হিমালয়ান বনচালতা দক্ষিণ এশিয়ার ভেষজ গুল্ম

হিমালয়ান বনচালতা

বৈজ্ঞানিক নাম: Leea robusta Roxb., Fl. Ind. 1: 655 (1814). সমনাম: Leea aspera Wall. ex Roxb. (1832), Leea compactiflora Kurz (1873). ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: হিমালয়ান বনচালতা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Vitales. পরিবার: Passifloraceae. গণ: Leea , প্রজাতি: Leea robusta.

ভূমিকা: হিমালয়ান বনচালতা (বৈজ্ঞানিক নাম: Leea robusta) হচ্ছে বাংলাদেশের ভেষজ গুল্ম। এটি সমতলে জন্মায়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশে পাওয়া যায়। তবে বনাঞ্চলের পরিবেশ এদের জন্য উপযুক্ত।

হিমালয়ান বনচালতা-এর বর্ণনা:

বৃহৎ স্থূলকায় গুল্ম, ৩ মিটার পর্যন্ত উঁচু। কাণ্ড শক্ত, বয়স্ক অংশগুলো মসৃণ, তরুণ শাখা তামাটে রোমশ। পত্র ২ থেকে ৩-পক্ষল, পত্রাক্ষ ও পত্রবৃন্ত কোণাকৃতি, পক্ষযুক্ত নয়, তামাটে রোমশ, পত্রক ৭.৫-২৩.০ × ২.৫-৯.৫ সেমি, শীর্ষীয় পত্রক পার্শ্বীয় পত্রক অপেক্ষা অধিক বৃহত্তর, আয়তাকার বা উপবৃত্তাকার-আয়তাকার, দীর্ঘাগ্র, গোড়া সূক্ষ্মাগ্র (শীর্ষীয় পত্রকের), গোলাকার (পার্শ্বীয় পত্রকে), অসমভাবে করাত দন্তর, উপরের পৃষ্ঠ পাতলাভাবে তীক্ষ্ণ বাঁকা ট্রাইকোম দ্বারা আবৃত, রোমশ এবং নিম্নপৃষ্ঠের শিরায় পাতলাভাবে তীক্ষ্ণ, বাঁকা ট্রাইকোম বিদ্যমান, প্রধান শিরা ৮-১২ জোড়া, ঊর্ধ্বগ, শীর্ষীয় পত্রকের অণুবৃন্ত প্রায়শই ৫ সেমি, পার্শ্বীয় পত্রকের গুলো ৩-১৩ মিমি লম্বা।

পুষ্প সবুজাভ সাদা, লম্বা মঞ্জরীদণ্ড বিশিষ্ট অধিক শাখাযুক্ত যৌগিক সাইমে সজ্জিত, মঞ্জরীদণ্ড ও পুষ্পমঞ্জরীর শাখা তামাটে অতিরোমশ, মঞ্জরীপত্র শীঘ্রমোচী। বৃতি নিচের দিকে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ বিভক্ত। পুংকেশরীয় নলের খণ্ড গোলাকার বা কর্তিতাগ্র, শীর্ষে দ্বিখণ্ডিত নয়, পরাগধানী মুকুলে আংশিক যুক্ত। বেরী আড়াআড়িভাবে ৬ মিমি, চাপা-বর্তুলাকার, পরিপক্ক অবস্থায় রক্তবেগুনি-কালো, পাইরেন ৪-৬টি।

ক্রোমোসোম সংখ্যা : ২০ = ২৪ (Kumar and Subramaniam, 1986) ।

আবাসস্থল:

অরণ্যে জন্মায়। বীজ থেকে নতুন চারা জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল জুলাই-ডিসেম্বর।

বিস্তৃতি:

ভারত, নেপাল, নেপাল, থাইল্যান্ড ও মালয় দ্বীপপুঞ্জ। বাংলাদেশে এই উদ্ভিদটি চট্টগ্রাম জেলা ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন:  ফলসা গাছের দশটি ভেষজ গুণাগুণ ও উপকারিতা

ব্যবহার:

নরম ও রসালো মূল বেদনা উপশমকারী হিসেবে বহিঃস্থভাবে প্রয়োগ করা হয় এবং গরুর ডায়রিয়ার চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়।

হিমালয়ান বনচালতা-এর অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৮ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) হিমালয়ান বনচালতা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে হিমালয়ান বনচালতা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। 

তথ্যসূত্র:

১. মোহাম্মদ ইউসুফ (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ৩৭৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Prashant Awale

Leave a Comment

error: Content is protected !!