কুরকুর জিউয়া ভেষজ গুণসম্পন্ন গুল্ম

কুরকুর জিউয়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Leea indica Merr., Philipp. Journ. Sci. Bot. 14: 245 (1914). সমনাম: Staphyles indica Burm. f. (1768), Aquilicia sambucina L. (1771), Leea sambucina Willd. (1797). ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: কুরকুর জিউয়া।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Vitales. পরিবার: Passifloraceae. গণ: Leea , প্রজাতি: Leea indica.

ভূমিকা: কুরকুর জিউয়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Leea indica) হচ্ছে বাংলাদেশের ভেষজ গুল্ম। এটি সমতলে জন্মায়। তবে বনাঞ্চলের পরিবেশ এদের জন্য উপযুক্ত।

কুরকুর জিউয়া-এর বর্ণনা:

গুল্ম, ১.২-৩.০ মিটার উঁচু, শাখা অনেক, সোজা, রুক্ষ, তরুণ শাখা সবুজ, মসৃণ। পত্র ৩৮-৫০ সেমি লম্বা, ২-(কদাচিৎ ৩-)টি পক্ষল, পত্রাক্ষ শক্ত, মসৃণ, পত্রক ৭.৫- ২০.০ × ৩.৮-৯.০ সেমি, আয়তাকার অথবা উপবৃত্তাকার- আয়তাকার, দীর্ঘাগ্র, মোটা ও অসমভাবে করাত দস্তুর, মসৃণ, চর্মবৎ, গোড়া সূক্ষ্মাগ্র বা কীলকাকার, প্রধান শিরা ৭- ১২ জোড়া, নিচে সুস্পষ্ট, ধনুকের ন্যায় বক্র, পার্শ্বীয় পত্রকের অণুবৃন্ত ৬-১০ মিমি লম্বা, প্রান্তীয় পত্রকের অণুবৃন্ত অধিকতর লম্বা।

পুষ্প সবুজাভ-সাদা, বৃহৎ শাখাযুক্ত উপশীর্ষীয় করিম্বোজ জাতীয় সাইমে বিন্যস্ত, মঞ্জরীদণ্ড ৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা, মঞ্জরীপত্র অস্পষ্ট, শীঘ্রমোচী। বৃতি সামান্য বিভক্ত, খণ্ড অর্ধ-সূক্ষ্মাগ্র বা গোলাকার এবং ঝিল্লিময় কিনারাযুক্ত। পাপড়ি বল্লমাকার-আয়তাকার, ছড়ানো, পুংকেশরীয় নলের খণ্ড শীর্ষে গোলাকার, খাঁজযুক্ত, পরাগধানী পাদদেশে যুক্ত। বেরী ৬-৮ মিমি চওড়া, চাপা- বর্তুলাকার, প্রায়শই ২ থেকে ৬-খণ্ডিত, মসৃণ, উজ্জ্বল, রক্তবেগুনি-কালো।

ক্রোমোসোম সংখ্যা : ২০ = ২৪ (Kumar and Subramaniam, 1986) ।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

চিরহরিৎ অরণ্য। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল জুলাই থেকে জানুয়ারি মাস। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা।

বিস্তৃতি:

ভারত, শ্রীলংকা, মালয় দ্বীপপুঞ্জ, ইন্দো-চীন এবং ফিলিপাইন। বাংলাদেশে ইহা চট্টগ্রাম জেলা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের চিরহরিৎ অরণ্যে পাওয়া যায়।

কুরকুর জিউয়া-এর ব্যবহার:

মূল ঘর্ম উদ্রেককারী এবং ডায়রিয়া ও আমাশয়ের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। মূলের ক্বাথ শীতলকারক, তৃষ্ণা নিবারণ করে এবং তলপেটের সংকোচন জনিত ব্যথায় প্রয়োগ করা হয়। মাথা ঝিমানীর ক্ষেত্রে আগুনে জ্বলসানো পাতা মাথায় প্রয়োগ করা হয়। কচি পাতার রস হজমকারক।

আরো পড়ুন:  তেঁতুলে কড়ই বাংলাদেশের বনাঞ্চলে জন্মানো ভেষজ গুল্ম

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৮ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) কুরকুর জিউয়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে কুরকুর জিউয়া সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। 

তথ্যসূত্র:

১. মোহাম্মদ ইউসুফ (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ৩৭৬-৭৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: M. Sawmliana

Leave a Comment

error: Content is protected !!