খাসিয়া জাম বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে জন্মানো বৃক্ষ

খাসিয়া জাম

বৈজ্ঞানিক নাম: Antidesma khasianum Hook. f., Fl. | Brit. Ind. 5: 362 (1887). স্থানীয় নাম: খাসিয়া জাম।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms.অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Malpighiales. পরিবার: Phyllanthaceae. গণ: Antidesma, প্রজাতি: Antidesma khasianum.

ভূমিকা: খাসিয়া জামম (বৈজ্ঞানিক নাম: Antidesma khasianum) হচ্ছে এশিয়ার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশের ভেষজ উদ্ভিদ। বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে এই গাছ জন্মে। ফল হিসাবে খাওয়া যায়।

খাসিয়া জাম-এর বর্ণনা:

গুল্ম বা ছোট বৃক্ষ, দেহকান্ড সরল রোমাবৃত, তরুণ বিপট স্বল্প অণুরোমশ, ছোটশাখা ধূসর সাদা। পত্র একান্তর, দ্বিসারী, ৫.৫-১৫.০ x ২.৫-৬.৫ সেমি।

পাতা দেখতে দীর্ঘায়ত উপবৃত্তাকার বা সরু ভল্লাকার, শীর্ষ দীর্ঘাগ্র, মুলীয় অংশ কীলকাকার বা সূক্ষ্মা, অখন্ড, গ্রন্থিযুক্ত, উপরের পৃষ্ঠ, গাঢ় সবুজ।

পাতার মধ্যশিরা ও শিরা স্বল্প রোমশ, পার্শ্বীয় শিরা প্রতি অর্ধাংশে ৬-১০টি, খাটো বৃন্তক, বৃন্ত ২-৭ মিমি লম্বা, উপপত্র রৈখিক-ভল্লাকার।

পুষ্পবিন্যাস অনিয়ত, পুংরেসিম সরু, অণুরোমশ, ৬ সেমি লম্বা, স্ত্রী মঞ্জরী অপেক্ষা অধিক দীর্ঘতর। পুষ্প ভিন্নবাসী, সবৃন্তক, সোপপত্রিক, প্রতিপুষ্পে মঞ্জরীপত্র ১টি।

পুংপুষ্প: বৃতি ৩-৪ খন্ডিত, পেয়ালাকৃতি, প্রান্ত-আচ্ছাদী, পাপড়ি অনুপস্থিত, পুংকেশর ২-৪টি, পুংদন্ড মুক্ত, পরাগধানী বহির্মুখী সর্বমুখ, যোজক স্ফীত, অনুদৈর্ঘ্য বিদারী।

স্ত্রীপুষ্প: বৃন্তক পুংপুষ্পের বৃত্যংশের অনুরূপ, পাপড়ি অনুপস্থিত, চাকতি বলয়াকার, গর্ভাশয় ১ কোমী, ডিম্বক ২টি, গর্ভদন্ড খাটো, গর্ভমুন্ড ২ খন্ডিত।

ফল ডপ, ৫-৭ X ৩-৪ মিমি, অর্ধবর্তুলাকার বা উপবৃত্তাকার। চাপা, অন্তস্তুক স্পষ্ট জালিকাকার। বীজ ক্যারাঙ্কল বিশিষ্ট, সস্য রসালো।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

চিরহরিৎ অরণ্য। ফুল ও ফল ধারণ কাল জুলাই থেকে নভেম্বর মাস। বীজে দ্বারা বংশ বিস্তার। বিস্তৃতি: ভারত ও বাংলাদেশের সিলেট জেলা থেকে রিপোর্টকৃত।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: খাসিয়া জাম ফল হিসাবে খাওয়া হয়। কাষ্ঠ জ্বালানিরূপে ব্যবহার করা হয় ।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) খাসিয়া জাম প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের জন্য এই প্রজাতিটি বাংলাদেশে সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত।

আরো পড়ুন:  পুষ্কর মূল গুল্মের সাতটি ভেষজ গুণাগুণ

বাংলাদেশে খাসিয়া জাম সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির ব্যাপক অনুসন্ধানের মাধ্যমে অবস্থান নির্ধারণ করে যথাস্থানে সংরক্ষণ প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. এম অলিউর রহমান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৭ম, পৃষ্ঠা ৩৯৬-৩৯৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

2 thoughts on “খাসিয়া জাম বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে জন্মানো বৃক্ষ”

Leave a Comment

error: Content is protected !!