হয়া পরগাছা ভেষজ ও আলঙ্কারিক লতা

হয়া পরগাছা

বৈজ্ঞানিক নাম: Hoya parasitica (Roxb.) Wall. ex Wight, Contr. Bot. India: 37 (1834). সমনাম: Asclepias parasitica Roxb. (1832), Hoya hookeriana Wight (1834). ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: হয়া পরগাছা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ:  Gentianales. পরিবার: Apocynaceae. গণ: Hoya প্রজাতির নাম: Hoya parasitica.

ভূমিকা: হয়া পরগাছা (বৈজ্ঞানিক নাম: Hoya parasitica) এক প্রকারের ভেষজ ও আলঙ্কারিক লতা। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়।

হয়া পরগাছা-এর বর্ণনা:

হয়া পরগাছা পরাশ্রয়ী, লম্বা, লতান গাছ, কাণ্ড ও শাখা স্থুলাকার, মসৃণ। পত্র সবৃন্তক, পত্রবৃন্ত ১.০-১.৬ সেমি লম্বা, পুরু, মসৃণ বা রোমশূণ্য, পত্রফলক পরিবর্তনশীল, ডিম্বাকার- উপবৃত্তাকার বা বল্লমাকার, আয়তাকার-উপবৃত্তাকার, ১০.০-১৫.৫ × ২.৫-৩.৫ (-৫) সেমি, মাংসল, মসৃণ, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র বা অর্ধ-সূক্ষ্মাগ্র, নিম্নাংশ কীলকাকার বা স্থূলাগ্র। সাইম ছত্রমঞ্জরী, বহু-পুষ্পী, পর্বে একল, পুষ্পদন্ড ৩.০-৫.৫ সেমি লম্বা, স্থুলাকার, পুষ্পবৃত্তিকা ১.২-১.৮ সেমি লম্বা, সরু।

বৃতি খন্ড আয়তাকার, শীর্ষ স্থূলাগ্র, ২০ ১ মিমি, রোমশূণ্য, প্রান্ত সিলিয়াযুক্ত। দলমণ্ডল বাইরের দিকে মসৃণ, নল ৩-৪ মিমি লম্বা, খন্ড স্পষ্টতঃ ডিম্বাকার, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র, ৪-৫ মিমি লম্বা, অভ্যন্তর সূক্ষ্মভাবে রোমশ। কিরীটীয় শল্ক পাঁচটি, দলমণ্ডল জাত, মাংসল, উজ্জ্বল, প্রতিটি শল্ক নৌকা- আকৃতি, ৩-৫ মিমি লম্বা, অধিকতর অন্তর্বর্তী শীর্ষ অর্ধ- সূক্ষ্মাগ্র, খাটো, গর্ভমুণ্ড শীর্ষের উপর ধনুকের মত, বাইরের শীর্ষ দীর্ঘাগ্র, স্থূলাগ্র, দলমণ্ডল খন্ডের চেয়ে দীর্ঘতর ও তাদের মধ্যদিকে বাইরের দিকে অভিক্ষিপ্ত, পাতলা, পরাগধানী স্বচ্ছ ঝিল্লিময় শীর্ষ বিশিষ্ট্য, ফুল আয়তকার, ঋজু, অর্ধ-বৃত্তক, প্রতি পরাগধানী অতি ক্ষুদ্র, ত্রিকোণাকৃতি। ফলিক্যাল ২টি, সরু, ১০-১৫ সেমি লম্বা, সূক্ষ্মাগ্র, মসৃণ, বাদামি বিন্দুযুক্ত। বীজ ৪-৫ মিমি লম্বা, আয়তাকার-উপবৃত্তাকার, রোম ৩.৫-৪.০ সেমি লম্বা।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২০ = ২২ (Jash and Sharma, 1972)

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

রাস্তার পাশে ও বনাঞ্চল জুড়ে লম্বা গাছে জন্মে। বংশ বিস্তার বীজ দ্বারা। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল মার্চ-অক্টোবর।

আরো পড়ুন:  লাল চিটচিটা গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে জন্মানো একবর্ষজীবী বীরুৎ

বিস্তৃতি :

ভারত, ইন্দো-চীন, মায়ানমার, থাইল্যাণ্ড ও মালয়েশিয়া। বাংলাদেশে ইহা দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে অত্যন্ত সহজলভ্য।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ০৬ষ্ট খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) হয়া পরগাছা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে হয়া পরগাছা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এটি সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. এম আতিকুর রহমান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ০৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৬০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: C T Johansson

Leave a Comment

error: Content is protected !!