দেবদারু (বৈজ্ঞানিক নাম: Polyalthia longifolia, ইংরেজি নাম: false ashoka) Annonaceae পরিবারের Polyalthia গণের চিরহরিৎ বৃক্ষ যা দেখতে দীর্ঘকায় এবং লম্বা ঢেউ খেলানো পত্র-পল্লবের জন্য বেশ জনপ্রিয়। দেবদারু গাছের ছয় ধরনের রোগ সারাবার ভেষজ উপকারিতা বা ঔষধি গুণাগুণ রুয়েছে। দেবদারু দেবদারু গাছ বেশ বড় হয়। অন্যান্য গাছের তুলনায় আকারে ও উচ্চতায় বেশ বড় হয়। এ গাছের পাতাগুলো সরু ও ঝাঁটার কাঠির মতো, ফলগুলো সবুজ রঙের হয়।
এ গাছের ছাল তিক্ত, লঘু, স্নিগ্ধ, কটু-বিপাক ও উষ্ণবীর্য যুক্ত। দেবদারু গাছের অংশ বিশেষ প্রয়োগে জ্বর, বায়ু, কাশ, কণ্ডু, শোথ, হিক্কা, তন্দ্রা প্রমেহ, রক্তদোষ ও আমদোষ প্রশমিত হয়। দেবদারু গাছের ছাল ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
আরো পড়ুন: দেবদারু এশিয়ায় জন্মানো শোভাবর্ধক ও ভেষজ বৃক্ষ
দেবদারু গাছ-এর প্রয়োগ:
১. পেটে বায়ু জমলে: দেবদারু ছালের ক্বাথ এক তোলা পরিমাণে নিয়ে তার সাথে মধু মিশিয়ে খেলে বায়ু নিঃসরণ হয়, কূপিত বায়ু নিবারিত হয়।
২. কাশিতে: দেবদারু গাছের ছাল চূর্ণ করে কাপড়ে ঘেঁকে নিন। সে চূর্ণ এক চা-চামচ মধুসহ মিশিয়ে চেটে খান, কাশি কমে যাবে।
৩. আমাশয় হলে: দেবদারুর ছাল ১০ থেকে ১৫ গ্রাম নিয়ে তিন কাপ পানিতে সিদ্ধ করে, এক কাপ অবশিষ্ট থাকতে নামিয়ে সিকি কাপ ঘেঁকে নিয়ে, তার সাথে আধা চাচামচ দেবদারুর ছাল চূর্ণ একত্রে মিশিয়ে খেলে উপকার হয়।
৪. চুলকানিতে: দেবদারুর ছাল চূর্ণ করে সরিষার তেলের সাথে মিশিয়ে দেহে বেশ ভালোভাবে মালিশ করুন। একঘণ্টা পরে গোসল করবেন। এর ফলে ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যেই চুলকানির চিহ্ন থাকবে না।
৫. শোথ ও রক্তদৃষ্টিতে: উপরোক্ত নিয়মে দেবদারুর ছালের ক্বাথ তৈরি করে ছেকে নিয়ে ৪ চা-চামচ মাত্রায় প্রতিদিন খেলে উপকার হয়।
৬. প্রমেহ রোগ: এক তোলা পরিমাণ দেবদারু গাছের ছালের রস নিয়ে মিসরীর সরবত তৈরি করে তার সাথে মিশিয়ে খান প্রতিদিন সকালে প্রমেহ আরোগ্য হবে।
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্র:
১. আঃ খালেক মোল্লা সম্পাদিত;লোকমান হেকিমের কবিরাজী চিকিৎসা; মণিহার বুক ডিপো, ঢাকা, অক্টোবর ২০০৯; পৃষ্ঠা ২২৯
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Judgefloro
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।