সমাজতান্ত্রিক মানুষের স্বরূপ হচ্ছে সাম্যবাদ আকাঙ্ক্ষী বিপ্লবী চেতনার লড়াকু মানুষ রাজনীতি by Anup Sadi - December 27, 2020December 27, 20200 LikeShareTweetPinLinkedIn সমাজতান্ত্রিক মানুষের স্বরূপ (ইংরেজি: The nature of the socialist) হচ্ছে সাম্যবাদ আকাঙ্ক্ষী বিপ্লবী চেতনার লড়াকু মানুষ। এই সমাজতান্ত্রিক মানুষ সম্পর্কে অনেক দার্শনিক, লেখক ও নেতা যথার্থ আলোচনা করেছেন। যেমন এরিখ ফ্রম সমাজতান্ত্রিক ধারার দার্শনিক ও লেখক। এই দার্শনিক মানুষটি আগাগোড়াই জানতেন পুঁজিবাদ জানে কেবল মানুষের সামনে মিথ্যার আকর্ষণীয় পসরা সাজিয়ে মুনাফা লুটতে। তিনি কার্ল মার্কসের ছাত্র হিসেবে পুঁজির অধীনতা থেকে মানুষের সর্বাঙ্গীন স্বাধীনতা ছেয়েছিলেন। এই মহান মানুষটির একটি উক্তি আমরা সর্বদাই মনে রাখি। উক্তিটি হচ্ছে, “মানুষ পরিস্থিতির তৈরি, তবে সেই পরিস্থিতিও মানুষের তৈরি। এক অনন্য ক্ষমতা মানুষকে বাকি সব জীবন্ত জিনিস থেকে আলাদা করেছে; তা হলো নিজ আর নিজ পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া। তাই সেই সচেতনতা অনুযায়ী নিজেদের কাজ ঠিক না করলে মানুষ হওয়া যায় না”।[১] কার্ল মার্কস মানুষকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “মানুষ মানুষের কাছে সবচেয়ে সমুন্নত জীব।… উতখাত করো বর্তমানের এমন সকল সম্পর্ক যেখানে মানুষ হয়ে রয়েছে হেয়, দাসে পরিণত, বিস্মৃত ও ঘৃনিত জীব।” মানুষ সম্পর্কে মাও সেতুং-এর ধারণা ছিলো চমৎকার। যেমন তিনি বলেছেন, “দুনিয়ার সব জিনিসের মধ্যে মানুষই সবচেয়ে মূল্যবান। কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে যতদিন জনগণ থাকবেন ততদিন যে কোনো বিস্ময়কর ব্যাপার ঘটিয়ে দেয়া যাবে।… বিপ্লব সব কিছু পালটে দিতে পারে।”[২] চে গ্যেভারা মানুষের স্বরূপ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, “পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিটির সমস্ত সম্পদের চেয়েও ১০ লক্ষ গুণ অধিক মূল্যবান একজন মানুষের জীবন।” সমাজতান্ত্রিক মানুষ পুঁজিবাদের ভেতর থেকে উদ্ভুত হলেও তারা মানুষ হিসেবে অবশ্যই নতুন মানুষ। তারা এমন মানুষ যাদেরকে মানব সভ্যতার ইতিহাসে অতীতে দেখা যায়নি। পুঁজিবাদ মানুষকে লোভি ও হিংস্র নেকড়েতে পরিণত করে। সমাজতান্ত্রিক মানুষের চিন্তা গড়ে উঠেছে ঠিক তার বিপরীত চিন্তাকে ধারণ করে। ফিদেল ক্যাস্ত্রো গিয়ান্নি মিনার সাথে সাক্ষাতকারে বলেছিলেন “সমাজতন্ত্রে মানুষ স্বদেশ এবং জাতীয় স্বাধীনতাকে তো ভালোবাসেই, সেই সাথে সমাজকেন্দ্রিক মূল্যবোধগুলোকে বিশেষ করে মানবিক সৌহার্দ্যকে উর্ধে তুলে ধরতে চায়।”[৩] আরো পড়ুন: দুই বাংলায় আমার দেখা মানুষ তথ্যসুত্র ১. এরিখ ফরম; Our Way of Life Makes us Miserable, 1964. ২. মাও সেতুং; ‘ইতিহাসের ভাববাদি ধারণার দেউলিয়াপনা’ থেকে; ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৯। ৩. ফিদেল ক্যস্ত্রো; ফিদেল ক্যস্ত্রোর মুখোমুখি, জাহানারা নূরী অনূদিত, শিখা প্রকাশনী, ঢাকা; পৃষ্ঠা, ১৩৮। রচনাকাল ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩; চৌরঙ্গী মোড়, ময়মনসিংহ। LikeShareTweetPinLinkedIn