বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁয়ে একটি হিমালয়ী গৃধিনী, Himalayan Griffon Vulture, Gyps himalayensis ধরা পড়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও বিএডিসি ফার্মের পাশের আখছা গ্রাম থেকে সেটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে সংবাদকর্মিরা জানতে পারলে বন বিভাগকে খবর দেয়। পরে সেটিকে বন বিভাগের লোকজন সেদিনই সন্ধ্যায় উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বন বিভাগের লোকজন জানায় সেটিকে রামসাগর জাতীয় উদ্যানের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনা জানাজানি হলে পরিবেশবিদগণ কোনো চিড়িয়াখানায় এটিকে পাঠানোর বিরোধিতা করেন। উল্লেখ্য হিমালয়ী গৃধিনী বাংলাদেশে মহাবিপন্ন পাখি এবং বাংলাদেশের ৬ প্রজাতির শকুনের ভেতর কোনোটিই ভালো নেই।
পাখি রক্ষায় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব পাখিপ্রেমি আহমদ উল্লাহ-এর সংগে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “শকুনটিকে সুস্থ করে প্রকৃতিতেই ফিরিয়ে দেয়া উচিত; চিড়িয়াখানায় বিপন্ন প্রাণি নিয়ে কোনো ধরণের ব্যবসা কাম্য নয়।” তিনি আরো বলেন “আমি ৮ তারিখ সকালে ঠাকুরগাঁয়ের এডিসি জনাব আবুল ওয়াহেদ-এর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানিয়েছেন পাখিটিকে যাতে চিড়িখানায় পাঠানো না হয় সে চেষ্টা তিনি করবেন।”
এ ব্যাপারে পাখিবিশেষজ্ঞ শরীফ খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে জানিয়েছেন “যদি সুস্থ হওয়ার পর পাখিটি উড়তে সক্ষম হয় তবে সেটিকে ছেড়ে দেয়ায় উচিত। কী কারণে হিমালয়ান গ্রিফন শকুন বাংলাদেশ অঞ্চলে আসলে অসুস্থ হয় সে নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি। তবে অনুমান করা যায় বিষক্রিয়ায়, বিদ্যুতের তারে আঘাত লেগে, কাক-চিল দ্বারা আক্রান্ত হয়ে, খাদ্যাভাবে বা অন্য কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে নিচে পড়ে গেলে আর উড়তে পারে না। এ রকম অসুস্থ শকুনকে সুস্থ করে প্রকৃতিতেই অবমুক্ত করা দরকার। তবে খুবই অসুস্থ থাকলে বা একেবারেই উড়ার যোগ্যতা হারালে সেটিকে খোলা জায়গায় বা কোনো মাঠে ছেড়ে দিলে সেটি শিশু বা অন্য প্রাণির দ্বারা আক্রান্ত হয়ে কিংবা খাদ্যাভাবে মারা যেতে পারে। তাই শকুনটির সুস্থতার উপরই সেটি নির্ভর করছে।”
এদিকে রবিবারের পত্রিকার খবরে[১] জানানো হয়েছে, ঠাকুরগাঁয়ে আটক শকুনটিকে রামসাগর জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জেলা বন বিভাগীয় কর্মকর্তা আলী কবীর ডেইলি স্টারের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন পৌনে ৩ ফুট লম্বা এবং আড়াই ফুট উচ্চতা এবং প্রায় বিশ কেজি ওজনের শকুনটিকে তারা পুর্ণাঙ্গ সুস্থ হওয়ার পর মুক্ত করবেন।[২]
তথ্যসূত্র:
১. Our Correspondent, Thakurgaon, The Daily star, December 09, 2012; Vulture taken to Ramsagar shelter;<http://www.thedailystar.net/news-detail-260421>.
২. খবরটি প্রথম প্রাণকাকলিতে ১ নভেম্বর, ২০১৪ প্রকাশিত হয়। এখানে ঘটনার পরদিন হিসেবে প্রকাশিত হলো। ছবির সূত্র রেজাউল হাফিজ রাহীর ফেসবুক পোস্ট।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।