বনভাতি বাংলাদেশের বনাঞ্চলে জন্মানো ভেষজ গুল্ম

গুল্ম

বনভাতি

বৈজ্ঞানিক নাম: Clerodendrum colebrookianum Walp., Repert. Bot. Syst. 4: 114 (1846). ইংরেজি নাম: East Indian glory bower. স্থানীয় নাম: নাপি গাছ, বনভাতি।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Tracheophyta. অবিন্যাসিত: Eudicots. অবিন্যাসিত: Asterids. বর্গ: Lamiales. পরিবার: Lamiaceae. গণ: Clerodendrum.প্রজাতি:Clerodendrum colebrookianum.

ভূমিকা:  বনভাতি, নাপি গাছ (বৈজ্ঞানিক নাম: Clerodendrum colebrookianum) এটি লামিয়াসি পরিবারের ক্লেরোডেন্দ্রোম গণের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। বাংলাদেশের বনাঞ্চলে জন্মে। জংলী প্রজাতি হলেও ফুলের সৌন্দর্যের জন্য বাড়িতে বা বাগানে লাগানো হয়।

বনভাতি-এর বর্ণনা:

বনভাতি গুল্ম বৈসাদৃশ্য গন্ধযুক্ত। এটি প্রায় ৪.৫ মিটার উঁচু, গোলাকার মুকুট বিশিষ্ট, বাকল উজ্জ্বল ধূসর, চকচকে। পত্র সরল, ৭-২৫ x ৬-২০ সেমি।

পাতা প্রশস্ত ডিম্বাকার, সূক্ষ্মাগ্র, গোড়া অগভীর হৃৎপিন্ডাকার, অখন্ডিত, ঝিল্লিময়, প্রায় রোমহীন, পার্শ্বীয় শিরা মধ্য শিরার উভয় পাশে ৬-৯টি;

পত্রবৃন্ত ১২-১৫ সেমি লম্বা, শীর্ষের নিকট গ্রন্থির গুচ্ছ বিদ্যমান। পুষ্পবিন্যাস প্রশস্ত, শীর্ষক, করিম্বসদৃশ যৌগিক সাইম, মঞ্জরীপত্র ক্ষণস্থায়ী। পুষ্প সাদা।

বৃতি ঘন্টাকার, রোমশ, দন্তক ৫টি, খাটো, স্বল্প গ্রন্থিযুক্ত। দলমন্ডল নলাকার, নল সরু, ২.৫-৩.০ সেমি লম্বা। পুংকেশর ৪টি, দীর্ঘদ্বয়ী, পুংদন্ড সূত্রাকার, গর্ভদন্ড বহির্মুখী।

গর্ভাশয় ৪-কোষী, গর্ভমুন্ড সামান্য দ্বিখন্ডিত। ফল ৪টি ক্ষুদ্র ডুপ, গোলাকার, নীলাভ-সবুজ থেকে গাঢ় সবুজ, চকচকে, উপরিভাগ চ্যাপ্টা, প্রায় ৮ মিমি চওড়া, বাড়ন্ত পেয়ালা-আকৃতির বৃতিতে অবস্থিত।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৫২ (Mehra and Bawa, (1969)।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

বাংলাদেশের এই ভেষজ প্রজাতিটি পাহাড়ী বন এলাকায় জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল মে থেকে অক্টোবর। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা।

বনভাতি-এর বিস্তৃতি:

ভারত, নেপাল থেকে ভুটান, মায়ানমার, পশ্চিম চীন, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম এবং মালয়া। বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগ্রাম এবং বান্দরবান জেলায় পাওয়া যায় (Mia and Uddin, 2000),

ব্যবহার: পাতা কখনো সবজিরুপে ব্যবহৃত হয়।

জাতিতাত্ত্বিক ব্যবহার:

লেপছা উপজাতীয়র পাতা সবজিরূপে খায় (Mia and Uddin, 2000).

আরো পড়ুন:  কুকুরমুতা বা তাম্রচূড়া ভেষজ গুণসম্পন্ন গুল্ম

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) নাপি গাছ, বনভাতি প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে নাপি গাছ, বনভাতি সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।  

তথ্যসূত্র:

১. বি এম রিজিয়া খাতুন (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪৪৮-৪৪৯। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি alchetron.com থেকে নেওয়া হয়েছে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!