সিতারা বা ডুগডুগি কারুশিল্পে ব্যবহৃত বৃক্ষ

বৃক্ষ

সিতারা বা ডুগডুগি

বৈজ্ঞানিক নাম: Crescentia cujete L. সমনাম: Crescentia ol’ata Burm. f. (1768). ইংরেজি নাম: Calabash Tree, Gourd Tree. স্থানীয় নাম: পাগলা বেল, সিতারা ফল, ডুগডুগি গাছ, তানপুরা গাছ।

বর্ণনা: সিতারা বা ডুগডুগি খাটো অসরল বৃক্ষ, ৮ মিটার পর্যন্ত উঁচু, তরুণ কান্ড মসৃণ, অর্ধগোলাকার, ধূসর বর্ণযুক্ত। পত্র সরল, গুচ্ছাকারে ছড়ানো, অবৃন্তক, সরু বিডিম্বাকার থেকে বিডিম্বাকার দীর্ঘায়ত, প্রায় ২৮.০ x ৭.৫ সেমি, অখন্ড মূলীয় অংশ ক্রমাগত সরু, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র। পুষ্প কান্ড থেকে উত্থিত, একল বা জোড়ায় বিন্যস্ত, উগ্র গন্ধযুক্ত। বৃতি মূলীয় অংশে দ্বিখন্ডিত, ৫ টি দন্ত বিশিষ্ট।

দলমন্ডল ৪-৭ সেমি লম্বা, নলাকার ৫-খন্ডিত, মলিন সাদা বা ক্ষীণ সবুজ, শিরা লাল। পুংকেশর ৪ টি, দীর্ঘদ্বয়ী। গর্ভাশয় ১ কোষী, ডিম্বক গাত্রীয়,সংখ্যায় অনেক। ফল গোলাকার থেকে উপবৃত্তাকার, প্রায় ২০ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট, অবিদারী, বহিস্ত্বক শক্ত, মসৃণ। ক্রোমোজোম সংখ্যা: 2n = ৪০ (Kumar and Subramaniam, 1986).

চাষাবাদ ও বংশ বিস্তার: সিতারা বা ডুগডুগি গাছটি উদ্যান লাগানো হয়। এদের ফুল ও ফল ধারণ মার্চ থেকে নভেম্বর মাসে ধরে। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার করা হয়।

বিস্তৃতি: আদি নিবাস মধ্য আমেরিকা, আমেরিকা ও অন্যান্য উষ্ণ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। বাংলাদেশের উদ্যানে চাষাবাদ হয়।

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্বের দিক: বাহারি উদ্ভিদরূপে সমাদৃত। শক্ত খোলক পেয়ালারূপে, পাত্র এবং ভাস্কর্যরূপে ব্যবহার করা হয়।

জাতিতাত্ত্বিক ব্যবহার: বাংলাদেশের টিপ্রা আদিবাসীরা ফলের মন্ড মস্তিষ্ক বিকৃতি চিকিৎসায় মাথায় প্রলেপ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে  (আগস্ট ২০১০)  সিতারা বা ডুগডুগি প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে সিতারা বা ডুগডুগি সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটিকে বাহারি উদ্ভিদরূপে চাষাবাদ করে গ্রাম গঞ্জের ঘন ঝোপ-ঝাড় পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।।   

আরো পড়ুন:  দেশি কার্পাস এশিয়ায় জন্মানো বর্ষজীবী বৃক্ষ

তথ্যসূত্র:

১. হাসান, এম এ (আগস্ট ২০০৯)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”।  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৫—১৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!