চাউলি নদী বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী

চাউলি নদী বা চাউলী নদী (ইংরেজি: Chauli River) বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর উপজেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার সদর মহকুমার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫ কিলোমিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। নদীটিতে জোয়ার ভাঁটার প্রভাব থাকে না। চাউলী নদী মূলত চাওয়াই নদীর উপনদী যা চাওয়াই নদীর বাম তীরে এসে মিলিত হয়েছে।

প্রবাহ: চাউলী নদীটি জলপাইগুড়ি জেলার সদর মহকুমার রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিম্নভূমি থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। উৎপত্তিস্থল থেকে নদীটি কিছুদূর অগ্রসর হয়ে ভারতের জাতীয় মহাসড়ক ২৭ অতিক্রম করেছে। অতঃপর নদীটি পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সীমানা নির্ধারণ করে কিছুদূর অগ্রসর হয়ে সাতমেরা ইউনিয়নের 26°23’15.6″ উত্তর 88°32’18.1″ পূর্ব অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশে চাওয়াই নদীতে পতিত হয়েছে।

চাউলী নদীতে সারা বছর পানি প্রবাহ থাকে, তবে বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। বর্ষায় নদীতে স্রোতধারা বৃদ্ধি পেলেও তীরবর্তী এলাকা যেমন বন্যাকবলিত হয় না, তেমনি ভাঙনের আলামত পরিদৃষ্ট হয় না। শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ মারাত্মক কমে যায়। পলির প্রবাহে এ নদীর তলদেশ ক্রমশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং প্রবাহের মাত্রাও অতীতের তুলনায় দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।

এই নদীর তীরে বাংলাদেশ ও ভারতে অনেকগুলো চা বাগান অবস্থিত। এছাড়াও জগদল বাজার, জগদল উচ্চ বিদ্যালয়, জগদল কলেজ এই নদীর তীরে অবস্থিত। এই নদী অববাহিকায় সেচের জন্য কোনো জল সংরক্ষণ করা হয় না। এই নদীতে কোনো রেগুলেটর নেই বা কোনো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নেই। নদীর উপর জাতীয় মহাসড়ক ৫-এর জন্য ১টি ব্রিজ এবং পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় মহাসড়ক ২৭-এর জন্য ২টি ব্রিজ ছাড়াও অনেকগুলো ব্রিজ আছে।

আলোকচিত্রের ইতিহাস: কুকুরজান অঞ্চলের গুগল আর্থের চাউলি নদীর প্রবাহপথের এই স্ক্রিনশটটি গ্রহণ করেছেন অনুপ সাদি ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে।

তথ্যসূত্র

১. হানিফ শেখ, ড. মো. আবু (ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। “উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নদ-নদী”। বাংলাদেশের নদ-নদী ও নদী তীরবর্তী জনপদ (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: অবসর প্রকাশনা সংস্থা। পৃষ্ঠা ৫১। আইএসবিএন 978-9848797518।

আরো পড়ুন:  তালমা নদী বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী

Leave a Comment

error: Content is protected !!