দেশি বনচালতা বাংলাদেশের অরন্যে জন্মানো গুল্ম

দেশি বনচালতা

বৈজ্ঞানিক নাম: Leea alata Edge., Trans. Linn. Soc. 20: 36 (1846). সমনাম: Leea rubra Royle (1835). ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: দেশি বনচালতা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Vitales. পরিবার: Passifloraceae. গণ: Leea , প্রজাতি: Leea alata.

ভূমিকা: দেশি বনচালতা (বৈজ্ঞানিক নাম: Leea alata) হচ্ছে বাংলাদেশের ভেষজ গুল্ম। এটি সমতলে জন্মায়। তবে বনাঞ্চলের পরিবেশ এদের জন্য উপযুক্ত।

দেশি বনচালতা-এর বর্ণনা :

দেশি বনচালতা ছোট গুল্ম, কিছুটা শক্ত। কাণ্ড ১.৭ মিটার পর্যন্ত লম্বা, মসৃণ কিন্তু উপরে উঠা বিন্দু দ্বারা আবৃত। পত্র সরলভাবে সচূড় পক্ষল, খাটো বৃন্তযুক্ত, পত্রবৃন্ত পক্ষযুক্ত, লালচে, পত্রক ৩০ থেকে ৩৫ × ৬.৫-৭.৫ সেমি, সাধারণত ৫টি, মাঝে মাঝে ৩টি, অবৃন্তক বা অতি খাটো অণুবৃত্ত যুক্ত, আয়তাকার বা আয়তাকার-বল্লমাকার, সচরাচর সূক্ষ্মাগ্র, তীক্ষ্ণ ও অসমভাবে করাত দন্তর, চর্মবৎ, উভয় পৃষ্ঠ সম্পূর্ণ মসৃণ, উজ্জ্বল, নিম্ন পৃষ্ঠ লালচে, পার্শ্ব শিরা মধ্যশিরার প্রত্যক পার্শ্বে ১০-১৪টি, শক্ত, প্রায় সোজা, অতি তির্যকভাবে অবস্থিত, প্রগৌণ শিরা অসংখ্য, সমান্তরাল ও অণুপ্রস্থ, গোড়া মোটামুটি গোলাকার।

পুষ্পমঞ্জরী করিম্বোজ বিশিষ্ট সাইম, রোমশ, লালচে, মঞ্জরীদণ্ড ৫-১৭ সেমি লম্বা, প্রায় শীর্ষীয়, খাঁজযুক্ত, পুষ্পবৃত্তিকা অতি খাটো। পুষ্প লাল, ক্ষুদ্র, অসংখ্য। পরাগধানী যুক্ত। ফল আড়াআড়িভাবে প্রায় ১ সেমি, লাল, পরিপক্ক অবস্থায় নীলাভ-রক্তবেগুনি, রসালো।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২০ = ২৪ (Kumar and Subramaniam, 1986)।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

অরণ্যে ও নিচু উচ্চতায় জন্মাতে পারে। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল জুলাই থেকে নভেম্বর মাস। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার হয়।

বিস্তৃতি: বাংলাদেশ ও ভারত এই গুল্মর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বাংলাদেশে ইহা মধুপুর বনে পাওয়া যায়।

ভেষজ ব্যবহার:

রাজ নিঘন্টু নামে প্রাচীন আয়ুর্বেদিক গ্রন্থ থেকে বনচালিতায় অনেক রোগ উপশমের উল্লেখ পাওয়া যায়। শিকড়ের রস কৃমিনাশক, আবার ব্রণ এবং চর্মরোগেও কার্যকর। তা ছাড়া মূলের রস কানের বধিরতা চিকিৎসায় ফলপ্রসূ।

আরো পড়ুন:  আলু ও শাক-এর নানাবিধ উপকারিতা

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৮ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) দেশি বনচালতা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থলের সঙ্কট আছে। বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত নয়। বাংলাদেশে দেশি বনচালতা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি এক্স-সিটু পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন । 

তথ্যসূত্র:

১. মোহাম্মদ ইউসুফ (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ৩৭৫-৭৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি Flora of Bangladesh থেকে নেওয়া হয়েছে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!