ঝাউয়া বাংলাদেশের পার্বত্যঞ্চলে জন্মানো উপকারী বৃক্ষ

ঝাউয়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Holigarna longifolia Roxb., Fl. Ind. 2: f 80 (1824). সমনাম: জানা নেই। ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: বারোলা, ঝাউয়া (সিলেট)।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Edicots অবিন্যাসিত: Rosids বর্গ: Sapindales পরিবার: Anacardiaceae গণ: Holigarna প্রজাতির নাম: Holigarna longifolia.

ভূমিকা: ঝাউয়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Holigarna longifolia) হচ্ছে অনাকারদিয়াসেই পরিবারের হোলিগারনা গণের এক প্রকারের বৃক্ষ। এই প্রজাতিটি দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মায়।

ঝাউয়া-এর বর্ণনা :

ঝাউয়া মসৃণ ছাই-বর্ণ বাকলবিশিষ্ট লম্বা বৃক্ষ। বাহির থেকে আঘাতের ফলে অতিশয় কটু লাক্ষা ক্ষরিত হয়। পত্র ২৮-৪৫ × ৬.৫- ৮.০ সেমি, সংকীর্ণভাবে অর্ধ-বল্লমাকার, দীর্ঘাগ্র, মধ্যাংশের উপর হতে কীলকাকার নিম্নাংশের দিকে ক্রমান্বয়ে সরু, মসৃণ, নিম্নপৃষ্ঠের উপর চকচকে, শিরা ২০-২৫ জোড়া,  শিরা জালক প্রশস্ত, পত্রবৃন্ত ২.৫ সেমি পর্যন্ত দীর্ঘ। যৌগিক মঞ্জরী বৃহৎ ও বিস্তৃত, ১৬-৩০ সেমি লম্বা, মরিচা সদৃশ ঘন ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত।

পুষ্প একলিঙ্গ, অবৃন্তক, মঞ্জরীপত্রিকাযুক্ত। পুং পুষ্পের ব্যাস ১.৫ মিমি, বৃতি পেয়ালাকৃতি, ঘনভাবে কোমল ক্ষুদ্র রোমাবৃত, দল এর আয়তাকার, নিম্নাংশ কর্তিতাগ্র, ঘন ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত, পুংকেশর ৫টি, ১ মিমি দীর্ঘ, চাকতি ৫-খন্ডকযুক্ত।

স্ত্রী পুষ্প রোমশ গর্ভাশয়যুক্ত, গর্ভদণ্ড ৩টি, পুনঃবক্র। ফলধারী , যৌগিক মঞ্জরী ঈষৎ বক্র শাখাযুক্ত, ৪৫ সেমি পর্যন্ত দীর্ঘ। ফল দীর্ঘায়িত বৃন্তযুক্ত ড্রপ, বৃতি নলে সম্পূর্ণভাবে আবদ্ধ, আয়তাকার বা ডিম্বাকার, লাক্ষিক, অতিশয় কটু, সস্য চর্মবৎ।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: জানা নেই।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

বর্ষা-অরণ্য, প্রায়শঃ নদীর নিকট জন্মায়। ফুল ও ফল মার্চ থেকে জুলাই মাসের মধ্যে ধরে। বীজ থেকে বংশ বিস্তার হয়।

বিস্তৃতি :

ঝাউয়া গাছ ভারত এবং মায়ানমার। বাংলাদেশে সিলেট, চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলায় ইহা পাওয়া যায়।

বাণিজ্যিক ব্যবহার:

এ উদ্ভিদের লাক্ষিক অতিশয় কটু ও বিষময়, রস সুপরিচিত কালো- সোনালী-বার্ণিশ তৈরির জন্য প্রসিদ্ধ। কাঠ গৃহ নির্মাণে ও নৌকা তৈরিতে ব্যবহৃত হয় (Singh et al., 2000) ।

আরো পড়ুন:  ছায়া গুল্ম-এর নানা গুণাগুণের বিবরণ

ঝাউয়া-এর অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ০৬ ষ্ঠ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০ ঝাউয়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের বন উজাড় হয়ে যাওয়া এবং আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে এটি ঝুঁকি মুক্ত নয়। বাংলাদেশে  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেষ্ট্রি ইনস্টিটিউট এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে কিছু গাছ সংরক্ষিত আছে। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে বর্তমানে এক্স-সিটু পদ্ধতিতে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ফল সংগ্রহ করে এর বীজ থেকে চারা উত্তোলন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।    

তথ্যসূত্র:

১. মোহাম্মদ কামাল হোসেন (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ০৬ ষ্ঠ, পৃষ্ঠা ১১৮-১১৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি gbif.org থেকে নেওয়া হয়েছে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!