বাদামী কন্দল ঢেকিয়া দক্ষিণ এশিয়ার শোভাবর্ধনকারী প্রজাতি

ফার্ন

বাদামী কন্দল ঢেকিয়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Cheilanthes belangeri (Bory) C. Chr., Ind. Fil.: 172 (1905). সমনাম: Pteris belangiri Bory (1893). ইংরেজি নাম: সিলভার ফার্ন। স্থানীয় নাম: বাদামী কন্দল ঢেকিয়া, সাদা ঢেকিয়া, রূপালী ঢেকিয়া।
জীববৈজ্ঞানিকশ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Polypodiophyta. বর্গ: Polypodiales. পরিবার: Pteridaceae. গণ: Cheilanthes. প্রজাতি: Cheilanthes belangeri.

ভূমিকা: বাদামী কন্দাল ঢেকিয়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Cheilanthes belangeri) পাহাড়ী ছায়াযুক্ত স্থানে জন্মে। অনেকে শোভাবর্ধনের জন্য টবে লাগিয়ে থাকে।

বাদামী কন্দল ঢেকিয়া বর্ণনা:

গ্রন্থিক খাটো, খাড়া, এক গুচ্ছ পাতা বহণকারী, শুল্ক সরু, গাঢ় বাদামী, অখন্ড। পত্রদন্ড প্রায় ১০-১৫ সেমি লম্বা, গাঢ় বেগুনি, গোড়ার কাছে শল্কযুক্ত, অক্ষাভিমুখ পুষ্ঠে খাঁজযুক্ত, তরুণ অবস্থায় কমবেশী রোমযুক্ত, মসৃণ, পত্রকঅক্ষ পাদন্ডের মতো।

পাতা ১০-২০ সেমি লম্বা, এবং ৪-৬ সেমি চওড়া উপরের অংশে দ্বি-পক্ষৰ খন্ডিত, নিচের অর্ধাংশে দ্বি-পক্ষল পত্রক বেশ ফাঁকা ফাঁকা, একের অন্যের সাথে স্পর্শবিহীন, শীর্ষ হতে নিচের দিকে ক্রমাগত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত, উপরের পত্রক অবৃন্তক, সরু ত্রিকোণাকার, কমবেশী অধিক খন্ডিত, গোড়ার নিম্নমুখী খন্ড সবচাইতে বড়, উর্বর পাতায় খন্ডগুলি সরু, অনুর্বর পাতায় চওড়া গোলাকার।

নিচের পত্রক প্রায় ৩.৫ সেমি লম্বা, ছোট বৃন্ত যুক্ত, পক্ষল, কেবল গোড়ার পক্ষকগুলি মুক্ত, অন্যান্যগুলি লগ্ন এবং পত্রকের খন্ডিত ত্রিকোণাকার শীর্যের সাথে মিলিত; গোড়ার নিম্নমুখী পত্রক অনেক বর্ধিত (১.৫ সেমি লম্বা) এবং নিচের পৃষ্ঠের মতো খন্ডিত, অত্যন্ত বাকা এবং অধিকতর বড় পক্ষকের খন্ডে অনেকবার দ্বি-বিভক্ত।

সোরাসগুলি খন্ডের ধারে অথবা পক্ষকে অবস্থিত, কমবেশী বিছিন্ন, তরুণ অবস্থায় চওড়া, পাতলা এবং পত্রফলকের। সামান্য কুঞ্চিত প্রান্ত দ্বারা আবৃত, রেণুস্থলীগুলি শিরার শীর্ষ হতে অনিয়মিত পরিবহণ সংযোগস্থল বরাবর পার্শ্বীয় দিকে বিস্তৃত (Holttum, 1954)।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

ছায়াযুক্ত পাহাড়ের ঢালে জন্মে। স্যাঁতস্যাঁতে স্থান এই প্রজাতির জন্য উপযুক্ত। গ্রন্থিক এবং রেণু দ্বারা বংশ বিস্তার করে।

আরো পড়ুন:  রাধাচূড়া বা লাল-রাধাচূড়া চাষযোগ্য আলংকারিক ও ঔষধি উদ্ভিদ

বিস্তৃতি:

ভারত, দক্ষিণ চীন, মায়ানমার, মালয়েশিয়া এবং ফিলিপাইন। বাংলাদেশে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা এবং ময়মনসিংহ জেলা থেকে এই প্রজাতি সংগ্রহ করা হয়েছে। (Mirza and Rahman, 1997)

গুরুত্ব:

এই প্রজাতি শাক হিসাবে খাওয়া যায় কিনা তা জানা যায় নি। তবে অনেকেই শোভাবর্ধনের জন্য টবে লাগিয়ে সৌন্দর্যবর্ধন করে।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৫ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) বাদামী কন্দাল ঢেকিয়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে বাংলাদেশে এটি হুমকির সম্মুখীন হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে বাদামী কন্দাল ঢেকিয়া সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি।

তথ্যসূত্র:

১. মমতাজ মহল মিজা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৫ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৬৪-২৬৫। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি http://plantillustrations.org/ থেকে নেওয়া হয়েছে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!