কাঁটা বাটনা-এর বিবরণ:
মাঝারি আকৃতির ডালপালা বিশিষ্ট অতি দ্রুত বর্ধনশীল চিরসবুজ বৃক্ষ, উচ্চতায় ১৫-২০ মিটার এবং বুক সমান উচ্চতায় গুঁড়ি কান্ডের বেড় প্রায় ৭৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। ২। গুঁড়িকাণ্ড সরল, বেশ সোজা, গোলাকার এবং ১২ মিটার পর্যন্ত গুঁড়ি কান্ড ডালপালা বিহীন। কচি ডালপালা দেখতে মখমলের মতো। বাকল পুরু, রুপালি ধূসর বর্ণের এবং গভীর ফাটলযুক্ত। ৩। পাতা সরল, আয়তাকার, লম্বায় ৫-১৮ সেন্টিমিটার এবং চওড়ায় ৩-৬ সেন্টিমিটার, পাতার উপরিপৃষ্ঠ উজ্জ্বল সবুজও নিম্নপৃষ্ঠ লালচে, কিনারা মসৃণ এবং আগা সূচালো। ৪। আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে স্পাইক ধরনের পুষ্পবিন্যাসে ফুল ধরে। একই গাছে পুরুষ ফুল, স্ত্রীফুল ও উভলিঙ্গ ফুল ধরে। পুরুষ ফুলের স্পাইক খাড়াভাবে এবং স্ত্রীফুলের স্পাইক একাকীভাবে বিন্যস্ত থাকে। ৫। ফল নাট ধরনের, ১.৫-৩.০ সেন্টিমিটার ব্যাসযুক্ত এবং শক্ত কাঁটায় আবৃত। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে পরিপক্ক ফল কমলা বাদামি বর্ণের হয়। প্রতি ফলে ১-৩টি করে বীজ থাকে।
প্রজনন ও বংশবিস্তার:
সাধারণত বনাঞ্চলে কাঁটা বাটনার বীজ দিয়ে চারা জন্মায় ও বংশবিস্তার হয়। নার্সারিতে সংগৃহীত বীজ পলিব্যাগে বপন করে চারা উৎপাদন করা হয়। চারা গজানো বা বীজের অঙ্কুরোদগমের হার শতকরা প্রায় ৪০-৫০ ভাগ। চারা গজাতে সময় লাগে ৯০-১২০ দিন। কাঁটা বাটনা গাছ কপিচিং (coppicing) ক্ষমতা সম্পন্ন। ভিয়েতনামে বীজের জন্য এবং ভারতে জ্বালানি কাঠের জন্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কাঁটা বাটনার চাষ করা হয়।
গুরুত্ব ও ব্যবহার:
কাঠ লালচে বাদামি বর্ণ, মধ্যম শক্ত ও ভারী, তবে তেমন মজবুত বা টেকসই নয়। জ্বালানি হিসেবে, গৃহ নির্মাণের খুঁটি, যন্ত্রপাতির হাতল ও কৃষি সরঞ্জামাদি তৈরিতে কাঠ ব্যবহার করা হয়। ফল ভক্ষণীয় এবং বীজ কাজু বাদামের মতো রান্না করে খাওয়া যায়।
ভৌগোলিক বিস্তৃতি:
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মায়ানমার, ইন্দো-চায়না ও দক্ষিণ-পশ্চিম চীন।
বাংলাদেশে বিস্তৃতি ও প্রাপ্তিস্থান:
চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট বনাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো কাঁটা বাটনার গাছ কদাচিৎ দেখা যায়।
সংরক্ষণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ:
আরণ্যক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এর সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২০১১, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কাঁটা বাটনার চারা লাগিয়ে কাঁটা বাটনার গাছ সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।