দুধিয়ালতা দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মানো ভেষজ গুল্ম

দুধিয়ালতা

বৈজ্ঞানিক নাম: Ichnocarpus frutescens (L.) R. Br., Mem. Wern. Soc. 1: 62 (1811). সমনাম: Apocynum frutescens L. (1764), Echites frutescens Wall. (1829), Ichnocarpus ovatifolius A. DC. (1844), Ichnocarpus frutescens (L.) R. Br. var. pubescence Kurz (1877), Ichnocarpus volubilis Merr. (1922). ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: পেরালিয়া লতা, দুধিয়ালতা, ছায়ামালতা।

ভূমিকা: দুধিয়ালতা (বৈজ্ঞানিক নাম: Ichnocarpus frutescens) দক্ষিণ এশিয়ার দেশে জন্মে। এটি বনাঞ্চলে জন্মে। এছাড়া গাছটি ভেষজ গুণসম্পন্ন।

দুধিয়ালতা-এর বর্ণনা:

এটি বৃহৎ, প্যাঁচানো গুল্ম লতানো বিশিষ্ট। দেখতে প্রচুর শাখা বিশিষ্ট কাণ্ড, বাকল লালচে-বাদামি, মরিচা সদৃশ ঘন ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত। পত্র অঙ্কীয় পৃষ্ঠে মরিচা সদৃশ রোমশযুক্ত, পত্রবৃন্ত অনূর্ধ্ব ০.৫ সেমি লম্বা, পত্রফলক ৭-১১ × ২.৫-৩.০ সেমি, উপবৃত্তাকার-আয়তাকার বা বল্লমাকার, নিম্নাংশে কীলকাকার বা গোলাকার, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র বা দীর্ঘাগ্র। সাইম কাক্ষিক ও প্রান্তীয়, যৌগমঞ্জরীবৎ।

পুষ্প ক্ষুদ্র, সবুজাভ-সাদা, সুগন্ধী, মঞ্জরীপত্র অতি ক্ষুদ্র। বৃতি রোমশ, ৫-ফাটলযুক্ত, অভ্যন্তরে গ্রন্থিল। দলমণ্ডল থলিকাকার, অতিরোমশ ও নলের গলদেশে সংকুচিত, খন্ডসমূহ ৫টি, ডান দিকে পাকানো। পুংকেশর ২টি, অন্তর্ভুক্ত, পরাগধানী বাণাকার, স্পারযুক্ত, গর্ভমুণ্ডের উপর যমক ও সংসক্ত। চক্র (ফলক) খন্ডিত। গর্ভপত্র ২টি, স্বতন্ত্র, গর্ভদণ্ড ও গর্ভমুণ্ডের যমক। ফলিক্যাল একল বা জোড়ায় সজ্জিত, সোজা। বীজ বহুসংখ্যক, একটি খর্ব, রোমের সাথে রৈখিক।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২০ = ২০ (Kumar and Subramaniam, 1986)

আবাসস্থল ও বংশবিস্তার:

আর্দ্র অথবা শুকনা চিরহরিৎ অথবা পর্ণমোচী বনাঞ্চল। ফুল ও ফল ধারণ এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। বীজ এবং কাণ্ড বা মূলের কাটিং দ্বারা বংশ বিস্তার করা হয়।

বিস্তৃতি :

অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, কাশ্মীর, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, নেপাল, শ্রীলংকা ও পাকিস্তান। বাংলাদেশে সর্বত্র ইহা সাধারণভাবে পাওয়া যায়।

ব্যবহার: বাকল তন্ত্র উৎপাদন করে। পাতা ও মূল রোগ উপশমকারী (Deb, 1983)।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৬ষ্ঠ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) দুধিয়ালতা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে এটি আশংকামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে দুধিয়ালতা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি বর্তমানে সংরক্ষণ করতে হবে না।

আরো পড়ুন:  অ্যাঞ্জেলিকা গণের নানা প্রজাতির বিবরণ ও গুণাগুণ

তথ্যসূত্র:

১. এম আতিকুর রহমান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৬ষ্ঠ, পৃষ্ঠা ১৯৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!