রাজনৈতিক কাজ

সভাপতি মাও সে-তুঙের উদ্ধৃতি

১২. রাজনৈতিক কাজ

*** সে সময়ে [অর্থাৎ ১৯২৪-১৯২৭ প্রথম বিপ্লবী গৃহযুদ্ধের সময় (সম্পাদক)] সৈন্যবাহিনীতে পার্টি প্রতিনিধির ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক বিভাগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, এ ধরনের ব্যবস্থা চীনের ইতিহাসে আর কখনও ছিল না, এ ধরনের ব্যবস্থার উপর নির্ভর করেই সৈন্যবাহিনী সম্পূর্ণ নতুন রূপ লাভ করেছে। ১৯২৭ সালের পরের লাল ফৌজ ও আজকের অষ্টম রুট বাহিনী, এই ব্যবস্থাকে উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেছে এবং এটাকে উন্নত করেছে। “বৃটিশ সাংবাদিক জেম্স বারট্রামের সঙ্গে সাক্ষাৎকার” (২৫ অক্টোবর, ১৯৩৭)

*** গণযুদ্ধের ভিত্তিতে এবং সৈন্যবাহিনী ও জনগণের ঐক্যের, কমান্ডার ও যোদ্ধাদের ঐক্যের নীতির ভিত্তিতে তথা শত্রুবাহিনী ছিন্নবিচ্ছিন্ন করা প্রভৃতি নীতির ভিত্তিতে গণমুক্তি ফৌজ নিজেদের শক্তিশালী বিপ্লবী রাজনৈতিক কাজের ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। শত্রুদের পরাজিত করার জন্য এটা হচ্ছে একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। “বর্তমান পরিস্থিতি ও আমাদের কর্তব্য” (২৫ ডিসেম্বর, ১৯৪৭)

*** এই সৈন্যবাহিনী গণযুদ্ধের অপরিহার্য রাজনৈতিক কাজের একটা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, এর কর্তব্য হচ্ছে, আমাদের নিজেদের সৈন্যবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ করা, মিত্রবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ করা, মিত্রবাহিনীগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য এবং শত্রুবাহিনীকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন ও যুদ্ধে বিজয়কে সুনিশ্চিত করার জন্য সংগ্রাম করা। “যুক্ত সরকার সম্পর্কে” (২৪ এপ্রিল, ১৯৪৫)

*** রাজনৈতিক কাজ হচ্ছে সমস্ত অর্থনৈতিক কাজের প্রাণসূত্র। সমাজের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যখন মৌলিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে, ঠিক সেই সময়ে এ কথাটা বিশেষভাবে সত্য। “একটা গুরুতর শিক্ষা” —এর ভূমিকালিপি (১৯৫৫)

*** লাল ফৌজ কেন যে এই দূরূহ অবস্থায় যুদ্ধ করে অবিচ্ছিন্ন রয়ে গেলো তার একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে ‘কোম্পানিতে পার্টি শাখা গঠিত হয়’। “চিংকাং পাহাড়ে সংগ্রাম” (২৫ নভেম্বর, ১৯২৮)

*** অষ্টম রুট বাহিনীর রাজনৈতিক কাজের মৌলিক নীতি হচ্ছে তিনটা। প্রথম— অফিসার ও সৈনিকদের ঐক্যের নীতি, এর অর্থ যে, সৈন্যবাহিনী থেকে সামন্তবাদ নির্মূল করা, মারধোর ও গালাগালের ব্যবস্থা উঠিয়ে দেওয়া, সচেতন শৃঙ্খলা গড়ে তোলা এবং সবাই এক সঙ্গে সুখদুঃখের ভাগ নিয়ে জীবনযাপন করা, যার ফলে, গোটা বাহিনীই হয় ঘনিষ্ঠভাবে ঐক্যবদ্ধ। দ্বিতীয়— সৈন্যবাহিনী ও জনগণের ঐক্যের নীতি, এর অর্থ, জনসাধারণের স্বার্থের লেশমাত্র লঙ্ঘন ও নিষিদ্ধ করার শৃঙ্খলাকে বজায় রাখে, জনসাধারণের মধ্যে প্রচার চালানো, তাঁদের সংগঠিত করা ও সশস্ত্র করা, তাদের অর্থনৈতিক বোঝা হাল্কা করা এবং সৈন্যবাহিনী ও জনগণের ক্ষতিসাধনকারী বিশ্বাসঘাতক ও স্বদেশ বিক্রয়কারীদের আঘাত করা, এর ফলে, সৈন্যবাহিনী ও জনগণ হয়ে উঠে ঐক্যবদ্ধ এবং জনগণ সর্বত্রই সৈন্যবাহিনীকে স্বাগত জানান। তৃতীয় শত্রুবাহিনীকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করার ও যুদ্ধবন্দীদের প্রতি সদয় ব্যবহার করার নীতি। আমাদের বিজয় শুধুমাত্র আমাদের সৈন্যবাহিনীর যুদ্ধ করার উপরই নির্ভর করে না বরং তা নির্ভর করে শত্রুবাহিনীকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করার উপরেও। “বৃটিশ সাংবাদিক জেমস বারট্রামের সঙ্গে সাক্ষাঙ্কার” (২৫ অক্টোবর, ১৯৩৭)

*** সৈন্যবাহিনী ও জনগণের, সৈন্যবাহিনী ও সরকারের, সৈন্যবাহিনী ও পার্টির, অফিসার ও সৈনিকদের, সামরিক কাজ ও রাজনৈতিক কাজের সম্পর্ক এবং কেডারদের পারস্পরিক সম্পর্ক সম্বন্ধে আমাদের সৈন্যবাহিনীকে অবশ্যই নির্ভুল নীতি অনুসরণ করতে হবে, কোনো মতেই যুদ্ধবাজবাদের ব্যাধিতে সংক্রমিত হওয়া উচিত নয়। অফিসারদেরকে অবশ্যই সৈনিকদের যত্ন নিতে হবে, তাদের প্রতি উদাসীন হওয়া কিংবা তাদের দৈহিক শাস্তি দেওয়া চলবে না; সৈন্যবাহিনী অবশ্যই জনগণকে ভালবাসবে, তাদের স্বার্থের ক্ষতি করতে পারবে না; সৈন্যবাহিনী অবশ্যই সরকার ও পার্টিকে সম্মান করবে, কোনো ক্রমেই স্বতন্ত্রতার দাবি করতে পারবে না। “সংগঠিত হোন” (২৯ নভেম্বর, ১৯৪৩)

আরো পড়ুন:  জনসাধারণের লাইন

*** জাপানী বাহিনী, তাঁবেদার অথবা কমিউনিস্ট বিরোধী সৈন্যবাহিনী থেকে ধৃত বন্দীদের সম্পর্কে— যারা জনগণের কাছ থেকে তীব্র ঘৃণা পেয়েছে, তাদের অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড গ্রহণ করতে হবে এবং যাদের মৃত্যুদণ্ড উচ্চতর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে, তারা ছাড়া আর সকলকে মুক্তি দেবার নীতি আমাদের অবলম্বন করা উচিত। বন্দীদের মধ্যে যারা বাধ্য হয়ে প্রতিক্রিয়াশীল বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু বিপ্লবের প্রতি কম বেশি ঝোঁক আছে, আমাদের সৈন্যবাহিনীর জন্য কাজ করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে বিপুল সংখ্যায় আমাদের পক্ষে টেনে আনতে হবে, অবশিষ্ট সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে। যদি তারা আবার লড়ে ও ধরা পড়ে তাহলেও আবার ছেড়ে দিতে হবে; তাদের অপমান করা উচিত নয়, তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র তালাশ করা উচিত নয় অথবা তাদের থেকে অনুশোচনা পত্র নেবার চেষ্টা করাও উচিত নয় বরং বিনা ব্যতিক্রমে তাদের প্রতি আমাদের আন্তরিক সদয় ব্যবহার করা উচিত। তারা যত প্রতিক্রিয়াশীলই হোক না কেন, এই নীতিই আমাদের অবলম্বন করা উচিত। প্রতিক্রিয়াশীল শিবিরকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য এটা খুবই কার্যকরী। “নীতি সম্পর্কে” (২৫ ডিসেম্বর, ১৯৪০)

*** অস্ত্র হচ্ছে যুদ্ধের একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, কিন্তু নির্ধারক উপাদান নয়; নির্ধারক উপাদান হচ্ছে মানুষ, বস্তু নয়। শক্তির তুলনা শুধু সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তির তুলনাই নয়, বরং জনশক্তি ও নৈতিক শক্তিরও তুলনা। সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি অপরিহার্যরূপেই মানুষের দ্বারা পরিচালিত হয়। দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ সম্পর্কে (মে, ১৯৩৮)

*** এটম বোমা হচ্ছে কাগুজে বাগ, জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য মার্কিনী প্রতিক্রিয়াশীলরা এটা ব্যবহার করে, এটা দেখতে ভয়াবহ, কিন্তু আসলে তা নয়। নিশ্চয়ই এটম বোমা একটা বিরাটাকারের গণহত্যার অস্ত্র, কিন্তু যুদ্ধের হারজিতকে জনগণই নির্ধারণ করেন, দুএকটা নতুন ধরনের অস্ত্র নয়। “মার্কিন সাংবাদিক আন্না লুইস স্ট্রংয়ের সাথে আলাপ” (আগস্ট, ১৯৪৬)

*** সৈন্যবাহিনীর ভিত্তি হচ্ছে সৈনিক, প্রগতিশীল রাজনৈতিক প্রেরণার দ্বারা সৈন্যবাহিনীকে অনুপ্রাণিত না করলে এবং এই উদ্দেশ্যে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কাজ না চালালে, অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে সত্যিকারের ঐক্য অর্জন করা অসম্ভব হবে, অসম্ভব হবে জাপানবিরোধী যুদ্ধের অনুকূলে অফিসার ও সৈনিকদের উৎসাহকে সর্বাধিক মাত্রায় উদ্দীপিত করা, সমস্ত টেকনিক ও যুদ্ধকৌশল যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য শ্রেষ্ঠতম ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করাও অসম্ভব। “দীঘস্থায়ী যুদ্ধ সম্পর্কে” (মে, ১৯৩৮)

*** লাল ফৌজের কোনো কোনো কমরেডের মধ্যে নিছক সামরিক দৃষ্টিকোণ খুবই বিকাশ লাভ করেছে। এটা নিজেকে এইভাবে প্রকাশ করে:

(১) এইসব কমরেড সামরিক ব্যাপার ও রাজনীতিকে পরস্পরবিরোধী বলে মনে করেন এবং সামরিক ব্যাপার যে রাজনৈতিক কর্তব্য সম্পাদনের অন্যতম যন্ত্রমাত্র, এ কথা তারা অস্বীকার করেন। এমনকি কেউ কেউ আরও বলেন, “সামরিক ব্যাপারে ভাল হলে স্বভাবতই রাজনীতিতে ভাল হবে, সামরিক ব্যাপারে ভাল না হলে রাজনীতিও ভাল হতে পারে না।” এইভাবে তারা আরও দূরে চলে গেছেন, তাঁদের মতে সামরিক ব্যাপার রাজনীতির উপর নেতৃত্ব করে।… “পার্টির ভেতরকার ভুল চিন্তাধারা সংশোধন করা সম্পর্কে” (ডিসেম্বর, ১৯২৯)

আরো পড়ুন:  শিক্ষা ও ট্রেনিং

*** মতাদর্শগত শিক্ষাকে আঁকড়ে ধরাটা হচ্ছে গোটা পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করে মহান রাজনৈতিক সংগ্রাম চালানোর মূল চাবিকাঠি। এই কর্তব্য সম্পাদন না করলে পার্টির কোনো রাজনৈতিক কর্তব্যই সম্পন্ন হতে পারে না। “যুক্ত সরকার সম্পর্কে” (২৪ এপ্রিল, ১৯৪৫)

*** সম্প্রতি, বুদ্ধিজীবী ও যুব-ছাত্রদের মধ্যে মতাদর্শগত রাজনৈতিক কাজে ভাটা পড়েছে এবং কিছু কিছু অস্বাস্থ্যকর ঝোঁক দেখা দিয়েছে। মনে হয়, কিছু লোকের চোখে, কি রাজনীতি, কি মাতৃভূমির ভবিষ্যৎ, কি মানবজাতির আদর্শ, এ সবের উপরে মনোযোগ দেবার আর কোনো প্রয়োজন নেই, যেন মার্কসবাদ এক সময়ে বেশ চালু ছিল, কিন্তু এখন আর তেমন চালু নয়। এই রকম অবস্থার সম্মুখীন হবার জন্য এখন অবশ্যই মতাদর্শগত রাজনৈতিক কাজকে দৃঢ়তর করতে হবে। বুদ্ধিজীবী ও যুব-ছাত্র উভয়েরই কঠোরভাবে অধ্যয়ন করা উচিত। বিশেষ বিষয়ের অধ্যয়ন ছাড়া মতাদর্শগত এবং রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই তাদের অবশ্যই অগ্রগতি লাভ করতে হবে, এর জন্যই মার্কসবাদ, বর্তমান ঘটনাবলী ও রাজনীতি অধ্যয়ন করা প্রয়োজন। সঠিক রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ না থাকাটা আত্মা না থাকারই সমান।… মতাদর্শগত রাজনৈতিক কাজে সব বিভাগকেই দায়িত্ব বহন করতে হবে। কমিউনিস্ট পাটি, যুবলীগ, এ কাজের ভারপ্রাপ্ত সরকারি বিভাগ এবং বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালক ও শিক্ষকদের এ দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। “জনগণের ভেতরকার দ্বন্দ্বের সঠিক মীমাংসার সমস্যা সম্পর্কে” (২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৭)

*** রাজনৈতিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে, লাল ফৌজের সৈনিকরা সবাই শ্রেণিচেতনা লাভ করেছেন এবং জমিবণ্টন, রাজনৈতিক ক্ষমতা স্থাপন, শ্রমিক কৃষকদের সশস্ত্র করা প্রভৃতি সাধারণ জ্ঞান অর্জন করেছেন। তারা সবাই জানেন যে, তারা লড়ছেন নিজেদের জন্য এবং শ্রমিক-কৃষক শ্রেণির জন্য। তাই, তারা দুরূহ সংগ্রামের মধ্যেও কোনো অসন্তোষ প্রকাশ করেননি। প্রত্যেকটি কোম্পানি, ব্যাটেলিয়ান ও রেজিমেন্টে সৈনিক সমিতি গঠন করা হয়েছে, এই সমিতি সৈনিকদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে, রাজনৈতিক কাজ এবং জনসাধারণের মধ্যকার কাজও করে। “চিংকাং পাহাড়ে সংগ্রাম” (২৫ নভেম্বর, ১৯২৮)

*** দুঃখ দুর্দশা (পুরনো সমাজ ও প্রতিক্রিয়াশীলরা শ্রমজীবী জনগণকে যে দুঃখ কষ্ট দিয়েছে) সম্পর্কে বলার ও তিনটা যাচাই করার (শ্রেণির উৎপত্তির যাচাই, কাজের যাচাই, সংগ্রামী মনোবলের যাচাই) আন্দোলন সঠিকভাবে চালনার ফলে শোষিত শ্রমজীবী জনসাধারণের মুক্তির জন্য, দেশব্যাপী ভূমিসংস্কার ও জনগণের সাধারণ শত্রু চিয়াং কাইশেক দস্যুদলের বিনাশসাধনের জন্য গোটা সৈন্যবাহিনীর কমান্ডার ও যোদ্ধাদের সংগ্রামের চেতনা বিপুল পরিমাণে উন্নত হয়েছিল; একই সময়ে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে সব কমান্ডার ও যোদ্ধাদের দৃঢ় ঐক্য আরও দৃঢ়তর হয়েছিল। এর ভিত্তিতে, সৈন্যবাহিনীতে অধিকতর বিশুদ্ধতা অর্জিত হয়েছে, শৃঙ্খলা দৃঢ়তর হয়েছে, ব্যাপক সামরিক ট্রেনিং আন্দোলন বিস্তারিত হয়েছে এবং সম্পূর্ণ সুপরিচালিত ও সুশৃঙ্খলিতভাবে চালিত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক গণতন্ত্র আরও বিকশিত হয়েছে। এইভাবে সৈন্যবাহিনীর সকলের হৃদয় একই সূত্রে গেঁথে গেছে, প্রত্যেকেই তার ধারণা ও শক্তি ঢেলে দেন, আত্মবলিদানকে ভয় করেন না এবং বৈষয়িক অসুবিধা অতিক্রম করেন, সম্মিলিত বীরত্ব ও দুর্বার সাহস প্রদর্শন করে শত্রুর বিনাশসাধন করেন। এ ধরনের সৈন্যবাহিনীই পৃথিবীতে অজেয়। “উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিরাট বিজয় সম্পর্কে এবং মুক্তি ফৌজের নতুন ধরনের শুদ্ধিকরণ আন্দোলন সম্পর্কে” (৭ মার্চ, ১৯৪৮)

আরো পড়ুন:  পার্টি কমিটির নেতৃত্ব

*** বিগত কয়েক মাসে গণমুক্তি ফৌজের প্রায় সমস্ত ইউনিট লড়াইয়ের মধ্যে যে অবকাশ পেয়েছিল, তা ব্যবহার করে ব্যাপক আকারে শুদ্ধিকরণ ও ট্রেনিং চালিয়েছিল। এটা চালানো হয়েছে সম্পূর্ণভাবে সুপরিচালিত, সুশৃঙ্খলিত ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। ফলে, এটা উদ্দীপ্ত করে তুলেছে ব্যাপক কমান্ডার ও যোদ্ধাসাধারণের বিপ্লবী উৎসাহ, যুদ্ধের লক্ষ্যকে স্পষ্টভাবে বুঝতে তাদের করেছে সমর্থ, সৈন্যবাহিনীতে যেসব বেঠিক মতাদর্শগত ঝোঁক ও অবাঞ্ছনীয় অভিব্যক্তি দেখা যায় সেগুলোকে বিলোপ করেছে, কেডার আর যোদ্ধাদের শিক্ষিত করেছে, সৈন্যবাহিনীর সংগ্রামী শক্তিকে বিপুল পরিমাণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন থেকে সৈন্যবাহিনীর গণতান্ত্রিক ও ব্যাপক প্রকৃতির এই নতুন ধরনের শুদ্ধিকরণ আন্দোলনকে আমাদের অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে। “শানসী-সুইউয়ান মুক্ত এলাকার কেডার সম্মেলনে প্রদত্ত ভাষণ” (১ এপ্রিল, ১৯৪৮)

*** জাপানবিরোধী সামরিক ও রাজনৈতিক কলেজের শিক্ষানীতি হচ্ছে দৃঢ় ও নির্ভুল রাজনৈতিক দিশা, কঠোর ও সরল কর্মরীতি এবং নমনীয় রণনীতি ও যুদ্ধকৌশল। জাপানবিরোধী বিপ্লবী সৈন্য গড়ে তোলার জন্য এই তিনটা হচ্ছে অপরিহার্য উপাদান। কলেজের কর্মচারী, শিক্ষক ও ছাত্ররা এই তিনটা উপাদান অনুসারে শিক্ষা দেন ও শিখেন। “শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হওয়া ভাল, খারাপ নয়” (২৬ মে, ১৯৩৯)

*** কঠোর সংগ্রামের একটা ঐতিহ্যগত রীতি আমাদের জাতির সর্বদাই রয়েছে, এটাকে আমাদের বিকশিত করতে হবে।… এর থেকেও বড় কথা হচ্ছে দৃঢ় ও নির্ভুল রাজনৈতিক দিশার পক্ষে কমিউনিস্ট পার্টি সর্বদাই প্রচার করে আসছে… কঠোর সংগ্রামের কর্মরীতি থেকে এই দৃঢ় ও নির্ভুল রাজনৈতিক দিশা অবিচ্ছেদ্য দৃঢ় ও নির্ভুল রাজনৈতিক দিশা বাদ দিলে, কঠোর সংগ্রামের কর্মরীতিকে উদ্দীপ্ত করা অসম্ভব; আবার কঠোর সংগ্রামের কর্মরীতিকে বাদ দিলে, দৃঢ় ও নির্ভুল রাজনৈতিক দিশা অনুসরণ করাও অসম্ভব। “আন্তর্জাতিক শ্রমদিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ইয়েনান সমাবেশে প্রদত্ত ভাষণ” (১ মে, ১৯৩৯)

*** ঐক্যবদ্ধ, উত্তেজনাময়, ভাব-গম্ভীর ও প্রাণবন্ত হোন। “জাপানবিরোধী সামরিক ও রাজনৈতিক কলেজের আদর্শ-বাণী”

*** পৃথিবীতে সব কিছুই ‘গভীর মনোযোগ’ শব্দটা ভয় করে, কিন্তু কমিউনিস্টরা এর উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করেন। “মস্কোতে চিনা ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষানবীসদের সাক্ষাতদানকালে প্রদত্ত ভাষণ” (১৭ নভেম্বর, ১৯৫৭)

Leave a Comment

error: Content is protected !!