ঢোল সমুদ্র বাংলাদেশে জন্মানো বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ

ঢোল সমুদ্র

বৈজ্ঞানিক নাম: Leea macrophylla Roxb. ex Hornem., Hort. Hafn. 1: 231 (1813). সমনাম: Leea integrifolia, Leea latifolia.  ইংরেজি নাম: Large-Leaf Leea, Leea. স্থানীয় নাম: ঢোল সমুদ্র।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Vitales. পরিবার: Passifloraceae. গণ: Leea , প্রজাতি: Leea macrophylla.

ভূমিকা: ঢোল সমুদ্র (বৈজ্ঞানিক নাম: Leea macrophylla) হচ্ছে বাংলাদেশের ভেষজ গুল্ম। এটি সমতলে জন্মায়। তবে বনাঞ্চলের পরিবেশ এদের জন্য উপযুক্ত।

ঢোল সমুদ্র-এর বর্ণনা:

বীরুৎ জাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ, লম্বা, সরু ও নমনীয় বর্ষজীবী বিটপযুক্ত, ৯০-১৫০ সেমি উঁচু। কাণ্ড দন্তর বা অর্ধ-খণ্ডিত, প্রস্থ প্রায় দৈর্ঘ্যের সমান, নিচের পত্র ৬০ সেমি পর্যন্ত লম্বা, উপরের গুলো ১৫-২৩ সেমি লম্বা, উপরের পৃষ্ঠ গাঢ় সবুজ ও মসৃণ, নিম্নপৃষ্ঠ তামাটে রোমশ, প্রধান শিরা প্রতিমুখ, ৮-১০ জোড়া, অতি সুস্পষ্ট, প্রায় সোজা, প্রতিটি ১-৬ টি শাখায় নিঃসৃত হয়ে কিনারায় দন্তকে পরিণত, পত্রবৃন্ত ৫.০-১২.৫ সেমি লম্বা, শক্ত, মসৃণ, নিচের অর্ধেক অংশ থেকে খাঁজকাটা, বৃহৎ যুক্ত উপপত্রযুক্ত।

পুষ্প মিশ্রবাসী, সাদা, ক্ষুদ্র, শীর্ষীয় অধিক শাখাবিশিষ্ট অণুরোমশ করিম্ব জাতীয় সাইমে সজ্জিত, প্রায়শই ৩০ সেমি লম্বা, মুকুল – আয়তাকার, মঞ্জরীদণ্ড গভীর খাঁজযুক্ত, পুষ্পবৃত্তিকা খাটো। বৃতি নিচের দিকের প্রায় এক তৃতীয়াংশক বিভক্ত, খণ্ড ত্রিকোণাকার-ডিম্বাকার, ক্ষুদ্র শক্ত কিন্তু অগ্রভাবে সংযোজিত। পাপড়ি আয়তাকার। পুংকেশরীয় নল গভীরভাবে বিভক্ত। ২ খণ্ড আয়তাকার, অখণ্ড বা খাতাগ্র, পরাগধানী পার্শ্বীয়ভাবে এ মুকুলের সাথে যুক্ত। ফল বেরী, ৬-৮ সেমি চওড়া, কালো, ৩-৬ কোষবিশিষ্ট, চাপা-গোলকাকার, সাধারণত ৩ থেকে ৬-খণ্ডিত।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২০ = ২৪ (Kumar and Subramaniam, 1986)

আবাসস্থল: অরণ্য তলদেশে জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল জুলাই ফেব্রুয়ারি। বংশ বিস্তার বীজ দ্বারা।

বিস্তৃতি :

ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও লাওস। বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি চট্টগ্রাম জেলা, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও দেশের উত্তরাঞ্চলে পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন:  সফেদমুসলি বা মহাশতাবরী- এর পাঁচটি ভেষজ গুণাগুণ

ঢোল সমুদ্র-এর ব্যবহার:

মূল উত্তম এলেক্সিফারমিক (আয়ুর্বেদীয়)। কন্দাকৃতি মূল গুইনিয়া কৃমি উপশমে প্রয়োগ করা হয়। মূল সংকোচক এবং দাদ রোগের চিকিৎসায় পরীক্ষিত প্রতিষেধক।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৮ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ঢোল সমুদ্র প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে ঢোল সমুদ্র সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। 

তথ্যসূত্র:

১. মোহাম্মদ ইউসুফ (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ৩৭৭-৭৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!