লালগলা বাতাই বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি

[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]বৈজ্ঞানিক নাম: Arborophila rufogularis সমনাম: Arborophila intermedia Blyth, 1849 বাংলা নাম: লালগলা বাতাই, পাহাড়ি তিতির (অ্যাক্ট) ইংরেজি নাম : Rufous-throated Partridge জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য Kingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Phasianidae গণ/Genus: Arborophila, Hodgson, 1837; প্রজাতি/Species: Arborophila rufogularis (Blyth, 1849)[/otw_shortcode_info_box]

ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Arborophila গণে মোট যে দুটি প্রজাতি পাওয়া যায় সেগুলো হলো, ১.  ধলাগাল বাতাই , ২. লালগলা বাতাই। আমাদের আলোচ্য হলো নিম্নোক্ত পাখি লালগলা বাতাই

বর্ণনা: লালগলা বাতাই লালচে গোলাপি গলার ছোট ভূচর পাখি (দৈর্ঘ্য ২৭ সেমি, ওজন ৩৫৫ গ্রাম, ১৪ সেমি, ঠোঁট ১.৮ সেমি, পা ৪ সেমি, লেজ ৫.৫ সেমি)। ছেলেপাখির চেহারা মেয়েপাখি থেকে কিছুটা পৃথক। ছেলেপাখির পিঠ সোনালী জলপাই-বাদামি; কপাল ধূসর, জলপাই-বাদামি চাঁদিতে কালো দাগ; ধূসর-সাদা ভ্রু-রেখা ও সাদা গুম্ফ-রেখা আছে; থুতনী ও গলায় লালের ওপর কালো তিলা, ঘাড়ের উপরিভাগ লালচে-কমলা রঙের; বুক স্লেটরঙা-ধূসর; ঘাড়ের উপরিভাগে ও বুকের মাঝখানে একটি সরু কালো ডোরা নেমে গেছে; এবং কোমর ও লেজের নিচে কালো তিলা আছে। মেয়েপাখির থুতনি ও গলায় কয়েকটি কালো তিলা; এবং দেহতলের বাকি অংশে অনেক ফুটকি রয়েছে। ছেলে ও মেয়েপাখি উভয়ের বাদামি চোখ; অক্ষিকোটর ও গলার চামড়া লাল; কালচে ঠোঁট; এবং লাল পায়ে পাটকিলে নখর থাকে। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহতলে সাদা তিলা ও ডোরাহীন কাঁধ-ঢাকনি থাকে। ৬টি উপ-প্রজাতির মধ্যে A. r. intermedia বাংলাদেশে পাওয়া যায়।

স্বভাব: লালগলা বাতাই চিরসবুজ বনতলে জলাশয়ের পাড়ের ঘন ঝোপে বিচরণ করে; সাধারণত জোড়ায় বা ৫-৬ টির বিচ্ছিন্ন দলে দেখা যায়। এরা ধীরে ধীরে হেঁটে বেড়ায় ও মাঠের ঘাসে বা লতাপাতার মধ্যে খাবার খোঁজে: খাদ্যতালিকায় আছে বীজ, রসালো ফল, নবপল্লব ও অমেরুদণ্ডী প্রাণী, বিশেষ করে পোকামাকড় ও শামুক। নিচু স্বরে এরা মাঝে মাঝে শিস দেয়; এপ্রিল-আগস্ট মাসের প্রজনন ঋতুতে ভোরে ও গোধূলিতে ‘গান’ গায়: হুইয়া-হু…; এবং ঘন লতাপাতা ঘেরা মাটির প্রাকৃতিক গর্তে ঘাস ও পাতা দিয়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা; সংখ্যায় ৩-৬টি, মাপ ৩.৯-২.৯ সেমি। স্ত্রীপাখি একাই ডিমে তা দেয়; ২০-২১ দিনে ডিম ফোটে।

আরো পড়ুন:  দাগি নাটাবটের বিশ্বে বিপদমুক্ত এবং বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি

বিস্তৃতি: লালগলা বাতাই বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনে দেখা পাওয়ার তথ্য রয়েছে। ভারত, নেপাল, ভুটান, চিন, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস ও ভিয়েতনামে এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা: লালগলা বাতাই বিশ্বে বিপদমুক্ত ও বাংলাদেশে অপ্রতুল-তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। বাংলাদেশের বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[২]

বিবিধ: লালগলা বাতাই পাখির বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ লাল-গলার বৃক্ষপ্রেমী তিতির (ল্যাটিন: arbor = বৃক্ষ, গ্রিক : philos = প্রিয়, ল্যাটিন : rufus = লাল, gula = গলা)।

তথ্যসূত্র:

১. সাজেদা বেগম, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা -০০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।

২. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৪৮।

Leave a Comment

error: Content is protected !!