পানিফল বা শিঙ্গাড়া জলজ রসালো ঔষধিগুণ সম্পন্ন ফল

ফল

পানিফল বা শিঙ্গাড়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Trapa natans. সাধারণ নাম: water caltrop, buffalo nut, bat nut, devil pod, ling nut, lin kok, ling kio nut, singhada. বাংলা নাম: পানিফল বা শিঙ্গাড়া
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Edicots অবিন্যাসিত: Rosids বর্গ: Myrtales পরিবার: Lythraceae উপ পরিবার: Trapoideae গণ: Trapa প্রজাতি: Trapa natans

পরিচিতি: এটি একটি ভাসমান বিস্তৃত জলজ উদ্ভিদ, এই জল সঞ্চারী শৈবাল সদৃশ (শেওলা) ভেষজগুলির পাতা ২ থেকে ৩ ইঞ্চি চওড়া এবং ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা হয়, পাতার কিনারাগুলি করাতের ন্যায় বড় দাঁতবিশিষ্ট। পাতার বোঁটা ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি এবং পশমময়। ফলগুলি ত্রিকোণাকার কিন্তু মোটা। এই ফলের দুই কোণে দুটি ধারালো কাঁটা হয়। ভাদ্র আশ্বিন থেকে ফল হতে শুরু হয় এবং মাঘ ফাল্গুন পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়, তারপর পুরনো পাতা পচে যেতে থাকে।

এই গণের আর একটি প্রজাতি আছে। এটি প্রধানত ভারতের ছোটনাগপুর অঞ্চলে দেখা যায়, এর পাতাগুলি আকারে ছোট, এই গাছের ফলগুলির চারকোণে চারটি কাঁটা আছে, তার মধ্যে দুটি কাঁটা অপেক্ষাকৃত ছোট, ফল ঐ এক সময়েই হয়। এটির বোটানিকাল নাম Trapa incisa,

বিস্তৃতি: শৃঙ্গাটকের ভাষানাম পানিফল। পানিতেই ফল হয় বলে এর নাম পানিফল; যদিও দক্ষিণ ভারত ছাড়া সব ভারতীয় ভাষানাম প্রায় একই, তবে অনেকটা সংস্কৃত-নির্ভর শিঙ্গাড়াও বলে কিন্তু বৈদিক ও সংহিতাগত নাম শৃঙ্গাট বা শৃঙ্গাটক। বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, উত্তর প্রদেশ প্রভৃতি অঞ্চলের বহু জলাশয় এবং ঝিলে চাষ করা হয়। উড়িষ্যার অঞ্চলবিশেষে এটিকে শিঙ্গাড়া বলে।[১]

অবস্থা: পানিফল বা শিঙ্গাড়া বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত (LC) বলে বিবেচিত। এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিশাল এলাকাজুড়ে এরা বিস্তৃত। এটি ইউরোপ, দক্ষিণ সুইডেন এবং ইউরোপীয় রাশিয়ার বেশিরভাগ এলাকা থেক বর্তমান অবস্থান হিসেবে জানা গেছে। এশিয়ার প্রায় সব জায়গায়, চীন, ফিলিপাইন এবং মালয়েশিয়া জুড়ে দেখা যায়। এটি দৃশ্যত অস্ট্রেলিয়া ও উত্তর আমেরিকায় চালু হয়েছে যেখানে এখন এটি ব্যাপক এবং আগ্রাসী হতে পারে। সে কারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে বিপদমুক্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে।[৩]

আরো পড়ুন:  লাল শাপলা বাংলাদেশের জলজ আলংকারিক ফুল

ব্যবহৃত অংশ: পানিফল বা শিঙ্গাড়া ঔষধার্থে ব্যবহার হয় ফল ও লতা। এর শর্করা ও আমিষ এতই সহজ পাচ্য যে এটি দুর্বল ও অসুস্থ মানুষ খেতে পারে। বিছা কামড়ের জায়গায় ফল থেঁতো করে প্রলেপ করলে সেরে যাবে। [২]

তথ্যসূত্রঃ

১. আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্রচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি‘ খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৪, পৃষ্ঠা,৯৬।

২. শেখ সাদী; উদ্ভিদকোষ, দিব্যপ্রকাশ, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, পৃষ্ঠা, ২৪৬।

৩. “Trapa natans“, http://www.iucnredlist.org/details/164153/0,  The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮।

Leave a Comment

error: Content is protected !!