারী গণসংগ্রাম থেকে বেরিয়ে আসেন এবং বিপ্লবের প্রবল ঝড় ও তরঙ্গে পরীক্ষিত হয়ে অভিজ্ঞ হয়ে উঠেন। দীর্ঘকালীন গণসংগ্রামের মধ্যে কেডারদের যাচাই ও বিচার করা এবং উত্তরাধিকারীদের বাছাই ও লালন পালন করা উচিত। “ক্রুশ্চেভের মেকী কমিউনিজম ও পৃথিবীর পক্ষে তার ঐতিহাসিক শিক্ষা সম্পর্কে” থেকে উদ্ধৃত (১৪ জুলাই, ১৯৬৪)

*** আমাদের পার্টি সংগঠনগুলো অবশ্যই সারা দেশে সম্প্রসারিত হবে, অবশ্যই হাজার হাজার কেডারদের সচেতনভাবে তৈরি করে তুলতে হবে এবং কয়েকশ সর্বোত্তম জননেতার প্রয়োজন হবে। এই কেডার ও নেতারা অবশ্যই মার্কসবাদ-লেনিনবাদ বুঝেন, তারা রাজনীতিতে দূরদর্শী, কর্মে দক্ষ, আত্মবলিদানের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ, স্বাধীনভাবে সমস্যা সমাধানে সক্ষম, বাধা-বিপত্তিতে অবিচলিত এবং জাতি, শ্রেণী ও পার্টির জন্য নিষ্ঠার সঙ্গে কর্মরত। পার্টি এইসব লোকের উপর নির্ভর করেই পার্টি সদস্য ও জনসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে এবং এইসব লোক জনসাধারণকে যে দৃঢ় নেতৃত্ব দেন, তার উপর নির্ভর করেই শত্রুকে পরাজিত করার লক্ষ্যে পৌছে। এই ধরনের লোককে স্বার্থপরতা থেকে, ব্যক্তি বীরত্ব ও আত্মপ্রচারবাদ থেকে, কুঁড়েমি ও নিষ্ক্রিয়তা থেকে এবং হামবড়াভাবে সংকীর্ণতাবাদ থেকে মুক্ত হতে হবে; তাঁদের অবশ্যই নিঃস্বার্থ জাতীয় ও শ্রেণীর বীর হতে হবে। এ হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য, পার্টির কেডার ও পার্টির নেতাদের জন্য প্রয়োজনীয় চরিত্র ও রীতি। “কোটি কোটি জনসাধারণকে জাপানবিরোধী জাতীয় যুক্তফ্রন্টে আনার জন্য সংগ্রাম” (৭ মে, ১৯৩৭)

*** রাজনৈতিক লাইন নির্ধারিত হয়ে গেলে, কেডারই হচ্ছে নির্ণায়ক উপাদান। তাই, পরিকল্পিতভাবে বিপুল সংখ্যক নতুন কেডারকে লালন করাই হলো আমাদের সংগ্রামী কর্তব্য। “জাতীয় যুদ্ধে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির স্থান” (অক্টোবর, ১৯৩৮)

*** কমিউনিস্ট পার্টির কেডার নীতিতে, যে মানদণ্ড প্রয়োগ করা উচিত, তা হচ্ছে কেডাররা পার্টির লাইন দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করেন কি না, পার্টির শৃঙ্খলা মানেন কি না, জনসাধারণের সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে কি না, স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম কি না এবং তারা সক্রিয় পরিশ্রমী ও নিঃস্বার্থ কি না; এটাই হচ্ছে ‘কেবল যোগ্যতা অনুসারে লোক নিয়োগের’ লাইন। ঐ

*** যৌথ উৎপাদন শ্রমে কেডারদের যোগদানের ব্যবস্থাটা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। আমাদের পার্টির ও রাষ্ট্রের কেডাররা হচ্ছেন সাধারণ শ্রমজীবী, জনগণের মাথায় চড়ে বসা লাটসাহেব নন। যৌথ উৎপাদন শ্রমে যোগদান করে কেডাররা শ্রমজীবী জনগণের সঙ্গে সবচেয়ে ব্যাপক, নিত্য ও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখেন। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এটা হচ্ছে মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ, এটা আমলাতন্ত্রবাদকে অতিক্রম করতে এবং সংশোধনবাদ ও গোঁড়ামিবাদকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। “ক্রুশ্চেভের মেকী কমিউনিজম ও পৃথিবীর পক্ষে তার ঐতিহাসিক শিক্ষা সম্পর্কে” থেকে উদ্ধৃত (১৪ জুলাই, ১৯৬৪)

আরো পড়ুন:  বিপ্লবী বীরত্ব

*** অবশ্যই কেডার বিচারে নিপুণ হতে হবে। শুধুমাত্র কেডারদের জীবনের অল্প সময়ের অবস্থা অথবা একটা মাত্র কাজ দেখলেই হবে না, বরং তাঁদের সমস্ত ইতিহাস ও সমস্ত কাজের বিবেচনা করতে হবে, এটাই হচ্ছে কেডারদের বিচার করার প্রধান পদ্ধতি। “জাতীয় যুদ্ধে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির স্থান” (অক্টোবর, ১৯৩৮)

*** অবশ্যই কেডারদের কাজে লাগাতে নিপুণ হতে হবে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, পরিচালকদের দায়িত্ব প্রধানত দুটো ব্যাপার—অভিমত পেশ করা এবং কেডারদের কাজে লাগানো। সমস্ত পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত, আদেশ এবং নির্দেশ ইত্যাদি ‘অভিমত পেশ করার আওতায় পড়ে। এই সমস্ত অভিমত বাস্তবায়িত করার জন্য অবশ্যই কেডারদের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে এবং তাদেরকে উৎসাহিত করতে হবে, এটা ‘কেডারদের কাজে লাগানোর আওতায় পড়ে।

অবশ্যই কেডারদের যত্ন নিতে নিপুণ হতে হবে। যত্ন নেবার পদ্ধতি হচ্ছে— প্রথম, তাঁদের পথনির্দেশ করা। এর অর্থ তাদের অবাধে কাজ করতে দেওয়া, যাতে করে তাঁরা সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন; একই সময়ে তাঁদের সময়োচিত নির্দেশ দেওয়া, যাতে করে পার্টির রাজনৈতিক লাইনে পরিচালিত হয়ে তাঁরা নিজেদের সৃজনশীল উদ্যোগকে পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারেন। দ্বিতীয়, তাঁদের মান উন্নত করা। এর অর্থ, অধ্যয়ন করার সুযোগ দেওয়া, তাদের শিক্ষাদান করা, যাতে করে তারা তত্ত্বগত ক্ষেত্রে এবং কর্মক্ষমতার ক্ষেত্রে নিজেদেরকে উন্নত করতে পারেন। তৃতীয়, তাঁদের কাজকর্মের পরীক্ষা করে দেখা এবং তাঁদের অভিজ্ঞতার সারসংকলনে, তাদের সাফল্যকে সামনে এগিয়ে নিতে ও ভুলগুলোকে শুধরাতে তাদেরকে সাহায্য করা। পরীক্ষা ছাড়া কাজের ভার দেওয়া এবং শুধু মারাত্মক ভুল করা হলেই তার প্রতি মনোযোগ দেওয়াটা কেডারদের প্রতি যত্ন নেয়ার পদ্ধতি নয়। চতুর্থ, যেসব কেডাররা ভুল করেছেন, সাধারণত তাঁদের প্রতি বুঝিয়ে বলার পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে এবং তাদের ভুল শুধরাতে সাহায্য করতে হবে। গুরুতর ভুল করেও যারা নির্দেশ মানে না, কেবলমাত্র তাদের প্রতিই সংগ্রামের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। ধৈর্য এখানে অপরিহার্য; কোনো লোককে অবিবেচিতভাবে ‘সুবিধাবাদের’ লেবেল এঁটে দেওয়া অথবা অবিবেচিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালনার পদ্ধতি অবলম্বন করা ঠিক নয়। পঞ্চম, তাদের অসুবিধায় সাহায্য করা। কেডাররা রোগ, জীবনযাত্রা বা পারিবারিক ও অন্যান্য কষ্টের ফলে অসুবিধায় পড়লে তাদের প্রতি যতটা সম্ভব অবশ্যই মনোযোগের সঙ্গে যত্ন নিতে হবে। এগুলোই হচ্ছে কেডারদের যত্ন নেয়ার পদ্ধতি। ঐ

*** প্রকৃতই ঐক্যবদ্ধ ও জনসাধারণের সঙ্গে সংযুক্ত একটা নেতৃত্ব-মেরুদণ্ড কেবলমাত্র গণসংগ্রামের মধ্যে ক্রমে ক্রমে গড়ে উঠতে পারে— তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নয়। অধিকাংশ অবস্থায় একটা মহান সংগ্রামের প্রক্রিয়ার মধ্যে, তার প্রাথমিক পর্যায়, মধ্য পর্যায় ও শেষ পর্যায়ে নেতৃত্ব-মেরুদণ্ডকে সম্পূর্ণরূপে অপরিবর্তিত থাকা উচিত নয় এবং তা থাকতেও পারে না; সংগ্রামের প্রবাহে যেসব সক্রিয় ব্যক্তিরা উৎরে আসেন, তাদের অবশ্যই অবিরামভাবে উচ্চস্তরে উন্নীত করতে হবে এবং পূর্ববর্তী মেরুদণ্ডে যাঁরা তুলনাগতভাবে হীন অথবা অধঃপতিত, সেসব সদস্যদের বদলে তাঁদের গ্রহণ করতে হবে। “নেতৃত্বের পদ্ধতি সম্পর্কে কতিপয় সমস্যা” (১ জুন, ১৯৪৩)

আরো পড়ুন:  সমালোচনা ও আত্মসমালোচনা

*** যদি আমাদের পার্টিতে ব্যাপক নতুন কেডার ও পুরনো কেডারদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা না থাকে, তাহলে আমাদের কার্য মাঝপথে গতিরুদ্ধ হয়ে পড়বে। তাই সমস্ত পুরনো কেডারদেরকে পরম উৎসাহের সঙ্গে নতুন কেডারদের স্বাগত জানাতে হবে, তাদের যত্ন নিতে হবে। সত্যি নতুন কেডারদের ত্রুটি আছে, বিপ্লবে তারা যোগ দিয়েছেন বেশি দিন হয়নি; তাঁদের অভিজ্ঞতার অভাব আছে এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ অপরিহার্যভাবেই পুরনো সমাজের অস্বাস্থ্যকর মতাদর্শের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে এসেছেন, এটা ক্ষুদে বুর্জোয়া শ্রেণীর ব্যক্তিবাদী চিন্তাধারার অবশিষ্টাংশ। কিন্তু এই ত্রুটিগুলো শিক্ষা আর বিপ্লবের অগ্নি পরীক্ষার ভেতর দিয়ে ক্রমে ক্রমে দূর করা যেতে পারে। যেমন স্ট্যালিন বলেছেন, তাঁদের সদ্গুণ হচ্ছে— যা কিছু নতুন সেসব বিষয়ের প্রতি তাঁদের বোধশক্তি অত্যন্ত সূক্ষ্ম, তাই তারা অত্যন্ত বেশি উদ্দীপ্ত ও সক্রিয়, কিন্তু কোনো কোনো পুরনো কেডারদের মধ্যে রয়েছে ঠিক এ গুণেরই অভাব। নতুন ও পুরনো কেডারদের পরস্পরকে সম্মান করা, পরস্পর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা, অন্যের সদ্গুণ নিয়ে নিজের ত্রুটি অতিক্রম করা উচিত, যাতে করে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে অভিন্ন কার্য সাধন করতে পারেন এবং সংকীর্ণতাবাদী ঝোঁককে ঠেকাতে পারেন। “পার্টির রীতির শুদ্ধিকরণ” (১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪২)

*** শুধুমাত্র পার্টি কেডারদের নয় বরং অদলীয় কেডারদেরও যত্ন নিতে হবে। পার্টির বাইরে অনেক যোগ্য ব্যক্তি রয়েছে, কমিউনিস্ট পার্টি অবশ্যই নিজের দৃষ্টির বাইরে তাদের রাখতে পারে না। প্রত্যেক কমিউনিস্টের কর্তব্য হলো, অহমিকা থেকে নিজেকে মুক্ত করা, অদলীয় কেডারদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে নিপুণ হওয়া, তাদের আন্তরিক সাহায্য দেওয়া, তাঁদের প্রতি একটা ঐকান্তিক কমরেডসুলভ মনোভাব নিয়ে ব্যবহার করা এবং তাদের সক্রিয়তাকে জাপানবিরোধী যুদ্ধের ও দেশ গঠনের মহান কার্যে নিয়োজিত করা। “জাতীয় যুদ্ধে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির স্থান” (অক্টোবর, ১৯৩৮)

Leave a Comment

error: Content is protected !!