পঞ্চপত্র দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মানো শোভাবর্ধক ভেষজ প্রজাতি

লতা

পঞ্চপত্র

বৈজ্ঞানিক নাম: Doryopteris ludens (Wall. ex Hook.) J. Sm., Hist. Fil.: 189 (1875). সমনাম: Pteris ludens Wall ex Hook. (1858) । ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: পঞ্চপত্র।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Polypodiophyta. অবিন্যাসিত: Monocots. বর্গ:  Polypodiales. পরিবার: Pteridaceae. গণ: Doryopteris প্রজাতির নাম: Diplazium esculentum

ভূমিকা: পঞ্চপত্র (বৈজ্ঞানিক নাম: Doryopteris ludens) এক প্রকারের ভেষজ উদ্ভিদ। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে সর্বত্রে জন্মে।

পঞ্চপত্র-এর বর্ণনা:

গ্রন্থিক প্রায় ৩ মিমি ব্যাসযুক্ত, দীর্ঘ-লতানো, পত্রদন্ড ১.০-১.৫ সেমি দূরে দূরে অবস্থিত। শীর্ষের দিকে ঘনভাবে শল্কযুক্ত, শল্ক সরু, প্রায় ৩ মিমি লম্বা, গাঢ়, সরু, হালকা, সামান্য দপ্তর প্রান্তযুক্ত, গোড়া ছত্রযুক্ত নয়। পত্রদন্ড প্রায় কালো, গোড়ার দিকে শল্কযুক্ত এবং শীর্ষের কাছে সামান্য শল্কযুক্ত। পাতা দ্বিরূপী, অনুর্বর পাতা উর্বর। পাতার চাইতে ছোট এবং কম খন্ডিত। অনুর্বর পাতা ডিম্বাকার-হৃৎপিন্ডাকার হতে ৫টি অসমান খন্ডসহ করতলাকার-খন্ডিত (শীর্ষ খন্ড সবচাইতে বড় এবং গোড়ারটি সবচাইতে ছোট), প্রায় ৬ x ৫-১৩ x ১০ সেমি, খন্ডের প্রধান শিরা উপগত এবং নিচে কালো, উপরে সরু খাঁজযুক্ত, অন্যান্য শিরা সুস্পষ্ট দৃষ্টিগোচর নয়, উপশিরা ব্যতীত তীর্যক অ্যারিয়েল এর জালিকাবিন্যাস বিশিষ্ট, শেষ শিরা মুক্ত, প্রান্তের মধ্যে অনুক্রমে হাইডাথোড (hydathode) বিশিষ্ট, বয়ন চর্মবৎ। উর্বর পাতা ১৮ সেমি লম্বা, পরিলেখে, ত্রিকোণাকার, গভীরভাবে পক্ষবৎ অতিখন্ডিত, খন্ডগুলি কাস্তে আকৃতিতে উর্ধ্বগ, সাধারণতঃ তিন জোড়া, খন্ডগুলি গোড়ায় ১-৫ সেমি চওড়া, ক্রমাগত সরু হয়ে শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্রী। অনুর্বর পাতার আকৃতি উর্বর পাতার তুলনায় বিশেষ পরিবর্তিত । শিরা দৃষ্টিগোচর নয় । সোরাসগুলি পত্রফলকের প্রান্ত বরাবর রেখাকার।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২n = ৬০ (Abraham et al., 1962)।

আবাসস্থল: ভেজা স্যাতসেঁতে ছায়াযুক্ত স্থান। বংশবিস্তার হয় গ্রন্থিক এবং রেণু দ্বারা।

পঞ্চপত্র-এর বিস্তৃতি:

উত্তর ভারত, মায়ানমার, দক্ষিণ চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, এবং ফিলিপাইন (Smitinand and Larsen, 1989)। বাংলাদেশে, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা জেলা থেকে এই প্রজাতি নথিভূক্ত হয়েছে।

আরো পড়ুন:  কলচিকাম-এর নানা প্রজাতির বিবরণ

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: টবে লাগানো বাহারি গাছ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৫ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পঞ্চপত্র প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, উদ্ভিদের আবাসস্থান ধ্বংসের কারণ বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে পঞ্চপত্র সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি অরণ্যাঞ্চলে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. মমতাজ মহল মির্জা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৫ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৬৭-২৬৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Christian Pirkl

Leave a Comment

error: Content is protected !!