বাংলাদেশের অর্থনীতি (ইংরেজি: Economy of Bangladesh) হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ দ্বারা নিপীড়িত কৃষিনির্ভর মিশ্র মুক্তবাজারী অর্থনীতি। এই দেশের অর্থনীতি খুব মজবুত নয়, তকমা দেয়া নাম হচ্ছে উন্নয়নশীল অর্থনীতি। বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশই কৃষিজীবী ছিল ১৯৮০ সালের দিকে, এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাব অনুসারে ২০১৯ সালে এটি ৪৯ শতাংশ। বাংলাদেশে ধান ও পাট জন্মে এবং তার মৎস্যশিল্প যথেষ্ট উন্নত। এদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম পাট উৎপাদক। তদুপরি এখানে চা, তামাক, শাকসবজি এবং ফল-ফলাদিও জন্মে। পাটকল এবং কাপড়ের ও চিনির কারখানা থাকা সত্ত্বেও মোটের উপর দেশের দুর্বল অর্থনীতিতে কুটিরশিল্পের প্রাধান্য অব্যাহত।[১]
বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিহাস
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমরা লক্ষ্য করি যে বাংলার অর্থনীতি আঠারাে শতকের প্রথমার্ধে ছিল বেশ সচ্ছল। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প এবং কৃষিক্ষেত্রে তখন বাংলাদেশ যথেষ্ট সমৃদ্ধি অর্জন করেছিল বলে মনে হয়। কিন্তু সে উঠতি অর্থনীতি অধােগতি লাভ করে পলাশীর পর থেকে। পলাশীর পূর্বে বাংলাদেশ ছিল একটি বিরাট রপ্তানিকারক দেশ। এ দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে যােগদান করেছে বৃটেনসহ পশ্চিম ইউরােপের প্রায় সকল নৌ-বাণিজ্যের দেশ। কিন্তু ইংরেজ ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলার অর্থনীতিতে বিপর্যয় দেখা দেয়। ইংরেজদের অত্যাচার ও লুণ্ঠন নীতির ফলে অর্থনীতি এমন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে যে ১৭৬৮ সনের পর ঘন ঘন দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ক্রমাগত দুর্ভিক্ষের ফলে দেশের লােকসংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে, লােকশক্তির অভাবে কৃষিক্ষেত্র জঙ্গলে পরিণত হয়। ১৮২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বিশ্ববাজার থেকে বিদায় নেয় এবং আমদানিকারক দেশ হিসেবে বৃটিশ সাম্রাজ্য-অর্থনীতির লেজুড়ে পরিণত হয়।[২]
বাংলাদেশ কৃষির উপর অধিক নির্ভরশীল একটি দেশ, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ খামারীদের মধ্যে মৌসুমী বেকারত্বের পাশাপাশি অনেক অঞ্চলে সাধারণত মানুষের নিম্নমানের জীবনযাত্রা অব্যাহত আছে। এই ভারসাম্যহীনতা দূর করার জন্য, বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে শিল্পায়নের একটি নীতি গৃহীত হয়েছিল। পাকিস্তান প্রশাসনের ১৯৪৭-৭১ সময়কালে পাট, তুলা, গরুর চামড়া এবং অন্যান্য চামড়াজাত দেশীয় কাঁচামালগুলির উপর ভিত্তি করে শিল্পখাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। বেসরকারী খাতে স্বাধীন উদ্যোক্তার নীতিটি কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে গৃহীত হয়েছিল। আমদানির উপর নির্ভরতা এড়াতে শিল্প নীতিটি যত দ্রুত সম্ভব ভোক্তা পণ্যগুলির উৎপাদন বিকাশের উদ্দেশ্যে নেয়া হয়েছিল।[৩]
১৯৭১ সালের পরে বাংলাদেশে মিশ্র অর্থনীতি গ্রহণ করা হয়। যদিও উন্নয়নশীল তকমা দেয়া হয়, কিন্তু দেশটি মূলত থেকে গেছে সাম্রাজ্যবাদ দ্বারা নিপীড়িত। বাংলাদেশ ২০১৮-১৯ জুলাই জুন অর্থবছরে ৪০.৫৩ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করে এবং একই সময়ে ৫৫.৪৪ বিলিয়ন ডলারের আমদানি করে। বাংলাদেশ সেই হিসেবে আমদানিকারী সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহের উপরে নির্ভরশীল দেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ (ইংরেজি: Features of Bangladesh Economy) আলোচনা করা হলো।
বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যসমূহ
১. স্বল্প মাথাপিছু আয়: মাথাপিছু স্বল্প আয় বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল বৈশিষ্ট্য। আমাদের দেশের জনসাধারণ কৃষির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু কৃষিক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত চিরাচরিত চাষাবাদ পদ্ধতি বজায় থাকায় এবং জমির উপর জনসংখ্যার অত্যধিক চাপ পড়ায় বাংলাদেশের কৃষকদের উৎপাদন ক্ষমতা কম। ফলে তাদের আয় স্বল্প এবং সেই স্বল্প আয়ের অধিকাংশই জীবনধারণের মৌলিক প্রয়োজন মিটাতে ব্যয় হয়ে যায় বলে তারা তেমন কিছু সঞ্চয় করতে পারে না। এতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ব্যাহত হয়। তবে আমাদের মাথাপিছু আয় ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অসম ভিত্তিতে অর্থাৎ ধনীরা আরও বেশি ধনী ও গরীবরা আরও বেশি গরীব হচ্ছে।
২. কৃষির উপর নির্ভরশীলতা: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো মূলত কৃষিনির্ভর। এ দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশজ উৎপাদনে কৃষি খাতের অবদান ১৫.৩৩ শতাংশ | (উৎস: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা- ২০১৬)কিন্তু বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান হলেও এখানে জমির একর প্রতি ফলন তুলনামূলকভাবে কম।
৩. শিল্পে অনগ্রসর: বাংলাদেশ শিল্পের ক্ষেত্রে অনগ্রসর। উদ্যোক্তার অভাব, মূলধনের অভাব, দক্ষ কারিগরের অভাব ইত্যাদি কারণে উন্নত দেশের তুলনায় এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় উৎপাদনে শিল্পের অবদান ৩১.২৮ শতাংশ মাত্র (উৎস: বা.অ.স-২০১৬)।
৪. প্রাকৃতিক সম্পদের অপূর্ণ ব্যবহার: বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য থাকলেও তাদের যথাযথ ব্যবহার এখনও সম্ভবপর হয়নি। মূলধন, দক্ষ জনশক্তি ও কারিগরি জ্ঞানের অভাব আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের | পরিপূর্ণ ব্যবহারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে প্রাচুর্যের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখনও কাঙ্খিত উন্নয়ন অর্জন করতে পারে নি।
৫. অনুন্নত আর্থ-সামাজিক কাঠামো: বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, বিনোদন ইত্যাদি অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামো এখনও মানসম্মত নয়। এতে দেশের জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।
৬. জনসংখ্যার চাপ: দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি আমাদের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। ২০১১ সালের শুমারী অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১০১৫ জন লোক বাস করে এবং দেশে বছরে ১.৩৭ শতাংশ হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৭. শিক্ষার হার: দেশে বর্তমানে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে শিক্ষার হার ৬৪.৪ (উৎস: বা.অ.স-২০১৬)।
৮. মিশ্র অর্থনীতি: বাংলাদেশে বর্তমানে মিশ্র অর্থনীতি প্রচলিত রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি খাত পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে বেসরকারি খাতের উপর অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে এবং দেশ ক্রমশ মুক্তবাজার অর্থনীতির পথে অগ্রসর হচ্ছে।
৯. সস্তা শ্রম: বাংলাদেশে শ্রম উৎপাদনের সবচেয়ে সস্তা উপকরণ। তাই এ দেশে শ্রম নিবিড় শিল্প স্থাপন করা অধিকতর সুবিধাজনক।
১০. বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ: বাংলাদেশ বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমানে ঋণ গ্রহণ করে। উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থায়ন ও বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতি পুরণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ নিয়মিতভাবে বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণ করে।
১১. মুদ্রাস্ফীতি: মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বৈশিষ্ট্য। এ কারণে সরকারের রাজস্ব ব্যয়ও প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উল্লেখিত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যআয়ের দেশ হলেও এ দেশে এখন কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগসহ সকল ক্ষেত্রেই লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। তাই আমরা আশাবাদী বাংলাদেশ অচিরেই পরিণত হবে মধ্যম আয়ের দেশে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির খাতসমূহ
যে কোন দেশের অর্থনীতি বিভিন্ন বিভাগ বা ক্ষেত্রে (ইংরেজি: Sectors) বিভক্ত থাকে। অর্থনীতির এ সমস্ত ক্ষেত্র বা বিভাগগুলো তাদের নিজ নিজ পরিমন্ডলে অর্থনীতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে এবং এদের সমষ্টিগত অবদানের দ্বারাই দেশের গোটা অর্থনীতি গড়ে ওঠে। দেশের অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত এ সমস্ত ক্ষেত্র বা বিভাগকে ‘অর্থনৈতিক খাত’ বলা হয়। উৎপাদনের মালিকানা, উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবার বৈশিষ্ট্য, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার স্থান ইত্যাদি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনৈতিক খাতসমূহকে শ্রেণিবিভক্ত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মালিকানা ভিত্তিক খাত, উৎপাদন ভিত্তিক খাত, গ্রামীন খাত, শহুরে খাত ইত্যাদি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতগুলোকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তিনভাবে বিভক্ত করা যায়- ক) উৎপাদন ভিত্তিক খ) মালিকানাভিত্তিক এবং গ) অঞ্চলভিত্তিক। নিম্নে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতসমূহের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হলো:
উৎপাদনভিত্তিক খাতসমুহ
উৎপাদনের দিক হতে বাংলাদেশের উৎপাদনভিত্তিক অর্থনৈতিক খাতসমূহকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা, ২০১৬ এ ১৫টি খাতে ভাগ করা হয়েছে, নিম্নে এ খাতগুলো সম্পর্কে এবং ২০০৫-০৬ সালের ভিত্তিমূল্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জিডিপিতে এদের শতকরা হার আলোচনা করা হলো:
১. কৃষি ও বনজ: আমাদের অর্থনীতির প্রধান খাত হলো কৃষিখাত। শস্য, বনজ সম্পদ, প্রানি সম্পদ হলো কৃষির বিভিন্ন উপখাত। ২০১৪-১৫ সনে দেশের মােট জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ছিল ১২.২৭ শতাংশ এবং এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার ২.০৭ শতাংশ।
২. মৎস্য: শুরুতে মৎস্য সম্পদ কৃষি খাতের অর্ভুক্ত থাকলেও সম্প্রতি জিডিপিতে মৎস্য খাতকে পৃথক খাত হিসেবে দেখানো হচ্ছে। ২০১৪-১৫ সনে দেশের মোট জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান ৩.৬৯ শতাংশ এবং এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার ৬.৪১ শতাংশ।
৩. শিল্প: শিল্পখাত বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম বৃহত্তম খাত। বৃহদায়তন শিল্প এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হলো শিল্পখাতের দুটি উপখাত। ২০১৪-১৫ সনে মোট দেশজ উৎপাদনে শিল্পখাতের অবদান ২০.১৭ শতাংশ। এর মধ্যে বৃহদায়তন ও মাঝারি খাতের অবদান ১৬.৫২ শতাংশ এবং ক্ষুদ্রায়তন শিল্পখাতের অবদান ৩.৬৫ শতাংশ। ২০১৪-১৫ সনে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধির হার ১০.৩২ শতাংশ।
৪. পরিবহন ও যোগাযোগ: পরিবহণ ও যোগাযোগ এ দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। বর্তমানে পরিবহনের ক্ষেত্রে রেল পথ ও জল পথের গুরত্ব হ্রাস ও সড়ক পথের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্প্রতিককালে সড়ক পরিবহনের অগ্রগতি খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। ২০১৪-১৫ সনে মোট দেশজ উৎপাদনে এ খাতের অবদান ছিল ১১.৪৪ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৫.৯৯ শতাংশ।
৫. নির্মাণ: নির্মাণ খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির আরেক গুরত্বপূর্ণ খাত। ২০১৪-১৫ সনে মোট দেশজ উৎপাদনে এ খাতের অবদান ছিল ৭.১৭ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮.৬৩ শতাংশ।
৬. লোক প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা: লোক প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি অন্যতম খাত। ২০১৪-১৫ সনে আমাদের মোট দেশজ উৎপাদনে এ খাতে অবদান ছিল ৩.৪২ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৭.৪৮ শতাংশ।
৭. বিদ্যুৎ গ্যাস ও পানি সম্পদ: বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সম্পদ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ন খাত। ২০১৪-১৫ সনে মোট দেশজ উৎপাদনের এ খাতের অবদান ছিল মাত্র ১.৪৩ শতাংশ। এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিলো ৭.০১ শতাংশ।
৮. আর্থিক প্রাতিষ্ঠানিক সেবা: আর্থিক প্রাতিষ্ঠানিক সেবা খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির আরেক গুরুত্বপূর্ন খাত। ২০১৪-১৫ সনে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে এ খাতের অবদান ছিল ৩.৪১ শতাংশ এবং এখাতে প্রবৃদ্ধির হার ৮.৮৩ শতাংশ।
৯. পাইকারি ও খুচরা বিপণন: জিডিপিতে পাইকারি ও খুচরা বিপণন খাতের অবদানও যথেষ্ঠ। ২০১৪-১৫ সনের জিডিপিতে এই খাতের অবদান ছিল ১৪.১২ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৬.৫৯ শতাংশ।
১০. রিয়েল এষ্টেট, ভাড়া ও অন্যান্য: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আরেক গুরত্বপূর্ন খাত হলো গৃহায়ন। ২০১৪-১৫ সনে মোট জিডিপিতে এ খাতের অবদান ৬.৮৩ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৪.৬৬ শতাংশ।
১১. কমিউনিটি, সামাজিক ও ব্যক্তিগত সেবা: বিভিন্ন ধরণের সেবামূলক খাত হতে জিডিপি একটি গুরত্বপূর্ণ অংশ পাওয়া যায়। ২০১৪-১৫ সনের জিডিপিতে কমিউনিটি, সামাজিক ও ব্যক্তিগত সেবা ইত্যাদি বিভিন্ন সেবাখাতের অবদান ছিল ৯.৫৩ শতাংশ এবং এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার ৩.৩৬ শতাংশ।
১২. শিক্ষা খাত: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আরেক গুরুত্বপূর্ন খাত হলো শিক্ষাখাত। ২০১৪-১৫ সনে বাংলাদেশের জিডিপিতে শিক্ষাখাতের অবদান ছিল ২.২৮ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৭.৬২ শতাংশ।
১৩. স্বাস্থ্য সেবা: স্বাস্থ্য সেবা বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি অন্যতম খাত। ২০০৪-১৫ সনে বাংলাদেশের জিডিপিতে স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা খাতের অবদান ১.৮৪ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৫.৬৯ শতাংশ।
১৪. খনিজ ও খনন: ২০১৪-১৫ সনে আমাদের জিডিপিতে খনিজ ও খনন খাতের অবদান ছিল ১.৬৫ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৭.৪৮ শতাংশ।
১৫. হোটেল ও রেস্তোরা: ২০১৪-১৫ সনে আমাদের জিডিপিতে হোটেল ও রেস্তোরা খাতের অবদান ০.৭৫ শতাংশ এবং এ খাতের প্রবৃদ্ধির হার ৬.৮৫ শতাংশ।
তথ্যসূত্র:
১. কনস্তানতিন স্পিদচেঙ্কো, অনুবাদ: দ্বিজেন শর্মা: বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভূগোল, প্রগতি প্রকাশন, মস্কো, বাংলা অনুবাদ ১৯৮২, পৃ: ১২৮-১২৯।
২. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশের ইতিহাস ১৭০৪-১৯৭১, রাজনৈতিক ইতিহাসের প্রেক্ষাপট, প্রথম খণ্ড, মিত্র ঘোষ এন্ড পাবলিশার্স, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ডিসেম্বর ১৯৯৩, পৃষ্ঠা ২-৩
৩. সম্পাদকীয় বোর্ড, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, ভুক্তি Economy of Bangladesh.
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।