লতামহুরী বা নানভান্তুর বাংলাদেশে জন্মানো ভেষজ গুল্ম

গুল্ম

লতামহুরী বা নানভান্তুর

বৈজ্ঞানিক নাম: Croton caudatus Geisel., Croton Monogl.: 73 (1807). সমনাম: Croton drupaceus Roxb. (1832), Croton caudatus Geisel. var. malaccanus Hook. f. (1887). ইংরেজি নাম: Climbing Croton। স্থানীয় নাম: লতামহুরী, মুহুরীলতা, নানভান্তুর, নানভাই, সবারজলা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Malpighiales পরিবার:  Euphorbiaceae. গণ: Croton. প্রজাতি: Croton caudatus.

ভূমিকা: লতামহুরী বা নানভান্তুর (বৈজ্ঞানিক নাম: Croton caudatus) বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলাতে জন্মে। এছাড়াও ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে।

লতামহুরী বা নানভান্তুর-এর বর্ণনা:

আরোহী গুল্ম, শাখা সরু বা শক্ত, অমসৃণ, বৃহৎ ও ক্ষুদ্র তারকা রোমশ যুক্ত। পত্র একান্তর থেকে অর্ধপ্রতিমুখ, বৃন্ত ০.৬-২.৫ সেমি লম্বা, ঘন তারকাকার রোমশ;

পত্র ফলক সরু থেকে প্রশস্ত ডিম্বাকার, ৫-৯ X ২-৬ সেমি, সূক্ষ্মাগ্র বা স্থূলাগ্র, দন্তর, উভয় পৃষ্ঠ রোমশ, মূলীয় অংশ থেকে ৩-৬টি শিরা উখিত, গ্রন্থি মূলীয় অংশে উপস্থিত। পুষ্প বিন্যাস ১২-২০ সেমি লম্বা, ঘন রোমশ, স্ত্রীপুষ্প নিচের দিকে সন্নিবিষ্ট।

পুংপুষ্প: বৃন্ত ৩-৮ মিমি লম্বা, সরু, ঘন তারকাকার রোমাবৃত, বৃত্যংশ ৩.০ x ১.৩ মিমি, ভল্লাকার, সূক্ষ্ণাগ্র, পাপড়ি বৃত্যংশ অপেক্ষা সামান্য ক্ষুদ্রতর, পুংকেশর ১৫-২০টি।

স্ত্রী পুষ্প: বৃতি ১.৫-২.০ মিমি লম্বা, শক্ত, ঘন রোমশ, পাপড়ি আপাতদৃষ্টিতে অনুপস্থিত, গর্ভাশয় অর্ধগোলাকার, ১.৫ মিমি ব্যাস বিশিষ্ট, হলুদ রোমশ, গর্ভদন্ড ৪-৫ মিমি লম্বা, উপরের অংশ খন্ডিত।

ফল ক্যাপসিউল, ২.৫ x ২.০ সেমি, গোলাকার, ৩-৬ কোণাকার। বীজ তারকাকার রোমশ। ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২০ (Mehra and Hans, 1969).

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

জলাশয়ের তীরবর্তী অঞ্চল, অরণ্যের কিনারা। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল এপ্রিল থেকে অক্টোবর। বীজে বংশ বিস্তার হয়।

লতামহুরী বা নানভান্তুর-এর বিস্তৃতি:

কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। বাংলাদেশে এটি ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও সিলেট জেলায় জন্মে।

আরো পড়ুন:  নীল উষ্ণমণ্ডলীয় এশিয়া ও আফ্রিকার গুল্ম

ভেষজ গুণ:

হাত পা মচকে গেলে এই উদ্ভিদের পাতা ব্যথার স্থানে পুলটিস বেধে দেওয়া হয়। জাতিতাত্বিক ব্যবহার: যকৃৎ সংক্রান্ত রোগ উপসমের জন্য এর পত্রচূর্ণ Caesalpinia sappain এর পত্র মুকুলের সাথে একত্র করে ব্যবহার করা হয় (Caius, 1998)।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) লতামহুরী প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে লতামহুরী সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির চাষাবাদ প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. এম অলিউর রহমান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪২১ আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: A. J. T. Johnsingh, WWF-India and NCF

Leave a Comment

error: Content is protected !!