ভূমিকা: কালো পেট ঢোড়া সাপ বা ধোরা সাপ (বৈজ্ঞানিক নাম: Xenochrophis cerasogaster ইংরেজি: Orange-bellied Oriental Slender Snake) কলুব্রিডি পরিবারের জেনোক্রোফিস গণের সাপের একটি প্রজাতি। ঢোড়া সাপের প্রজাতিগুলোর ভেতরে এটি একটি। বাংলাদেশের সাপের তালিকায় জেনোক্রোফিস গণে যে দুইটি প্রজাতি পাওয়া যায় এটি তার একটি।
বর্ণনা: কালো পেট ঢোড়া সাপের দেহের দৈর্ঘ্য ৬০ সেমি। দেহ জলপাই-বাদামী থেকে সবুজ রঙের, দেহের পিছনের অংশে, কালােদাগ থাকে বা অনেক সময় থাকে না এবং টকটকে লাল রঙের মার্বেল আকৃতির দাগ থাকে বা নিম্নাংশ সম্পূর্ণ কালাে থাকে, ও লালচে মার্বেলের মতাে দাগ থাকে, নীচের অংশ সম্পূর্ণ কালাে হয় ও মাঝে মাঝে বাদামী অথবা লালচে-কালাে থাকে। এছাড়াও উদরে সাদা ফোঁটা থাকে, বিশেষ করে দেহের সামনের অংশে।
এদের মাথা সরু, গ্রীবা থেকে কিছুটা পৃথক। তুন্ড থেকে উপরের ল্যাবিয়াল বরাবর উদর থেকে লেজের শীর্ষ পর্যন্ত উজ্জ্বল হলুদ পার্শ্বীয় ব্যান্ড থাকে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক সাপে হলুদ রেখা থাকে।
কালো পেট ঢোড়া সাপের আঁইশের বিন্যাস: মধ্যভাগে ১৯ সারিতে সাজানাে থাকে, অঙ্কীয় আঁইশের সংখ্যা ১৪১-১৪৯টি, পায়ু বিভক্ত, নিম্ন-পুচেছর আঁইশের সংখ্যা ৬০-৬৯টি, লােরিয়াল বড়; প্রিঅকুলার একটি, পােষ্টঅকুলার তিনটি; নিচের দিক কখনাে বিভক্ত; টেম্পােরাল ৩+৩; সুপ্রাল্যাবিয়াল ৯টি, শুধু ৪র্থ টি চোখের সামনে অবস্থিত (Gunther, 1864; Smith 1943)।
স্বভাব ও আবাসস্থল: কালো পেট ঢোড়া সাপ নিচু চিরসবুজ বনাঞ্চলে বাস করে; সমতল ভুমির জলাশয়ে বসবাস করে। এরা খাদ্য হিসেবে ব্যাঙ এবং মাছ গ্রহণ করে। এরা হিংস্র প্রকৃতির, কিন্তু নির্বিষ এবং গ্রীবা প্রসারিত ব্যতীত খাড়া ভঙ্গিতে আক্রমণ করে। এদের প্রাকৃতিক স্বভাব সম্পর্কে তেমন বেশি জানা নেই।
বিস্তার: বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং পাকিস্তানে এই প্রজাতির সাপ পাওয়া যায়। এই প্রজাতির সাপ আইইউসিএন কর্তৃক মূল্যায়িত নয় এবং বাংলাদেশে সংকটাপন্ন। (IUCN-Bangladesh, 2003) |
ছবির ইতিহাস: কালো পেট ঢোড়া সাপের ছবিটি তানিয়া খান তুলেছেন ডিসেম্বর ২০১৩ সময়ে বাংলাদেশ থেকে।
তথ্যসূত্র:
১. এম কামরুজ্জামান, জিয়া উদ্দিন আহমেদ (প্রধান সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: উভচর প্রাণী ও সরীসৃপ, খণ্ড: ২৫ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ১৬৪।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।