পিয়াইন নদী বা পিয়াইন গাং (ইংরেজি: Piyain River) বাংলাদেশ ও ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটির বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য ৫১ কিলোমিটার এবং মোট দৈর্ঘ্য ১৪৫ কিলোমিটার, প্রস্থ ১১৫ মিটার, প্রকৃতি সর্পিলাকার। নদীটি বাংলাদেশের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানিগঞ্জ ও ছাতক উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহমান। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক পিয়াইন নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ৪৯।[১]
উৎপত্তি ও প্রবাহ: পিয়াইন নদী ভারতের আসামের ওম বা উমগট নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করে সিলেট জেলাধীন গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার দক্ষিণ ইসলামপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে সুরমা নদীতে পতিত হয়েছে।[১] প্রবেশ পথেই উমগট নদী দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে যার প্রধান শাখাটি পিয়াইন নদী এবং অপর শাখাটি ডাউকি বা জাফলং নামে প্রবাহিত হয়।[২] নদীটির প্রবাহের প্রকৃতি মৌসুমি।
পিয়াইন নদীর প্রশস্ততা ও পানির প্রবাহ পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও এর গভীরতা হ্রাস পেয়েছে। এ নদীর কোথাও কোথাও ভাঙনপ্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। বর্ষাকালে এই নদীর অববাহিকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। নদীতে ছোটবড় নৌকা, ট্রলার ও মালবাহী কার্গো চলাচল করে। এই নদীপথেই ভারত থেকে বড় আকারের পাথর আমদানি করা হয়। সুরমা এবং পিয়াইন নদীর সংযোগস্থলে বহু ধরনের পাথর ভাঙার কারখানা গড়ে উঠেছে।[১]
অন্যান্য তথ্য: জাফলং থেকে ছাতক পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার পথে এর ২২টি বাঁক আছে। সিলেটের পাহাড়ি নদীর বৈশিষ্ট্যের মতো এই নদীতে পাহাড়ি ঢলে আগাম বন্যা হয়ে থাকে। এই নদীটির অববাহিকার প্রকল্পের নাম পাথরচুলি হাওড় প্রকল্প। এই নদী তীরের বাজার হচ্ছে হাদারপাড়বাজার ও নিজগাঁওবাজার এবং গ্রাম সংগ্রামপুঞ্জি ও স্থাপনা প্রতাপপুর বিডিআর ক্যাম্প। এই নদীতে কোনো ব্যারাজ বা রেগুলেটর নেই। তবে তেলিখাল ইউনিয়নে নদীটির বামতীরে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে।
তথ্যসূত্র:
১. মানিক, মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ঢাকা, পৃ: ২০৩-২০৪।
২. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ২৫৩-২৫৪।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।