শ্বেতদ্রোণ এশিয়ার ঔষধি শাক

শ্বেতদ্রোণ

বৈজ্ঞানিক নাম: Leucas aspera সমনাম: Leucas indica বাংলা নাম: শ্বেতদ্রোণ, শ্বেতাদ্রোণ, দলকলস, দণ্ডকলস, ছোট হালকুশা, দুলফি, ডোরপি, দ্রাণা, ঘলঘসিয়া। ইংরেজি নাম: আদিবাসি নাম: দেম-গোলা (চাকমা), আরুয়াক (গারো), ডুরপি (মুণ্ডা), ডংক্লাই বা দমকলস (হাজং)।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae – Plants উপরাজ্য: Tracheobionta – Vascular plants অধিবিভাগ: Spermatophyta – Seed plants বিভাগ: Magnoliophyta – Flowering plants শ্রেণী: Magnoliopsida – Dicotyledons উপশ্রেণি: Asteridae বর্গ: Lamiales পরিবার: Lamiaceae – Mint family উপপরিবার: গণ: Leucas R. Br. – leucas প্রজাতি: Leucas aspera (Willd.) Link.

পরিচিতি: শ্বেতদ্রোণ বিরুত জাতীয় সপুষ্পক উদ্ভিদ। এটি Lamiaceae পরিবারের লিউকাস গণের একটি উদ্ভিদ। এদের কচি পাতা ও কাণ্ড শাক হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়।  বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই শাকের বিভিন্ন নাম আছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে এমনিতেই জন্মানো এই শাক চাষ করার কোনো ঘটনা জানা যায় না।

আরো পড়ুন দ্রোণের ঔষধি গুণাগুণ

বিবরণ: শ্বেতদ্রোণ বা দণ্ডকলস মাটি থেকে সাধারণত একহাত পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। সাধারণত এই গাছের পাতা গাঢ় সবুজ রঙের এবং কান্ড হালকা সবুজ রঙের হয়ে থাকে। সাধারণত পরিপক্ক গাছে ধবধবে সাদা রঙের ফুল হয়ে থাকে এবং ফুলের মধু মিষ্টি হয়ে থাকে। সারা বছরই ফুল ফোটে। ফুলে পিপড়া ও মৌমাছিরা ভিড় করে। ফুল ছোট আকৃতির। এদের ফুলের গন্ধ তেমন একটা পাওয়া যায় না। ফুল থেকে সবুজ রঙের ফল হয় এবং এই ফল পাকলে ফলের ভেতরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কালো রঙের বীজ হয়ে থাকে। বীজের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটে। প্রচুর বীজ হয়।

বিস্তৃতি: এদেরকে সাধারণত ভারত ও ফিলিপাইনের পাশাপাশি মরিশাস ও জাভার সমভূমির মধ্যে পাওয়া যায়। ভারত ও ফিলিপাইন ও বাংলাদেশে এটি খুবই সাধারণ আগাছা। সারাদেশেই, বিশেষভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন সমতল এলাকার গ্রামে পাওয়া যায়। সাধারণত রবিশস্যের খেতে, প্রধানত সরিষা এবং গমক্ষেতে এই উদ্ভিদ বেশি জন্মে। এছাড়াও বাড়ির আশেপাশে, রাস্তার ধারেও এই উদ্ভিদ দেখা যায়। যেখানে জন্মে সেখানেই বিস্তৃতি দেখা যায়। শীতের শুরুতে সারাদেশে প্রচুর জন্মায়, চাষ করা লাগে না। সাধারণত বাংলা ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে কচি চারা গাছ পাওয়া যায় না। ফসলের ক্ষেতে আগাছা হিসেবে গণ্য। বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়।

আরো পড়ুন:  সরিষা ভেষজ গুণ সম্পন্ন এশিয়ায় জন্মানো শস্যকণা

রান্না পদ্ধতি: গাছের উপরের দিকের পাতা, আগার দিকের কচি কান্ড পাতাসহ তোলা হয়। শাক তোলার পর তাজা শাক পানি দিয়ে ভালোমতো ধুয়ে নিতে হবে। এই শাক অন্যান্য শাকের মত তেল, মরিচ, পেয়াজ, লবণ দিয়ে ভেজে খাওয়া হয়। এলাকা ভেদে রান্নায় হলুদ-মরিচ বা অন্য মশলা স্বাদ মতো মেশানো যেতে পারে। গর্ভবতী মা ও শিশুদের খিচুরি ও জাও ভাতের সাথে সিদ্ধ দিয়েও এই শাক খাওয়ানো হয়।

ঔষধি গুনাগুণ: শ্বেত দ্রোণ ভেষজ গুণসম্পন্ন। এর পাতা বাত রোগের ওষুধ ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসী ক্ষমতা সম্পন্ন। পাতার রস সরিয়াসিস, স্কেবিস ও চর্ম রোগের চিকিৎসাতে ব্যবহৃত হয়।

Leave a Comment

error: Content is protected !!